অনিয়ম ও অর্থ পাচারের অভিযোগে ফারমার্স ব্যাংকের সাবেক অডিট কমিটির চেয়ারম্যান মো. মাহবুবুল হক চিশতীর (বাবুল চিশতী) বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন। এটি তার বিরুদ্ধে তৃতীয় মামলা।
Published : 28 Oct 2018, 04:52 PM
নতুন মামলাটি করা হয়েছে অনিয়মের মাধ্যমে ফারমার্স ব্যাংক থেকে একটি প্রতিষ্ঠানকে সাড়ে ২৯ কোটি টাকা ঋণ দেওয়া ও সেই অর্থ পাচারের অভিযোগে।
রোববার গুলশান থানায় দুদকের উপ-পরিচালক মো. সামছুল আলম মামলাটি করেন বলে কমিশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রণব কুমার ভট্টাচার্য্য জানিয়েছেন।
মামলায় বাবুলের সঙ্গে আসামি করা হয়েছে আরো ছয়জনকে। এরা হলেন- ফারমার্স ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক চৌধুরী মোশতাক আহমেদ, সাবেক অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে এম এম শামীম, এসভিপি জিয়া উদ্দিন আহমেদ, এসইভিপি ও ব্যাংকটির গুলশান কর্পোরেট শাখার সাবেক ব্যবস্থাপক দেলোয়ার হোসেন, ঋণ পাওয়া প্রতিষ্ঠান মেসার্স লায়লা বনস্পতি প্রডাক্টস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাহাবুদ্দীন আলম, তার স্ত্রী প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ইয়াসমিন আলম।
এর আগে বাবুল চিশতীর বিরুদ্ধে আরও দুইটি মামলা করেছে দুদক।
গত ১০ এপ্রিল গুলশান থানায় বাবুল চিশতী ও তার স্ত্রী রুজী চিশতী এবং ফারমার্স ব্যাংকের এসইভিপি ও গুলশান শাখার সাবেক ব্যবস্থাপক দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করে দুদক।
মামলার পর ওইদিনই বাবুল চিশতীকে সেগুনবাগিচা থেকে গ্রেপ্তার করে দুদক। এরপর থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন।
এরপর গত ৮ অগাস্ট বাবুল চিশতীর বিরুদ্ধে ব্যাংকের অর্থে প্রভাব খাটিয়ে বিদেশ ভ্রমণের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে আরেকটি মামলা করে দুদক।
নতুন মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৬/৪০৯/১০৯ ধারা ও ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারাসহ মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন- ২০১২ এর ৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ২০১৫ সালে তারা পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ঋণের নামে ব্যাংকিং নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে ব্যাংকটির গুলশান কর্পোরেট শাখা থেকে ২৯ কোটি ৫১ লাখ ৮৫ হাজার ৮২০ টাকা উত্তোলন করে স্থানান্তর, হস্তান্তর করে পাচার করেন।
ভোজ্য তেল আমদানি, প্রক্রিয়াজাত ও সরবরাহের জন্য লায়লা বনস্পতি নামের প্রতিষ্ঠানকে ওই ঋণ দেওয়া হলেও ঋণ বিতরণ সংক্রান্ত নথিপত্র পর্যালোচনার কথা উল্লেখ করে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, প্রধান কার্যালয়ের অনুমোদনের ভিত্তিতে ঋণ ছাড়ের কথা থাকলেও শাখার কর্মকর্তারা মাত্র তিনটি ধাপে অল্প সময়ের মধ্যে ঋণটি বিতরণ করেছেন।
“এতে গ্রাহক সহজেই উত্তোলিত ঋণটি নিজের মত করে সরিয়ে ফেলতে সক্ষম হয়েছে। শাখার মঞ্জুরিপত্রে ফরেন ডেফার্ড এলসির কথা বলা থাকলেও সমস্ত পেমেন্ট লোকাল এলসির বিপরীতে হয়েছে। গ্রাহক কর্তৃক গৃহীত এলসি সুবিধার বিপরীতে আসলে কোনো মালামাল আমদানি হয়েছে কি-না তাও ব্যাংক যাচাই করেনি,” অভিযোগ করা হয়েছে মামলায়।
মালামাল আমদানি হয়ে থাকলে তা থেকে উৎপাদিত পণ্য কী করা হয়েছে, সে সংক্রান্ত কোনো প্রতিবেদনও ব্যাংকের কাছে পাওয়া যায়নি এবং কোনো ফলোআপ নেই বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।