ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতর দিয়ে মেট্রোরেল ঠেকাতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের বিষয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, এ পর্যায়ে মেট্রোরেলের রুট পরিবর্তনের আর কোনো সুযোগ নেই।
Published : 15 Jan 2016, 04:30 PM
মেট্রোরেলের পথ বদলাতে ঢাবিতে মানববন্ধন
ঢাবিতে মেট্রোরেলে সতর্কতার পরামর্শ
শুক্রবার দুপুরে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে ঢাকা মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদ আয়োজিত ‘পরিবার দিবসের’ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন মন্ত্রী।
ওবায়দুল কাদের বলেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠক করে মেট্রোরেলের নকশা করা হয়েছে। আগামী মার্চ মাসেই মেট্রোরেলের মূল কাজ শুরু হবে। এখন মেট্রোরেলের পথ পরিবর্তনের সুযোগ নেই।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার জাতীয় জাদুঘর, দোয়েল চত্বর হয়ে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল নির্মাণের পরিকল্পনা চূড়ান্ত করেছে সরকার। এজন্য প্রকল্প এলাকার বিভিন্ন স্থানে চালানো ভূ-তাত্ত্বিক জরিপও শেষ হয়েছে।
তবে এ মেট্রোরেলের চলাচলের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশকিছু স্থাপনা তাদের চিরচেনা সৌন্দর্য হারানোর পাশাপাশি সরাসরি হুমকিতে পড়বে এবং শিক্ষার পরিবেশ ব্যাহত হবে দাবি করে রুট পরিবর্তনের দাবিতে গত ৭ জানুয়ারি মানবন্ধন করে শিক্ষার্থীরা।
তাদের দাবি, এই মেট্রোরেল হলে বিজ্ঞান অনুষদের জিন প্রকৌশল, সিএসই, অণুজীব বিজ্ঞান ও সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড রিসার্চ বিভাগ পড়বে সরাসরি হুমকিতে। বহু বছরের পুরনো রাজু ভাস্কর্যও তার চিরচেনা সৌন্দর্য হারাবে।
আর এই ট্রেনের শব্দে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থগার ও দোয়েল চত্বরের পাশে অবস্থিত বিজ্ঞান লাইব্রেরিতে লেখাপড়া এবং ক্যাম্পাস এলাকার সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড ব্যাহত হবে।
এ বিষয়ে সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, “জাতীয় সংসদ ভবন, প্রেস ক্লাব ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোর স্থানে মেট্রোরেল সাউন্ড প্রুফ করা রয়েছে। সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে মেট্রোরেল বাধা সৃষ্টি করবে কেন? আমি অনুরোধ করবো এ নিয়ে আর বাদানুবাদ না করার।”
এর আগে ‘মেট্রোরেলের রুট বদলাও, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাঁচাও’ দাবিতে মেট্রোরেলের বিরোধিতাকারীদের সমালোচনা করে ৯ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন,“এগুলো (নকশা পরিবর্তন) করতে গেলে পুরো প্রজেক্টটা নষ্ট হবে।সাধারণ মানুষ ভুক্তভোগী হবে।
রাজধানীতে মেট্রোরেল রুট নির্মাণে ইতোমধ্যে অ্যালাইনমেন্ট ও ১৬টি স্টেশনের নকশা চূড়ান্ত হয়েছে। প্রকল্প এলাকার বিভিন্ন স্থানের ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ শেষ হলেও ডিটেইল ডিজাইনের কাজ শেষে হবে ২০১৬ সালের অগাস্টে।
ঢাকার বহুল প্রতীক্ষিত মেট্রোরেল প্রকল্প নির্ধারিত সময় ২০১৯ সালে বাস্তবায়িত হলে রাস্তার মাঝ বরাবর উপর দিয়ে মোট ২৪ জোড়া ট্রেন চলাচল করবে। উত্তরা থেকে শুরু হয়ে মিরপুর-ফার্মগেইট হয়ে মতিঝিল পর্যন্ত যাবে এই ট্রেন, সময় লাগবে ৪০ মিনিটেরও কম।
জাতীয় সড়ক নিরাপত্তায় ১৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন কমিটি করা হয়েছে বলে ‘পরিবার দিবস’ এই অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের জানান সড়ক পরিবহন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, "ওই কমিটিতে এবারই প্রথম যারা সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে কাজ করে তাদেরও রাখা হয়েছে। এই কমিটি সরকারকে পরামর্শ দেবে, সহযোগিতা করবে।
‘পরিবার দিবস’ উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত।
মহানগর পূজা কমিটির সভাপতি জে এল ভৌমিকের সভাপতিত্বে সভায় স্থানীয় সংসদ সদস্য হাজী মো. সেলিম, সংসদ সদস্য হাবিবে মিল্লাত, সংসদ সদস্য পংকজ দেবনাথ, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সদস্য সুজিত রায় নন্দী, আওয়ামী লীগ নেতা মুকুল বোসসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।