নারায়ণগঞ্জের সাত খুনের ঘটনায় হাই কোর্টের আদেশের সাত দিন পর র্যাবের চাকরিচ্যুত আরেক কর্মকর্তা এম এম রানাকেও গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
Published : 18 May 2014, 02:24 AM
শনিবার রাত দেড়টার দিকে নৌবাহিনীর এই অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে ঢাকা সেনানিবাস এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার খন্দকার মহিদ উদ্দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, রানাকে গ্রেপ্তারের পর তাকে নারায়ণগঞ্জে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তাকে নারায়ণগঞ্জ পুলিশ লাইনে রাখা হয়।
রোববার ১১টা থেকে ১টার মধ্যে তাকে আদালতে হাজির করা হতে পারে বলে কয়েকজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে নিশ্চিত করেছেন।
তারা জানিয়েছেন, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের হেফাজতে নেয়ার আবেদন করা হবে।
এর আগে শনিবার ভোর রাতে র্যাব-১১ এর অধিনায়ক তারেক সাঈদ মোহাম্মদ ও আরিফ হোসেনকেও ঢাকা সেনানিবাস এলাকা থেকে গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নিয়েছে নারায়ণগঞ্জ পুলিশ।
তাদের মধ্যে সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারেক ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার জামাতা। আরিফ হোসেনও একই বাহিনীর মেজর। আর লেফটেন্যান্ট কমান্ডার রানা নৌবাহিনীর কর্মকর্তা ছিলেন। তারা তিন জনই নারায়ণগঞ্জে র্যাব-১১ ব্যাটালিয়নে কর্মরত ছিলেন।
উচ্চ আদালতের আদেশের ছয় দিন পর শনিবার ভোররাতে ঢাকা সেনানিবাস থেকে তারেক ও আরিফকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে কড়া পাহারায় দুজনকে নারায়ণগঞ্জে নিয়ে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে উপস্থিত করা হয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নারায়ণগঞ্জ ডিবির ওসি মামুনুর রশীদ মণ্ডল সাত হত্যাকাণ্ডের অভিযোগের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের হেফাজত চাইলেও পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত।
নিহত কাউন্সিলর নজরুল ইসলামের স্বজনরা বলে আসছেন, র্যাবের এই কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করলেই এই হত্যাকাণ্ডের সব রহস্য উদ্ঘাটিত হবে।
গত ২৭ এপ্রিল কাউন্সিলর নজরুল ও আইনজীবী চন্দন সরকারসহ সাতজন একসঙ্গে অপহৃত হলে তা নিয়ে সারাদেশে আলোচনা ওঠে।
তিন দিন বাদে শীতলক্ষ্যা নদীতে তাদের লাশ পাওয়ার পর নজরুলের শ্বশুর শহীদুল ইসলাম অভিযোগ তোলেন, কাউন্সিলর নূর হোসেনের কাছ থেকে ৬ কোটি টাকা নিয়ে র্যাব এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।
এর আগেই র্যাব-১১ থেকে তারেক, আরিফ হোসেন ও রানাকে নারায়ণগঞ্জ থেকে সরিয়ে সামরিক বাহিনীতে ফেরত পাঠানো হয়। সেনাবাহিনী তারেক ও আরিফকে অকালীন অবসরে পাঠায়। আর লেফটেন্যান্ট কমান্ডার রানাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠায় নৌবাহিনী।
নারায়ণগঞ্জের এই হত্যাকাণ্ডের পর এই পর্যন্ত ২২ জনকে আটক করেছে পুলিশ, তবে তার মধ্যে মামলার ছয় আসামির কেউ নেই।
এর মধ্যে মামলার তিন নম্বর আসামি হাসমত আলী হাসুকে যশোরে গ্রেপ্তারের খবর প্রথমে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জানালেও পরে অস্বীকার করেন।
আটক ২২ জনের মধ্যে সাতজনকে হত্যামামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়েছে পুলিশ। বাকিদের ৫৪ ধারায় (সন্দেহভাজন) গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তাদের সঙ্গে যোগ হলেন র্যাবের সাবেক দুই কর্মকর্তা।