মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় ট্রেন দুর্ঘটনার কারণ জানতে দুটি তদন্ত কমিটি করেছে রেল কর্তৃপক্ষ। দুর্ঘটনা কবলিত পাঁচটি বগি উদ্ধার করে লাইন মেরামত শেষে আবার ট্রেন চলাচল শুরু করতে সোমবার বিকাল গড়িয়ে যাবে বলে কর্মকর্তারা ধারণা করছেন।
Published : 24 Jun 2019, 11:32 AM
রোববার রাত সাড়ে ১১টার দিকে কুলাউড়া উপজেলার বরমচাল এলাকায় সিলেট থেকে ঢাকাগামী উপবন এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় পড়লে চারজনের মৃত্যু হয়, আহত হয়েছেন শতাধিক আরোহী।
দুর্ঘটনার পর সারা দেশের সঙ্গে সিলেটের রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। কয়েক ঘণ্টা পর রিলিফ ট্রেন পৌঁছে উদ্ধার অভিযান শুরু করে।
রেল সচিব মোহাম্মদ মোফাজ্জেল হোসেন, অতিরিক্ত সচিব মুজিবুর রহমান এবং রেলের মহাপরিচালক কাজী রফিকুল আলম ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সোমবার সকাল ৯টার দিকে কুলাউড়া স্টেশন থেকে দুর্ঘটনাস্থলে যান।
অতিরিক্ত সচিব মুজিবুর রহমান পরে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বিকাল ৫টার মধ্যে রেল চলাচল শুরু করা যাবে বলে তারা আশা করছেন।
বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক কাজী রফিকুল আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখতে বিভাগীয় প্রধান পর্যায়ে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের চিফ মেক্যানিকাল ইঞ্জিনিয়ার মিজানুর রহমানকে প্রধান করে গঠিত ওই কমিটিকে তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের চিফ ইঞ্জিনিয়ার, চিফ সিগন্যাল অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশনস ইজ্ঞিনিয়ার এবং চিফ অপারেটিং সুপারিনটেনডেন্ট এই কমিটিতে সদস্য হিসেবে রয়েছেন।
এছাড়া বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা মো. মইনুল ইসলামকে প্রধান করে আরেকটি তদন্ত কমিটি করেছে রেলওয়ের পূর্বাঞ্চল। এই কমিটিতে সদস্য হিসেবে আছেন মোট পাঁচজন।
শ্রীমঙ্গলের স্টেশন মাস্টার জাহাঙ্গীর আলম জানান, আন্তঃনগর উপবন এক্সপ্রেস রাত ১০টায় সিলেট ছেড়ে এসে মাইজগাঁও স্টেশনে থামে। এরপর ভাটেরা ও বরমচাল স্টেশন পার হয়ে মোটামুটি ২০০ মিটার যাওয়ার পর পাঁচটি বগি লাইন ছেড়ে বেরিয়ে যায়।
এর মধ্যে একটি বগি বড়ছড়ার কালভার্ট ভেঙে নিচে ছড়ায় পড়ে যায়। আর দুটি বগি উল্টে পড়ে লাইনের পাশের ক্ষেতের মধ্যে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সরাইলের শাহবাজপুরে বেইলি ব্রিজ স্থাপনের কাজ চলায় ঢাকা-সিলেট বাস চলাচল কার্যত বন্ধ রয়েছে। ফলে ট্রেনের উপর চাপ ছিল বেশি। উপবনের ১৭টি বগির সবগুলোই ছিল যাত্রীতে ঠাসা।
আহত এক যাত্রী কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, যে বগিটি খালে পড়ে গেছে, তিনি এবং তার বাবা ও ভাই ওই বগিতেই ছিলেন। বরমচাল পার হয়ে কিছুদূর যাওয়ার পর ট্রেন বেশি দুলতে শুরু করে। এরপর কালভার্টে ওঠার পর তাদের বগি একপাশে কাত হয়ে খালে পড়ে যায়।
রেলওয়ের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর মো. নুরুল ইসলাম জানান, ট্রেনের যে সাতটি বগি সামনে লাইনের ওপর ছিল, সেগুলোকে রাত সোয়া ৩টার দিকে ঢাকায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়। উদ্ধারকারী একটি ট্রেন এসে সকালে আরও পাঁচটি বগি উদ্ধার করে কুলাউড়া স্টেশনে পাঠিয়ে দেয়।
“বাকি বগিগুলো খালে বা লাইনের পাশে পড়ে গেছে, দুমড়ে মুচড়ে গেছে। অনেকটা জায়গায় রেললাইন বেঁকে গেছে। বগিগুলো উদ্ধার করে লাইন মেরামত করতে সময় লাগবে।