মুনাফার জন্য যাতে আমিষ খাত ক্ষতিগ্রস্ত না হয়: রাষ্ট্রপতি

মৎস্য ও পশু খাদ্যের মান নিয়ে আজকাল প্রায়ই প্রশ্ন উঠে উল্লেখ করে ব্যক্তিগত মুনাফার জন্য যাতে এ খাতের প্রবৃদ্ধি ব্যাহত না হয় সেদিকে সংশ্লিষ্টদের নজর দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 Jan 2018, 12:41 PM
Updated : 20 Jan 2018, 12:41 PM

শনিবার প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ উপলক্ষ্যে এক অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি এ আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে বলেন, “প্রাণিজাত আমিষের বেশীরভাগই পূরণ হয় চাষের মাছ-মাংস দিয়ে।  আমাদের ছেলেমেয়েরা এসব খেয়ে বড় হচ্ছে। তাই ব্যক্তিগত মুনাফার জন্য যাতে এ খাতের প্রবৃদ্ধি ব্যাহত না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।”

কৃষিবিদ ইন্সটিটিউশন বাংলাদেশের মিলনায়তনে ওই অনুষ্ঠানে প্রাণিসম্পদের রপ্তানির দিকে নজর দিতে সংশ্লিষ্টদের আহ্বান জানিয়ে আবদুল হামিদ বলেন, “আমাদের রপ্তানি বাণিজ্যেও এটি একটি উল্লেখযোগ্য খাত। অতীতে কিছুসংখ্যক অসাধু মুনাফালোভী ব্যক্তির কারণে এ খাতের সম্ভাবনা বাধাগ্রস্ত হয়েছে এবং বিদেশে আমাদের সুনাম ক্ষুন্ন হয়েছে।

“বর্তমানে রপ্তানি বাজার তীব্র প্রতিযোগিতামূলক। তাই আমাদের পণ্য গুণে-মানে সেরা হতে হবে। এসব ক্ষেত্রে যেকোনো ধরনের অনিয়ম-দুর্নীতি কঠোরভাবে মোকাবেলা করতে হবে।”

তিনি বলেন, “চাহিদা ও সরবরাহের সমন্বয় থাকায় প্রয়োজনে যেকোনো সময় বাজারে ডিম, দুধ, মাংস সহনীয় মূল্যে পর্যাপ্ত পরিমানে পাওয়া যায়। তবে কেবল ভোক্তার বিষয় বিবেচনা করলেই চলবে না। আমাদের উৎপাদকদের আর্থিক নিরাপত্তার বিষয়টিও গুরুত্বের সাথে ভাবতে হবে। উৎপাদন বৃদ্ধির সাথে সাথে পণ্যের উপযুক্ত মূল্য নিশ্চিত করার লক্ষ্যে রপ্তানির দিকেও আমাদের নজর দিতে হবে।

“বর্তমানে এ খাতে সীমিত পরিমাণে রপ্তানি হচ্ছে। রপ্তানি বৃদ্ধির লক্ষ্যে আমাদের উৎপাদিত পণ্যের গুণগত মান নিশ্চিতকরণে উদ্যোগী হতে হবে। এজন্যে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো, গবেষণাগার, দক্ষতা উন্নয়ন ও আইনী কাঠামো গড়ে তুলতে হবে।”

আবদুল হামিদ বলেন, “মৎস্য, হাঁস-মুরগী চাষ ও গবাদিপশু পালন দেশে কর্মসংস্থান ও বিনিয়োগের বৃহৎ ও সম্ভাবনাময় একটি খাত। এ খাতের সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে জাতীয় উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করতে হলে কৃষিবিদ, কৃষিবিজ্ঞানী, কৃষক, উদ্যোক্তাসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে সমন্বিত প্রয়াস চালাতে হবে। উৎপাদনের প্রতিটি পর্যায়ে যথাযথ মান নিশ্চিত করতে হবে।”

তিনি আরও বলেন, “খাদ্যশস্য উৎপাদনে আমরা ইতোমধ্যে স্বয়ম্ভরতা অর্জন করেছি। কিন্তু শুধু পেট ভরে ভাত খেলে মেধা ও মননের পূর্ণ বিকাশ সম্ভব নয়। এখন আমাদের লক্ষ্য সুষম পুষ্টি চাহিদা পূরণ করা। এ ক্ষেত্রে প্রাণিসম্পদের ভূমিকা অপরিসীম।”

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব মো. মাকসুদুল হাসান খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র চন্দ।

পরে রাষ্ট্রপতি প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ উপলক্ষ্যে আয়োজিত মেলার উদ্বোধন ও বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখেন।