জাতির জনকের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনে কেন্দ্রীয় কমিটির সঙ্গে সমন্বয় করে মুজিববর্ষের কর্মসূচি গ্রহণের নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
Published : 02 Mar 2020, 03:43 PM
‘অহেতুক’ নতুন কর্মসূচি না নিয়ে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোকে নিজেদের বাজেট থেকে মানুষের কাল্যাণ এবং দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারে এমন কর্মসূচি ঘোষণারও নির্দেশনা দিয়েছেন সরকারপ্রধান।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সোমবার মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠক শেষে অনির্ধারিত আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী এ নির্দেশনা দেন বলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম জানিয়েছেন।
বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে তিনি বলেন, “উনি (প্রধানমন্ত্রী) বলেছেন, আমরা প্রিসাইসলি বলে দিয়েছি যে, মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে প্রত্যেকটা মন্ত্রণালয় ও বিভাগ তার একটা নোটেবল প্রোগ্রামকে মুজিববর্ষের প্রোগ্রাম হিসেবে ঘোষণা করবে, তার নরমাল বাজেট থেকে।
“যদি একসেপশনাল কোনো কাজ থাকে তার জন্য এক্সট্রা টাকা চিন্তা করা যেতে পারে। কিন্তু বড় বড় বাজেট দিয়ে নতুন কাজ করার দরকার নেই। কেন্দ্রীয় কমিটির সাথে সমন্বয় করে প্রোগ্রাম নিতে বলা হয়েছে।”
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ উদযাপনে গত বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রীকে সভাপতি করে একটি জাতীয় কমিটি এবং জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলামকে সভাপতি করে একটি বাস্তবায়ন কমিটি করেছে সরকার। এছাড়া বিষয়ভিত্তিক আটটি উপ-কমিটিও গঠন করা হয়েছে।
কীভাবে মুজিববর্ষের কর্মসূচি ঘোষণা করা যায়, সেই উদাহরণও তুলে ধরেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
“অর্থ বিভাগ মুজিববর্ষ ঘোষণার সাথে সাথে প্রোগ্রাম নিল ডিসেম্বরের মধ্যে ছয় লাখ পেনশনারের বাড়িতে বসে পেনশন দিয়ে দেবে। এই প্রোগ্রামটা তারা মুজিববর্ষের প্রোগ্রাম হিসেবে ঘোষণা করেছে।
“কোনো কোনো প্রোগ্রাম করতে গিয়ে যদি ফান্ড লাগে, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শিল্পী আনবেন, এটার জন্য পেমেন্ট করতে হবে। স্টেজ হবে এজন্য আলাদা টাকা দেওয়া হবে না, পিডব্লিউডি তার মেইনটেনেন্স বাজেট থেকে করে দেবে। পেমেন্টের দরকার হলে এএফডি তার বাজেট থেকে করে দেবে, এজন্য আলাদা কোনো টাকা দেওয়া হবে না।”
মন্ত্রিসভা বৈঠকের পর অনির্ধারিত আলোচনার বিষয়বস্তু তুলে ধরে আনোয়ারুল বলেন, “মুজিববর্ষে সবাইকে নতুন কিছু করার দরকার নেই। যে প্রোগ্রামটা মানুষের কাল্যাণে বা দেশের উন্নয়নে কনট্রিবিউট করতে পারি ওটা মুবিজববর্ষের সাথে মোর সিনোনিমাস, ওইজাতীয় প্রোগ্রাম, নারমাল যে প্রোগ্রামটা আছে সেটাকে আরও ইফেকটিভ করে দেন।
“২০২১ সালের ১৭ মার্চের আগে পদ্মাসেতুর ফিজিক্যাল কাজ শেষ করে দেব, এটাকে মুজিববর্ষের গ্রোগ্রাম হিসেবে ঘোষণা করলাম। এজন্য টাকা লাগবে কিন্তু ওই টাকা তো ওই প্রজেক্টে ধরাই আছে। কাজটা হয়ত আরও তিন মাস হত, এটাকে বেশি এফোর্ট দিয়ে মার্চ মাসের মধ্যে করার চেষ্টা করব।”
২০১৮ সালের জুলাইয়ে সরকার জাতির জনকের জন্মশতবর্ষ উদযাপনে ২০২০-২০২১ সালকে ‘মুজিববর্ষ’ ঘোষণা করে। আর তার জন্মতারিখ অর্থাৎ ১৭ মার্চ থেকে শুরু হয়ে ২০২১ সালের ১৭ মার্চ পর্যন্ত চলবে মুজিববর্ষের কর্মকাণ্ড।
১৯২০ সালের ১৭ মার্চ গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়ায় জন্ম নেন শেখ মুজিবুর রহমান। কালক্রমে তার হাত ধরেই বিশ্ব মানচিত্রে নতুন দেশ হিসেবে স্থান করে নেয় বাংলাদেশ।