প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার প্রশ্নে ভুলের ঘটনায় এক শিক্ষা কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করেছে সরকার, যদিও খোঁজ করে তার কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।
Published : 23 Nov 2017, 04:39 PM
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আবু হেনা মোস্তফা কামাল বৃহস্পতিবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, প্রশ্নে ভুলের ঘটনায় গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার আব্দুল মান্নান নামে একজন সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তাকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সাময়িক বরখাস্ত করেছে।
মন্ত্রণালয়ের আদেশে বলা হয়েছে, “গাইবান্ধার সাদুল্লাহপুরের সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আব্দুল মান্নানকে সরকারি কর্মচারী বিধিমালা অনুযায়ী অসদাচরণের অভিযোগে ২৩ নভেম্বর থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হল।”
গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ আসিফ-উজ-জামানের স্বাক্ষরে ওই আদেশে বলা হয়, সাময়িক বরখাস্তকালীন বিধি মোতাবেক ‘সাময়িক ভাতা’ পাবেন আব্দুল মান্নান।
মন্ত্রণালয় বরখাস্ত করলেও সাদুল্লাপুরের শিক্ষা কর্মকর্তা বলছেন, ওই নামে কোনো শিক্ষা কর্মকর্তা সেখানে নেই।
চলমান প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনীর সিলেট অঞ্চলের ইংরেজি ভার্সনের বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচিতি বিষয়ের পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে অন্তত অর্ধ শতাধিক ভুল ধরা পড়ে।
ওই প্রশ্নপত্রটির ৫০টি নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নের মধ্যে ৪০টিতেই ভাষা ও ব্যাকরণগত ভুল ছিল। এনিয়ে ব্যাপক ক্ষোভ প্রকাশ করেন অভিভাবক ও শিক্ষকরা। এখনও সমালোচনা চলছে ইন্টারনেটে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমি (নেপ) প্রাথমিক সমাপনীর প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করে। সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল মান্নান বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচিতি বিষয়ের ইংরেজি ভার্সনের প্রশ্নটি বাংলা থেকে ইংরেজিতে অনুবাদের দায়িত্বে ছিলেন বলে নেপ থেকে মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়।”
“নেপের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই আব্দুল মান্নানকে বরখাস্ত করা হয়েছে।”
গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরের শিক্ষা কর্মকর্তা নূর মোহাম্মদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তার উপজেলায় আব্দুল মান্নান নামে কোনো সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা নেই।
“বিগত কয়েক বছরেরও ওই নামে কোনো সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা ছিল না।”
সাদুল্লাপুরের সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী ছিদ্দিকও জানান, তাদের উপজেলায় ওই নামে কোনো সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা নেই।
এ বিষয়ে গণশিক্ষা সচিবের সঙ্গে কথা বলতে তার মোবাইলে একাধিকবার ফোন করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।
আব্দুল মান্নানের হদিস না পেয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে বেশ কয়েকবার ফোন করলেও তিনি তা ধরেননি।
নেপ মহাপরিচালককেও কয়েকবার কল করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
নেপের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “প্রশ্নে ভুলের ঘটনায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী হঠাৎ করেই নেপে এসেছেন। ডিজি স্যার উনারে নিয়ে ব্যস্ত আছেন।”