উচ্চ আদালতের নির্দেশনার পর নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে এক নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে অপসারণের প্রক্রিয়া শুরু করেছে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন-বিটিআরসি।
Published : 06 Oct 2020, 05:53 PM
মঙ্গলবার বিটিআরসি চেয়ারম্যান জহুরুল হক বিডিনি্উজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আদালতের নির্দেশনা হাতে না পেলেও গণমাধ্যমের প্রকাশিত সংবাদ দেখামাত্র এ নির্দেশনা বাস্তবায়ন করা শুরু হয়েছে।”
বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে অপসারণ করতে সোমবার বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন-বিটিআরসিকে নির্দেশ দেয় হাই কোর্ট।
পাশাপাশি বিটিআরসি চেয়ারম্যানকে ভিডিওটি পেনড্রাইভ বা সিডিতে সংরক্ষণ করতে বলা হয়।
দেশজুড়ে ক্ষোভ তৈরি করা নির্যাতনের এ ঘটনা সোমবার নজরে আনার পর বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. মহি উদ্দিন শামীমের ভার্চুয়াল হাই কোর্ট বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রুলসহ এ আদেশ দেয়।
বিটিআরসি প্রধান জহুরুল হক বলেন, “আজ দুপুর নাগাদ ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়া এ ভিডিওর ১৭ থেকে ১৮টি লিংক বন্ধ করা হয়েছে।
“এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া খুব দ্রুত এ লিংক বন্ধ করা সম্ভব হবে না।”
ফেইসবুক ও ইউটিউবসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম কর্তৃপক্ষকে ভিডিওটি অপসারণ করতে মেইল করা হয়েছে বলে জানান বিটিআরসি চেয়ারম্যান।
তিনি বলেন, “সমস্যা হচ্ছে, অনেক সময় তারা আমাদের অনুরোধগুলো রাখে, আবার রাখেও না। আমরা যতটুকু পারি তা অপসারণ করার চেষ্টা করছি।”
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের একলাশপুর ইউনিয়নের একটি গ্রামে এক নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়।
ভিডিওতে দেখা যায়, কয়েকজন যুবক একজন নারীকে বিবস্ত্র করে মারধর করছে। তাদের একজন পা দিয়ে ওই নারীর মুখ চেপে ধরেছে। বার বার আকুতি জানানোর পরও নির্যাতন করা বন্ধ করেনি তারা।
এক মাসেরও বেশি সময়ের আগের এই ঘটনার ভিডিও রোববার ফেইসবুকে ছড়িয়ে পড়ার পর তীব্র ক্ষোভ দেখা দেয়। নির্যাতনকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি আসে বিভিন্ন মহল থেকে। এরপর ওই নারীকে উদ্ধার করে নিজেদের হেফাজতে নেয় স্থানীয় পুলিশ। পাশাপাশি এ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
শুধু নোয়াখালীর ঘটনা নয়, নানা জায়গা থেকে সোশাল মিডিয়ায় এ ধরনের ঘটনার ভিডিও ছড়ানো হচ্ছে।
সমস্যার দিকটি দেখিয়ে তিনি বলেন, “ইউটিউব হোয়াসঅ্যাপসহ অন্যান্য সোশাল মিডিয়া আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। এখন সমস্যা হচ্ছে, ইউটিউবকে বন্ধ করার জন্য অনুরোধ করলে কখনো কখনো বন্ধ করে কখনো করে না। কারণ আইনত তারা বাধ্য না।”
“একটি আইন করার জন্য এগিয়ে যাচ্ছি সোশাল মিডিয়া যদি কোন অ্যান্টি এস্টেট অ্যাক্টিভিটি দেখায় তাহলে কেউ প্রতারণার শিকার হয় তাহলে বিটিআরসি তাকে জরিমানা করতে পারে। বিটিআরসির জরিমানা মানেই কিন্তু ২০০ বা ৩০০ কোটি টাকা, জরিমানার ভয়ে হয়ত এসব প্রচারণা বন্ধ হয়ে যাবে।”
এ ধরনের আইন সিঙ্গাপুর করেছে জানিয়ে বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেন, “আমাদের দেশে এ আইন করতে সময় লাগবে। তবে আশা করছি এ আইন পাশ হলে এসব প্রচারণা বন্ধ করা সম্ভব হবে।”