আগের ভোটগুলোর সঙ্গে তুলনা করে খুলনা সিটি করপোরেশনের নির্বাচন নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছিলেন নির্বাচন পর্যবেক্ষকরা; গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন তাদের হতাশা আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
Published : 28 Jun 2018, 05:25 PM
সদ্য সমাপ্ত গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ১২৯টি কেন্দ্রে পর্যবেক্ষণ চালিয়ে এর ৪৬ শতাংশ কেন্দ্রে কোনো না কোনো অনিয়ম পাওয়ার কথা জানিয়েছে নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের অন্যতম মোর্চা ইলেকশন ওয়ার্কিং গ্রুপ (ইডব্লিউজি)।
গত মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ তুলে বিএনপি ভোট বাতিলের দাবি তুললেও নির্বাচন কমিশন তাতে একমত নয়।
মোট ৪২৫টি কেন্দ্রের মধ্যে নয়টি কেন্দ্রে অনিয়মের কারণে ভোট স্থগিত হয়েছে। বাকি কেন্দ্রগুলোতে সুষ্ঠু ভোট হয়েছে বলে ইসির দাবি।
ভোটের দুদিন পর বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে ইডব্লিউজি পরিচালক আব্দুল আলীম বলেন, “ইলেকশন ওয়ার্কিং গ্রুপের (ইডব্লিউজি) পর্যবেক্ষকগণ যেসব ভোটকেন্দ্র পর্যবেক্ষণ করেছে, সেগুলোর ৪৬ দশমিক ৫ শতাংশ কেন্দ্রে ১৫৯টি অনিয়মের ঘটনা পর্যবেক্ষণ করেছে।”
অনিয়মের ঘটনাগুলোর বেশিরভাগই দুপুরের পর সংঘটিত হয়েছে বলে তিনি জানান।
আলীম বলেন, “অনিয়মের মধ্যে রয়েছে জোর করে ব্যালট পেপারে সিল মারা, ভোটকেন্দ্রের ৪০০ গজ ব্যাসার্ধের মধ্যে ভেতরে নির্বাচনী প্রচারণা চালানো এবং ভোটকেন্দ্রের ভেতরে অননুমোদিত ব্যক্তিদের অবস্থান।”
৪২৫টি কেন্দ্রের মধ্যে ইডব্লিউজি ৫৭টি ওয়ার্ডের ১২৯টি কেন্দ্রে পর্যবেক্ষণ চালিয়েছে বলে জানান আলীম।
নির্বাচন কমিশন কর্তৃক প্রকাশিত ভোটকেন্দ্রের পূর্ণাঙ্গ তালিকা থেকে দৈবচয়ন পদ্ধতির মাধ্যমে এসব কেন্দ্র বাছাই করা হয় বলে জানান ইডব্লিউজি পরিচালক।
পর্যবেক্ষণকৃত কেন্দ্রগুলোর মধ্যে ১২টিতে ভোটগ্রহণ বন্ধ হয়েছিল জানিয়ে তিনি বলেন, এর মধ্যে ৯টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ পুনরায় হয়েছিল।
আলীম বলেন, “ভোট গ্রহণ শুরুর সময়ে প্রায় ৯৭ শতাংশ কেন্দ্র আওয়ামী লীগ এবং ৮১ শতাংশ কেন্দ্রে বিএনপির মেয়র প্রার্থীর এজেন্টদের দেখতে পেয়েছেন পর্যবেক্ষকরা। এরপর এজেন্ট ছিল কি না, সেটা পর্যবেক্ষণ করা হয়নি।”
বিএনপি অভিযোগ করেছে, শতাধিক কেন্দ্র থেকে ধানের শীষের এজেন্টকে বের করে দেওয়া হয়। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, বিএনপির এজেন্ট ছিলই না।
খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের দেড় মাসের মধ্যে গাজীপুর সিটি করপোরেশনে নির্বাচন হয়েছিল।
বর্তমান ইসির অধীনে কুমিল্লা ও রংপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের প্রশংসা পেয়েছিল। খুলনায় নির্বাচনের পর ইডব্লিউজি বলেছিল, অনিয়ম থাকলেও তা ফল বদলে দেওয়ার মতো ছিল না।
গাজীপুরে ভোটের তুলনা করতে গিয়ে ইডব্লিউজি পরিচালক আলীম বলেন, “নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা ও রংপুরে অনিয়ম কম হলেও গাজীপুরে অনিয়মের পরিমাণ বেড়েছে।”
সেক্ষেত্রে ভোটের প্রবণতা ভালোর দিকে, না খারাপের দিকে যাচ্ছে- সাংবাদিকদের এই প্রশ্নে স্পষ্ট কোনো উত্তর দেননি তিনি।
আরেক প্রশ্নে ইডব্লিউজির সদস্য হারুন অর রশীদ বলেন, “নির্বাচনে ভোটগ্রহণের দায়িত্বে যারা থাকেন, তারা কোনো অনিয়মের জড়িত হবেন না এবং কেউ অনিয়ম করলে সেক্ষেত্রে বাধা দিবে। কিন্তু তারা যদি অনিয়মে জড়িয়ে যায়, সেটা দুঃখজনক।”