পুলিশ সদরদপ্তরে ৩ র‌্যাব কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তারের আদেশ

নারায়ণগঞ্জের সাত খুনে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে চাকরিচ্যুত সাবেক তিন র‌্যাব কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তারে হাই কোর্টের আদেশ পুলিশ সদর দপ্তরে পৌঁছেছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 May 2014, 05:47 AM
Updated : 12 May 2014, 09:03 AM

সোমবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া) জালাল উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী আদালতের আদেশের কপি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, “আমরা আদেশের কপি পেয়েছি। এখন আদালতের আদেশ পালনে পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়া চলছে।”

রোববার দুপুরে আদেশ হওয়ার পর সুপ্রিম কোর্টের ফৌজদারি বিবিধ শাখা রাতে ফ্যাক্সযোগে তা পুলিশ মহাপরিদর্শকের কাছে পাঠায়।

হাই কোর্টের ওই আদেশ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ওই তিন কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করতে আইজিপিকে নির্দেশ দেয়া হয়।

ওই তিন কর্মকর্তা হলেন- র‌্যাব-১১ এর সাবেক কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারেক সাঈদ মাহমুদ, মেজর আরিফ হোসেন এবং নৌবাহিনীর লেফটেন্যান্ট কমান্ডার এমএম রানা। এদের মধ্যে তারেক সাঈদ ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনামন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার মেয়েজামাই।

হাই কোর্টের আদেশে বলা হয়, চাকরিচ্যুত ওই তিনজনের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি বা অন্য কোনো বিশেষ আইনে কোনো অভিযোগ পাওয়া না গেলে তাদের ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার করতে হবে।

গ্রেপ্তারের পর তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্যও হাই কোর্টের নির্দেশনায় বলা হয়। চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ডের এই মামলাটি তদন্ত করছে গোয়েন্দা ‍পুলিশ। 

একটি রিট আবেদনে আদালত গ্রেপ্তারের এই আদেশ দেয়। র‌্যাবের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ ওঠার পর হাই কোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত এক আদেশে এই ঘটনাটি খতিয়ে দেখতে প্রশাসনিক তদন্ত করতে সরকারকে বলেছিল।

ওই আদেশের পর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শাহজাহান আলী মোল্লার নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত কমিটি ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে।

এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার সন্দেহে এই পর্যন্ত ২১ জনকে আটক করেছেন। এর মধ্যে ৭ জনকে হত্যামামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। অন্যদের ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

তবে এজাহারভুক্ত আসামি এবং অভিযোগের মুখে থাকা র‌্যাব কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তার না হওয়ায় অসন্তোষ জানিয়ে আসছে নিহতদের স্বজনরা। 

গত ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম, আইনজীবী চন্দন কুমার সরকারসহ সাতজনকে অপহরণ করা হয়। তিন দিন পর শীতলক্ষ্যা নদীতে তাদের লাশ ভেসে ওঠে।

লাশ উদ্ধারের আগের দিন তারেক সাঈদকে র‌্যাব-১১ এর অধিনায়কের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে সেনাবাহিনীতে পাঠানো হয়েছিল।

এরপর নিহত নজরুলের শ্বশুর শহীদুল ইসলাম অভিযোগ করেন, নারায়ণগঞ্জের আরেক কাউন্সিলর নূর হোসেন ও তার সহযোগীদের কাছ থেকে ছয় কোটি টাকা নিয়ে র‌্যাব সদস্যরা তার জামাতাসহ সাতজনকে ধরে নিয়ে হত্যা করেছে।

ওই অভিযোগ ওঠার পর গত ৭ মে সাঈদসহ র‌্যাব-১১ এর ওই তিন কর্মকর্তাকে চাকরি থেকে অকালীন অবসরে পাঠানো হয়।