৪ মিনিট পরপর ১৮০০ যাত্রী নিয়ে ছুটবে মেট্রোরেল

প্রতি চার মিনিট পরপর ১ হাজার ৮০০ যাত্রী নিয়ে ছুটে চলবে মেট্রোরেল, ঘণ্টায় চলাচল করবে প্রায় ৬০ হাজার যাত্রী।

শামীম আহমেদবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Sept 2014, 02:10 PM
Updated : 23 Sept 2014, 02:24 AM

মোট ২৮ জোড়া মেট্রোরেল চলাচল করবে রাজধানীতে। রাস্তার মাঝ বরাবর উপর দিয়ে উত্তরা থেকে শুরু হয়ে মিরপুর-ফার্মগেইট হয়ে মতিঝিল পর্যন্ত যাবে এই মেট্রো রেল। সময় লাগবে ৪০ মিনিটেরও কম।

নির্মাণ কাজে মোট ৬টি প্যাকেজে দেওয়া হবে আটটি দরপত্র।

এসব তথ্য জানিয়ে মেট্রোরেল প্রকল্প পরিচালক মো. মোফাজ্জেল হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, প্রতি মেট্রোরেলে ৬টি কোচ থাকবে। প্রতি স্কয়ার মিটারে ৮ জনের হিসাবে ব্যস্ততম সময়ে ১৮০০ যাত্রী চলাচল করতে পারবে।

মেট্রোরেল প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকা লাগবে, যার ১৬ হাজার ৫৯৫ কোটি টাকাই দেবে জাইকা। বাকি ৫ হাজার ৩৯০ কোটি টাকা জোগাবে সরকার।

আগামী জুলাই মাসে এ প্রকল্পের পরিপূর্ণ নকশা (ডিটেইলড ডিজাইন) চূড়ান্ত হবে বলেও জানান  মোফাজ্জেল হোসেন।

তবে এ সুবিধা পেতে রাজধানীবাসীতে অপেক্ষা করতে হবে আরো ৪ বছর (২০১৯)।

নির্মাণে ৮টি দরপত্র

মেট্রোরেল স্থাপনে ৬টি প্যাকেজে মোট ৮টি দরপত্র আহ্বানের প্রস্তুতি নিচ্ছে মেট্রোরেল প্রকল্প।

মোফাজ্জেল বলেন, “প্রাথমিকভাবে আগামী ডিসেম্বরে উত্তরা ৩য় ফেইসে মেট্রোরেল ডিপো নির্মাণে দুইটি দরপত্র আহ্বানের প্রক্রিয়া চলছে।”

“আগামী বছরেরর শুরু থেকেই এ প্রকল্পের দৃশ্যমান কাজ শুরু হতে যাচ্ছে।”

“ধারাবাহিকভাবে মেট্রোরেল চলাচলের জন্য ব্রিজ (যার উপর দিয়ে চলবে) এবং স্টেশন নির্মাণে ৪টি দরপত্র, রেল কোচ কেনায় একটি এবং ইলেকট্রিক্যাল ম্যাকনিক্যাল ওযার্কের জন্য আরেকটি দরপত্র আহ্বান করা হবে।”

আগামী ২০১৭ সালের মধ্যে দরপত্র প্রক্রিয়া শেষে হবে। ধাপে ধাপে নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করতে হয় বলেই এ সময় প্রয়োজন হবে।  

রাস্তার মাঝ বরাবর উপর দিয়ে চলবে মেট্রোরেল

রাজধানীর রাস্তার মাঝ বরাবর উপর দিয়ে চলবে মেট্রোরেল। মেট্রোরেল স্টেশন হবে প্রায় দোতলা সমান উঁচু।

মোফাজ্জেল হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “প্রায় ২১ কিলোমিটার দীর্ঘ ব্রিজ তৈরির পর লাইন তৈরি করা হবে তার উপর, রাস্তার মাঝ বরাবর দিয়ে এই ব্রিজ তৈরি করা হবে।”

দোতলায় স্টেশন

ইতোমধ্যে মেট্রোরেল নির্মাণে ‘এলাইনমেন্ট’ ও ১৬টি স্টেশনের নকশা চূড়ান্ত করা হয়েছে।

মোফাজ্জেল হোসেন বলেন, “দোতালা উচ্চতায় এ স্টেশন তৈরি করা হবে। নিচতলায় হবে টিকেট ক্রয় ও স্বয়ংক্রিয় প্রবেশ দ্বার। দুইপাশ থেকে যাত্রীরা আসা যাওয়া করতে পারবে এ স্টেশনে।”

উত্তরা থেকে শাপলা চত্বর পর্যন্ত মেট্রোরেল (এমআরটি-৬) রুটের নকশা। (ফাইল ছবি)

প্রায় ১৮০ মিটার লম্বা হবে এ স্টেশন। তবে স্টেশনগুলো উন্নত দেশগুলোর মতো শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে না বলেও জানান প্রকল্প পরিচালক।

মেট্রোরেল নির্মাণকালীন বিভিন্ন স্থানে ৫টি কন্সট্রাকশন ইয়ার্ড তৈরি করা হবে এবং নির্মানকাজ রাত ১১ থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত চালানোর পরিকল্পনা রয়েছে।

ভূমি অধিগ্রহণের বিশেষ বিধান রেখে গত ২৮ এপ্রিল মেট্রোরেল সংক্রান্ত আইনের খসড়ায় নীতিগত অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা।

২০১২ সালে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) এ প্রকল্প অনুমোদন পায়।

মেট্রোরেলের ১৬টি স্টেশন হবে- উত্তরা (উত্তর), উত্তরা (সেন্টার), উত্তরা (দক্ষিণ), পল্লবী, মিরপুর ১১, মিরপুর-১০ নম্বর, কাজীপাড়া, তালতলা, আগারগাঁও, বিজয় সরণি, ফার্মগেইট, সোনারগাঁও, জাতীয় জাদুঘর, দোয়েল চত্বর, জাতীয় স্টেডিয়াম এবং বাংলাদেশ ব্যাংক এলাকায়।