ঢাকার সায়েন্স ল্যাবরেটরিতে পুলিশের উপর হাতবোমা হামলার ঘটনাকে ছোট করে দেখা ঠিক হবে না বলে মনে করেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
Published : 01 Sep 2019, 01:37 PM
তিনি মনে করেন, এটা জঙ্গিদের বড় ধরনের হামলার ‘টেস্ট কেইস’ হতে পারে, প্রথমে পুলিশের উপর হামলা হলেও পরে আক্রান্ত হতে পারেন মন্ত্রী-সংসদ সদস্যরাও।
শনিবার রাতে রাজধানীর সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড় দিয়ে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলামের গাড়ি অতিক্রমের পরপরই পুলিশ বক্সে হাতবোমা হামলা হয়। এতে দুই পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
রোববার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নে মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, “টার্গেট নিঃসন্দেহে পুলিশ। হতে পারে এরা ছোটখাটো ঘটনা দিয়ে ‘টেস্ট কেইস’ করতে চাচ্ছে, বড় ধরনের কোনো হামলা করার জন্য, তার পূর্বপ্রস্তুতিও হতে পারে।”
এ হামলা রাজনীতিবিদদের উপর হুমকি কি না- প্রশ্নে তিনি বলেন, “আমি পুলিশের আইজি ও কমিশনারের সাথে কথা বলেছি। তারা নিশ্চিত করেছেন, মন্ত্রী এখানে টার্গেট ছিল না।
“এ ধরনের ছোট ছোট ঘটনার মাধ্যমে.. এখন পুলিশ টার্গেট পরবর্তীতে মন্ত্রী-এমপিরা টার্গেট হবে না, এমন তো নয়, হতেও তো পারে।”
জঙ্গি তৎপরতা এখনও রয়েছে কি না- প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, “তা তো অবশ্যই আছে, দুর্বল হয়েছে, কিন্তু নিষ্ক্রিয় হয়েছে মনে করার কারণ নেই। এটা এখন পৃথিবীর সব দেশেই ঘটছে এ ঘটনা।
“তলে তলে প্রস্তুতি নিচ্ছে বড় ধরনের হামলার জন্য, আমার কাছে মনে হয়। পুলিশের উপর তিন-চারটি হামলা টেস্ট কেইস হিসেবে নিতে পারে পরবর্তীতে বড় ধরনের হামলা করার জন্য।”
২০১৬ সালে গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারিতে নজিরবিহীন হামলার আগে কয়েক বছর ধরে ব্লগার, শিক্ষক, সংস্কৃতিকর্মীদের উপর বিক্ষিপ্ত হামলা চলছিল।
গুলশান হামলার পর নিরাপত্তা বাহিনীর সাঁড়াশি অভিযানে জঙ্গি তৎপরতা কমে এলেও সম্প্রতি পুলিশকে লক্ষ্য করে কয়েকটি হামলার ঘটনা ঘটেছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, “এর আগে মালিবাগে, গুলিস্থানে একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে, রিমোর্ট কন্ট্রোলড বোমা।”
এসব হামলার পর মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গি গোষ্ঠী আইএসের নামে দায় স্বীকারের বার্তা এলেও তা উড়িয়ে দিচ্ছেন বাংলাদেশের পুলিশ কর্মকর্তারা। তবে দেশীয় জঙ্গিরা তা ঘটিয়ে থাকতে পারে বলে তাদের ধারণা।
মন্ত্রী যাওয়ার পথে ককটেল নিক্ষেপ, পুলিশ আহত |
বাংলাদেশে আইএসের অস্তিত্ব রয়েছি কি না প্রশ্নে কাদের বলেন, “আমাদের মোটরযান আইন বলে কোন আইন নেই, এ আইনের নামে গুজব রটানো হচ্ছে যে বিভিন্ন বিষয়ে জরিমানা বাড়ানো হচ্ছে, এটা আসলে সড়ক পরিবহন আইন। আইএসের নামেও অপপ্রচার চলছে কি না, তা নিশ্চিত না হয়ে বলতে পারছি না।”
জঙ্গি দমনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রশংসা করেই তিনি বলেন, “জঙ্গি দমনে ট্র্যাক রেকর্ড ভালো, তবে এ বিষয়টি (সাম্প্রতিক হামলা) তারা আমার মনে হয় উদ্ঘাটন করতে পারেনি।”
তবে এখন সতর্ক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে জানিয়ে কাদের বলেন, “এ চক্রটাকে বের করার জন্য অনুসন্ধান চলছে।”
এ ধরনের হামলার প্রতিরোধে গোয়েন্দা ব্যর্থতা রয়েছে কি না- প্রশ্নে তিনি বলেন, “গোয়েন্দারা তো এ যাবৎ জঙ্গি দমন ও নিয়ন্ত্রণে যথেষ্ট সফলতার পরিচয় দিয়েছে, এ বিষয়ে তারা সফল হবে বলে আশা করি।”