টেংরাটিলায় বিস্ফোরণের ক্ষতিপূরণের বিষয়ে ফায়সালার আগে বাংলাদেশ সরকারের কাছে পাওনা অর্থ পাবে না নাইকো।
Published : 07 Jul 2014, 10:38 PM
এছাড়া এদেশে তাদের সম্পদ বিক্রির ক্ষেত্রেও পেট্রোবাংলার অনুমতি লাগবে বলে আদেশ দিয়েছে একটি আন্তর্জাতিক সালিশি প্রতিষ্ঠান।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর সেটেলমেন্ট অব ইনভেস্টমেন্ট ডিসপিউটে (ইকসিড) ফেনী গ্যাস ক্ষেত্রের পাওনা ও সম্পদ বিক্রির জন্য অনুমতি চেয়েছিল কানাডীয় কোম্পানি নাইকো।
তাদের ওই আবেদনের শুনানির পর ইকসিড এ আদেশ (প্রভিশনাল অর্ডার) দিয়েছে বলে পেট্রোবাংলার সচিব ইমান হোসেন জানিয়েছেন।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, রোববার তারা ওই আদেশের অনুলিপি হাতে পেয়েছেন।
কানাডিয়ান কোম্পানি নাইকো ছাতকের টেংরাটিলায় গ্যাস অনুসন্ধান কূপ খননের সময় ২০০৫ সালের জানুয়ারি ও জুন মাসে দুই দফা বিস্ফোরণ ঘটে। এতে গ্যাস সম্পদ ও পরিবেশের ক্ষতি বাবদ নাইকোর কাছে ৭৪৬ কোটি ৫০ লাখ টাকার ক্ষতিপূরণ দাবি করে সরকার, যা নিয়ে ঢাকার একটি আদালতে মামলা চলছে।
২০১০ সালের মে মাসে নাইকো পরিচালিত ফেনী গ্যাসক্ষেত্রটি বন্ধ হয়ে যায়। ওই সময় টেংরাটিলার জরিমানা আদায় না হওয়ায় নাইকোর গ্যাস বিল বাবদ পাওনা দুই কোটি ৭০ লাখ ডলার আটকে দেয় পেট্রোবাংলা। টেংরাটিলায় নাইকোর সম্পদও বাজেয়াপ্ত করে রাখা হয়েছে।
নাইকো বাংলাদেশের ক্ষতিপূরণ দাবির বিরুদ্ধে ইকসিডে সালিশের জন্য আবেদন করে, এতে বাংলাদেশ সরকার, পেট্রোবাংলা ও বাপেক্সকে বিবাদী করা হয়। গত বছরের অগাস্টে ওই অভিযোগ থেকে বাংলাদেশ সরকারকে বাদ দেয়া হয়।
১২ শতাংশ সুদসহ নাইকোর আটকে দেয়া গ্যাস বিল ফেরত এবং নাইকোর সম্পদ বিক্রির জন্যও ইকসিডে আবেদন করে। ওই আবেদনের উপরই রোববার আদেশ হয়।
সচিব ইমান হোসেন বলেন, “টেংরাটিলার ক্ষতিপূরন না দেয়ায় আমরা ফেনী গ্যাসক্ষেত্রের টাকা আটকে রেখেছি এবং সম্পদ বিক্রির ও স্থানান্তর করতে দিচ্ছি না।
“তারা পাওনা পেতে এবং সম্পদ বিক্রির জন্য অনুমতি চেয়ে ইকসিডে আবেদন করেছিল। ইকসিড প্রভিশনাল আদেশে বলেছে, ক্ষতিপূরনের বিষয় ফয়সালা না হলে বকেয়া ফেরৎ পাবে না এবং সম্পদ বিক্রি বা স্থানান্তর করতে চাইলে পেট্রোবাংলার অনুমতি লাগবে।”
টেংরাটিলায় গ্যাস অনুসন্ধান কূপ খননের সময় ২০০৫ সালের জানুয়ারি ও জুন মাসে দুই দফা বিস্ফোরণের ঘটনা ধামাচাপা দিতে তখনকার বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী একেএম মোশাররফ হোসেনকে নাইকো একটি এসইউভি গাড়ি ঘুষ দেয় বলে তখন সংবাদপত্রে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
কানাডার একটি আদালতেও নাইকোর কর্মকর্তারা ঘুষ দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করলে প্রতিষ্ঠানটিকে ৯৫ লাখ ডলার জরিমানা করা হয়।
বর্তমানে বাঙ্গুরা গ্যাসক্ষেত্রে ক্রিস এনার্জি ও বাপেক্সের সঙ্গে যৌথভাবে গ্যাস উত্তোলন করছে নাইকো, যে গ্যাসক্ষেত্রটির ৬০ শতাংশ শেয়ার রয়েছে নাইকোর কাছে।