দুই দেশের মধ্যে আসামি প্রত্যর্পণের প্রক্রিয়া শুরু করতে মতৈক্যে পৌঁছেছে বাংলাদেশ ও ভারত।
Published : 23 Jul 2013, 01:06 AM
এ নিয়ে চুক্তি সইয়ের তিন বছর পর সোমবার প্রতিবেশী দুই দেশের স্বরাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠকে কাজের প্রক্রিয়া শুরুর সিদ্ধান্ত হয়।
নয়া দিল্লিতে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে বহুল আলোচিত বন্দি বিনিময়ের বিষয়টি নিয়েও পর্যালোচনা হয়েছে।
বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে স্থল সীমান্ত চুক্তি কার্যকরে ভারতের সংবিধান সংশোধনের তাগিদ দেয়া হলে দিল্লির পক্ষ থেকে তা মেনে নেয়া হয়।
বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র সচিব সি কিউ কে মুস্তাক আহমেদ ও ভারতের স্বরাষ্ট্র সচিব অনীল গোস্বামী এক যৌথ সংবাদ বিবৃতিতে বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানান।
২০১২ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নয়া দিল্লি সফরে দুই দেশের আসামি প্রত্যর্পণ চুক্তি সই হয়।
এটি কার্যকর হলে বাংলাদেশি কারো ভারতে কারাদণ্ড হলে তাকে বাংলাদেশে এনে কারাগারে রাখা যাবে। অর্থাৎ দণ্ড ভারতে হলেও সে তা খাটবে নিজের দেশে। তেমনি ভারতীয়দের ক্ষেত্রেও তাই হবে।
এই বিষয়ে মতৈক্য হলেও বহু দিন ধরে আলোচনায় রয়েছে বন্দি বিনিময়ের বিষয়টি, যা নিয়ে ভারতের পক্ষ থেকে বেশি আগ্রহ।
বন্দি বিনিময়ের প্রক্রিয়া শুরু হলে সাজা ভোগ করেও যারা বাংলাদেশে আটক রয়েছেন, তাদের পাওয়ার সুযোগ হবে ভারতের।
এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে আসামের বিদ্রোহী সংগঠন উলফার নেতা অনুপ চেটিয়ার বিষয়টি জড়িত, যিনি সাজা ভোগের পরও ছয় বছর ধরে বাংলাদেশে বন্দি।
ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অব আসাম-উলফার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক অনুপ চেটিয়াকে ১৯৯৭ সালের ২১ ডিসেম্বর ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকার একটি বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
অবৈধভাবে বাংলাদেশে প্রবেশ, বিদেশি মুদ্রা রাখা এবং স্যাটেলাইট ফোন রাখার অভিযোগে তিনটি মামলায় তার সাজার মেয়াদ শেষ হয় ২০০৭ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি।
ভারত সরকার শুরু থেকেই চেটিয়াকে ফেরত চাইলেও বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে দুই দেশের মধ্যে বন্দি প্রত্যর্পণ চুক্তি না থাকার কথা বলা হয়। তবে চলতি বছরের জানুয়ারিতে এই চুক্তি হওয়ায় সে বাধা অনেকটাই অপসারিত হয়েছে।
বৈঠকে ভারতের কারাগারে বন্দি দুই তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন ও সাজ্জাদ হোসেনের হস্তান্তরের বিষয়টিও আলোচনায় তোলে বাংলাদেশ।
সচিব পর্যায়ের এই বৈঠকে দাগি সন্ত্রাসী ও সন্দেহভাজনদের ধরতে পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়াতে মতৈক্য হয়।
বঙ্গবন্ধুর দুই খুনিকে ( যারা ভারতে পালিয়ে আছে বলে সন্দেহ করা হয়) খুঁজে বের করতে ভারতীয় কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানান মুস্তাক আহমেদ। জবাবে অনীল গোস্বামীও প্রতিশ্রুতি দেন, এক্ষেত্রে সম্ভাব্য সব কিছু করবেন তারা।