অনেক পদক্ষেপের পরও কন্যাশিশুদের অগ্রযাত্রায় বাল্যবিয়ে কীভাবে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে, তা উঠে এসেছে এক আলোচনা অনুষ্ঠানে।
Published : 11 Oct 2021, 09:47 PM
সোমবার আন্তর্জাতিক কন্যাশিশু দিবস উপলক্ষে ওই আলোচনা অনুষ্ঠানে আইনপ্রণেতা থেকে শুরু করে শিশু অধিকার নিয়ে কাজ করা ব্যক্তিরা বক্তব্য দেন।
ইউনিলিভার বাংলাদেশ (ইউবিএল), প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ ও চিলড্রেন অ্যাফেয়ার্স জার্নালিস্টস নেটওয়ার্ক (সিএজেএন) যৌথভাবে ‘কিশোরী-কিশোরদের আত্ম-উন্নয়নে ইতিবাচক পরিবেশের ভূমিকা’ শীর্ষক এ গোলটেবিল বৈঠক আয়োজন করে।
এতে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মেহের আফরোজ চুমকি বলেন, “বাল্যবিয়ে আমাদের কিশোরীদের চলার পথকে রুদ্ধ করে দিয়েছে। তাই বাল্যবিয়ের সঙ্গে জড়িত পুরুষদের আইনের আওতায় আনতে গণমাধ্যমকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে।”
বয়ঃসন্ধিকালে কিশোরী ও কিশোরদের ’মনোদৈহিক পরিবর্তনের’ মধ্য দিয়ে যাওয়ার কথা তুলে ধরে সাবেক এই প্রতিমন্ত্রী বলেন, “এ সময় তারা যেন কোনো ভুল না করে সে বিষয়ে লক্ষ্য রাখতে, সবার মাঝে সচেতনতা তৈরি করতে হবে।”
মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক রাম চন্দ্র দাস বলেন, “কন্যাশিশুদের অগ্রগতিতে এখন বড় ধরনের অন্তরায় হিসেবে রয়েছে বাল্যবিবাহ। বাল্যবিবাহ রোধ করতে আমাদের গ্রামে গ্রামে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ কমিটিও আছে।
”তবে করোনা মহামারীর এই সময়ে বাল্যবিয়ের বিষয়ে পর্যাপ্ত মনিটরিংয়ের অভাবে বাল্যবিয়ের হারটা হুট করে বেড়ে গিয়েছে।“
সোমবারের এ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ইউনিলিভার বাংলাদেশ ও প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে ‘ডাভ সেলফ-এস্টিম প্রজেক্ট’ যাত্রা শুরু করেছে।
এ অংশীদারিত্বের মাধ্যমে আগামী ২০২২ সালের এপ্রিল নাগাদ দেশের ১৫ হাজার স্কুল শিক্ষার্থী বিশেষ করে নারী শিশুদের মধ্যে আত্ম-উন্নয়নে সচেতনতা তৈরিতে পদক্ষেপ নিতে কাজ করবে ডাভ সেলফ-এস্টিম প্রজেক্ট (ডিএসইপি)।
এটির বাস্তবায়ন অংশীদার হিসেবে সঙ্গে রয়েছে ইকো-সোস্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (ইএসডিও) ও টিচ ফর বাংলাদেশ।
এ উদ্যোগের বিষয়ে ইউনিলিভার বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাভেদ আখতার বলেন, “২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশে ৫০ লাখ কিশোরী-কিশোরকে আত্ম-সম্মানবোধ বিষয়ক শিক্ষার মাধ্যমে আত্ম-বিশ্বাসের ক্ষমতায় ক্ষমতায়িত করতে প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ ও টিচ ফর বাংলাদেশের সঙ্গে আমরা পার্টনারশিপ গড়ে তুলেছি।”
বর্তমানে প্রতি ১০ জনের মধ্যে সাত জন মেয়েই তাদের সিদ্ধান্তে অটল থাকতে পারে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, “তাছাড়া ১০ জনের মধ্যে আট জন মেয়ে পরিবার ও বন্ধু-বান্ধব থেকে দূরত্ব বজায় রাখে। এটি যে কেবল নারীদের জন্যই ক্ষতিকর, তা নয়; বরং সমাজও ভবিষ্যৎ নারী নেতৃত্ব হারাচ্ছে।”
প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ওরলা মার্ফি বলেন, “নারীর প্রতি সহিংসতা তাদের উন্নয়নের ক্ষেত্রে বড় একটি বাধা। সামাজিক ও পারিবারিকভাব এর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব থাকে। এ সংকট নিরসনে আমাদের সচতেন হতে হবে।”
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদক সাইফুল আলম, চিলড্রেন অ্যাফেয়ার্স জার্নালিস্টস নেটওয়ার্কের প্রেসিডেন্ট মাহফুজা জেসমিন বক্তব্য দেন।