হর্নের অত্যাচার: যাদের দেখার কথা, কানেই যেন যায় না তাদের

দেশে হাইড্রলিক হর্ন নিষিদ্ধ; কিন্তু ‘উচ্চ শব্দ উৎপাদনকরী’ অন্য হর্নের বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেই। অত্যাচার বন্ধে পরিবেশ অধিদপ্তরের কার্যক্রম অনেকটাই দিবসকেন্দ্রিক।

ওয়াসেক বিল্লাহবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 March 2023, 07:40 PM
Updated : 11 March 2023, 07:40 PM

নিউ ইস্কাটন রোড ধরে মগবাজার মোড়ের দিকে যাচ্ছিল একটি মোটর সাইকেল। অফিস সময়ে সামনে গাড়ির লম্বা সারি। এর মধ্যে সেই বাইক চালক তীব্র শব্দে হর্ন বাজাচ্ছিলেন।

“কেন অযথা হর্ন দিচ্ছেন?” – এই প্রশ্নে বাইকার বললেন, “গাড়িটা তো একটু চাপতে পারে।”

“কোথায় চাপবে? সামনে দেখছেন না সব গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে?”- এই বক্তব্যের জবাব না দিয়ে বিড়বিড় করে কিছু একটা বলতে লাগলেন তিনি।

অকারণ হর্ন বাজানোর প্রবণতা নিয়ে ত্যক্ত বিরক্ত বহু মানুষ। সচেতনতা গড়ার চেষ্টায় সামাজিক মাধ্যমের পাশাপাশি চলছে নানা চেষ্টা। কিন্তু কাজের কাজ হচ্ছে না কিছুই।

সরকারি সংস্থা পরিবেশ অধিদপ্তরও মাঝেমধ্যে অকারণে হর্ন বাজানোর প্রবণতা নিয়ে প্রচার চালায়। এটা কীভাবে মানুষের মৃত্যুর কারণ পর্যন্ত হতে পারে, সে বিষয়টিরও উল্লেখ থাকে তাদের প্রচারপত্রে। পত্রপত্রিকায় বিজ্ঞাপন আকারেও তা ছাপা হয়।

তবে এই প্রচার অনেকটা দিবসকেন্দ্রিক। উচ্চশব্দের হর্ন বন্ধে বছরের বেশিরভাগ সময় কোনো কার্যকর পদক্ষেপ থাকে না। ফলে ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে প্রচারপত্রে লেখাই সার হয়।

অধিদপ্তর জানিয়ে দিয়েছে, ঢাকায় সর্বোচ্চ কত মাত্রার হর্ন বাজানো যাবে। তবে গাড়ির হর্নের মাত্রা যেন এর চেয়ে বেশি না যায়, তা গাড়ি বা মোটর সাইকেল সংযোজন পর্যায়ে নিশ্চিত করার কোনো উদ্যোগই নেওয়া হয়নি।

দেশে হাইড্রলিক হর্ন নিষিদ্ধ করা হয়েছে ২০১৭ সালেই। কিন্তু ‘উচ্চ শব্দ উৎপাদনকরী’ অন্য হর্নের বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। যদিও এমনও দেখা গেছে, ঢাকায় ১১০ ডেসিবল পর্যন্ত মাত্রার শব্দ উৎপন্ন করছে সেগুলো। কিন্তু আমদানিতে নিষেধ নেই।

সড়ক পরিবহন আইনে ‘উচ্চ শব্দের হর্ন’ বাজালে ১০ হাজার টাকা জরিমানার কথা বলা আছে। এ আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয় পুলিশ। কিন্তু হর্নের বিষয়ে তাদের পদক্ষেপ নেই বললেই চলে।

পুলিশের একজন কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন, কেবল হাইড্রোলিক হর্ন পেলেই তারা ব্যবস্থা নেন। অন্য হর্ন কী মাত্রায় বাজল, সেটি তারা দেখেন না।

একজন গাড়ি আমদানিকারক জানিয়েছেন, গাড়ি আমদানির শর্তে বলা হয়েছে, হাইড্রলিক হর্ন থাকা চলবে না। অন্য হর্নের বিষয়ে সেখানে কিছু নেই।  

২০০৭ সালে রাজধানীর বেশ কয়েকটি সড়কে হর্ন নিষিদ্ধ করে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। সে সময় অভিযান চালিয়ে প্রতিদিন জরিমানা কত সেটি গণমাধ্যমকে জানানো হয়। কিন্তু এখন এই ধরনের অভিযান আর হয় না। সব সড়কেই বাজতে থাকে হর্ন।

হর্ন কী মাত্রায় থাকার কথা, আছে কত

শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে ২০০৬ সালে করা হয় ‘শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা’। এতে রাজধানীতে শব্দের গ্রহণযোগ্য সর্বোচ্চ মাত্রা সময় ও এলাকাভেদে আলাদা করে দেওয়া আছে।

নীরব এলাকায় রাতে সর্বোচ্চ মাত্রা ৪০ ডেসিবল আর দিনে ৫০। আবাসিক এলাকায় রাতে ৪৫ ও দিনে সর্বোচ্চ ৫৫ ডেসিবল শব্দ করা যাবে।

মিশ্র এলাকায় যথাক্রমে ৫০ ও ৬০ ডেসিবল, বাণিজ্যিক এলাকায় ৬০ ও ৭০ ডেসিবল শব্দ গ্রহণযোগ্য। শিল্প এলাকায় তা রাতে ৭০ এবং দিনে সর্বোচ্চ ৭৫ ডেসিবল শব্দ করা যাবে।

একটি গাড়িতে যেহেতু একটিই হর্ন থাকে, তাই তা ৪০ ডেসিবলের নিচে থাকার কথা। কিন্তু ঢাকার গাড়িতে হর্ন যে এর চেয়ে বেশি মাত্রায় বাজে, সেটা পরিবেশ অধিদপ্তরের অভিযানেই দেখা গেছে।

গত ১ ফেব্রুয়ারি মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের একটি বিশেষ অভিযানে পাঁচটি গাড়ি পরীক্ষা করে একটিতে শব্দের মাত্রা পাওয়া যায় ১১০ ডেসিবল। অন্য চারটি ছিল যথাক্রমে ১০১, ৯৯, ৯৮ ও ৯৭।

বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব হেলথ সায়েন্সেসের নন কমিউনিকেবল ডিজিজ বিভাগের চিকিৎসক সাইকা নিজাম ২০২০ সালে শব্দ দূষণ নিয়ে রাজধানীতে একটি গবেষণা করেন।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি জানান, সকাল ৭টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে হর্নের শব্দ পেয়েছেন গড়ে ৯৫ ডেসিবল আর দক্ষিণ সিটিতে ৯৬।

গাড়ির আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ‘ইউ কারস’ এর স্বত্ত্বাধিকারী বেনজীর আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এখন তো এমন হর্ন আছে, যেগুলো হাইড্রোলিক নয়, কিন্তু শব্দ এর কাছাকাছি রকমের। এগুলো আমদানি নিষিদ্ধ করা উচিত।”

Also Read: ঢাকার আবাসিক এলাকায় রাতে হর্ন বাজানোয় নিষেধাজ্ঞা

Also Read: শব্দ দূষণে কানের সমস্যায় ৪২ শতাংশ রিকশাচালক: গবেষণা

Also Read: শব্দ দূষণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ১১.৮% ট্রাফিক পুলিশের শ্রবণশক্তি: সমীক্ষা

Also Read: ৯ গাড়ির সাতটিই ছড়ায় দূষণ, উচ্চ মাত্রার হর্ন ‘সবগুলোতেই’

সচেতনতা গড়ার চেষ্টা

বাংলাদেশ কার্টুনিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হক বছর পাঁচেক ধরেই হর্ন নিয়ে সচেতনতা গড়ার চেষ্টায় কাজ করে যাচ্ছেন। নানা বার্তা দিয়ে কার্টুন স্টিকার ছাপিয়ে বিলি করে আসছেন। তার সঙ্গে আছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক হেলথ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রোমেন রায়হান, সংবাদকর্মী শিমু নাসের এবং কার্টুনিস্ট আবু হাসান।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে মেহেদী বলেন, “হর্ন নিয়ে প্রশাসন গুরুত্ব দেয় না, তাই সমস্যাও দূর হয় না। গুরুত্ব দিয়ে কাজ করলে কী হয়, তার প্রমাণ তো মোটর সাইকেল আরোহীদের হেলমেট ব্যবহার দিয়েই বোঝা যায়। বছর কয়েক আগেও তো হেলমেট পড়ত না বহু জন। এখন কেবল চালক না, আরোহীর মাথাতেও হেলমেট দেখা যায়।”

কেন গুরুত্ব দিচ্ছে না অধিদপ্তর? মেহেদী বলেন, “উদ্যোগী হয়ে কাজ করলেও যা পাবেন, না করলেও তো তাই পাবেন। তাই এটা করে।”

চিকিৎসক রোমেন রায়হান বলেন, “ইদানীং বায়ু দূষণ নিয়ে অনেক কথাবার্তা হচ্ছে। সেখানেও শব্দ দূষণের বিষয়টি উঠে আসছে না। এ কারণে পরিবেশ অধিদপ্তরের অগ্রাধিকারে এটি থাকে না। দেখবেন তারা দিবসকেন্দ্রিক কাজ করে। কিন্তু সেটি করলে হবে না। এর ধারাবাহিকতা লাগবে।

“এখানে দুটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ। আইন করা এবং তার বাস্তবায়ন এবং সচেতনতা গড়া। কিন্তু সেখানে কাজ হচ্ছে না, এটিই সমস্যা।”

সমাধান ‘কঠিন নয়’

মেহেদী বলেন, “গাড়ি বা বাইক উৎপাদন বা সংযোজন পর্যায়ে বলে দিলেই তো হয় যে ৪০ ডেসিবলের ওপরে কোনো হর্ন ব্যবহার করা যাবে না। পাশাপাশি যারা আমদানি করে তাদেরকেও সেটি বলতে হবে।”

আরেক কার্টুনিস্ট ও সংবাদ কর্মী আবু হাসান গত ১০ বছর ধরে পারতপক্ষে হর্ন না বাজিয়ে বাইক চালিয়ে আসছেন। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “কোনো কারণে যদি ভাড়ার বাইক বা অটোরিকশায় উঠতে হয়, আগেই শর্ত দিয়ে নিই, অকারণে হর্ন বাজানো যাবে না। ঠিকই তখন তারা না বাজিয়েই চলে। তার মানে এটা যে দরকার নেই, সেটি তারা বোঝেন না।”

তিনি বলেন, “হর্নের তো মিটার নাই। তাই কেউ বুঝবে না তিনি ৪০ ডেসিবলে বাজালেন নাকি ৬০ এ বাজালেন। কাজেই এটা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে উৎপাদন আর বাজারজাতকরণের সময়। তাদেরকে নির্দেশ দিতে হবে যে, ৪০ ডেসিবলের ওপরের কোনো হর্ন ব্যবহার করা যাবে না।

“আরেকটা বিষয় জরুরি, সেটি হলো হর্ন আমদানির ক্ষেত্রে সীমা বেঁধে দিতে হবে। ৪০ ডেসিবলের চেয়ে বেশি মাত্রায় আনা যাবে না, এমন নিয়ম করে দিলেই তো হয়।”

গাড়ি আমদানিকারক বেনজীর আহমেদ বলেন, “আমরা যেসব গাড়ি আমদানি করি, সেগুলোর উৎপাদক কোম্পানি আইন কানুন মেনেই উৎপাদন করে। বিভিন্ন দেশে দেখেছি হর্ন বাজানো হয় না বললেই চলে। আর বাজালেও ১০ ফুট দূরে শোনা যায়। কিন্তু আমাদের দেশে তো আধা কিলোমিটার বা তার চেয়ে বেশি দূরে শোনা যায়।”

ঢাকায় ‘প্রতি পাঁচ জনে একজনের’ শ্রবণ শক্তি ক্ষতিগ্রস্ত

চিকিৎসক সাইকা নিজামের সেই গবেষণায় যাদের পরীক্ষা করা হয়, তাদের মধ্যে ৭ শতাংশের শ্রবণশক্তি এতটাই ক্ষতিগ্রস্ত যে, এখনই তাদের শ্রবণযন্ত্র লাগবে। ১৪ শতাংশের শ্রবণ শক্তিও নষ্ট হয়েছে ব্যাপকভাবে। তাদেরও যে কোনো সময় শ্রবণ যন্ত্র লাগতে পারে।

এই উচ্চশব্দ মানুষের জন্য কতটা ক্ষতিকর- জানতে চাইলে এই চিকিৎসক বলে, “কেবল শ্রবণশক্তি নষ্ট হচ্ছে, এমন নয়। এর কারণে হাইপারটেনশন হয়, ঘুমের সমস্যা হতে পারে। মানসিক সমস্যাও দেখা দেয়, মেজাজ খিটমিটে হয়ে যেতে পারে। আরও নানা ক্ষতি হয়।”

চিকিৎসক রোমেন রায়হান বলেন, “ঢাকায় সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী রিকশাচালক আর ট্রাফিক পুলিশ। কারণ, তারা সব সময় সড়কে থাকে। কিন্তু কেউই এটি নিয়ে সচেতন নয়। মনে হয়, সবাই মেনেই নিয়েছে।”

পরিবেশ অধিদপ্তর কী বলছে

পরিবেশ অধিদপ্তরের শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণ সমন্বিত অংশীদারত্বমূলক প্রকল্পের পরিচালক মাছুমা খানম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আইন অনুযায়ী আমাদেরকে যতটা ক্ষমতা দেওয়া আছে, আমরা ততটাই করি।”

তিনি এর বেশি না বললেও অধিদপ্তরের একজন পরিচালক তাদের সীমাবদ্ধতার কথা বলেছেন; জানিয়েছেন, ভ্রাম্যমাণ আদালত না বসালে জরিমানাও করতে পারে না অধিদপ্তর।

প্রশাসন থেকে সম্প্রতি প্রেষণে পরিবেশে এসেছেন বলে ওই কর্মকর্তা নিজের নাম প্রকাশ করতে চাননি।

এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “যেহেতু রাতের বেলায় নীরব এলাকায় সর্বোচ্চ মাত্রা ৪০ ডেসিবল আছে, তাই বাইক বা গাড়িতে হর্ন এর নিচে থাকাই বাঞ্ছনীয়।”

তাহলে এর চেয়ে বেশি মাত্রার হর্ন আমদানি ও ব্যবহার হচ্ছে কীভাবে- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, “আমদানি নীতি যখন করা হয়েছিল, তখন এই বিষয়ে আমাদের মতামত চেয়েছিল কি না, সেটি জানা নেই। তবে ২০২৪ সালে এই নীতি সংশোধনের যে প্রক্রিয়া চলছে, সেখানে আমাদের এই সুপারিশ থাকবে, যেন ৪০ ডেসিবলের ওপর হর্ন কেউ আনতে না পারে।”

দেশেই এখন গাড়ি ও মোটর সাইকেল সংযোজন করা হচ্ছে, তাদেরকে নির্দেশনা দেওয়ার উদ্যোগ থাকবে কি না, এই প্রশ্নে তিনি বলেন, “অবশ্যই। আর কেবল হর্ন নয়, শব্দ দূষণের তো আরও কারণ আছে। আমরা সবগুলো নিয়েই কাজ করব। এ জন্য বিধিমালাটিও সংশোধন করা হবে।”

সেটি হবে হবে- এ প্রশ্নে তিনি বলেন, “যত দ্রুত সম্ভব।”

নিত্যদিন ব্যবস্থা নেবে কে?

২০১৮ সালে করা সড়ক পরিবহন আইনের ৪৫ ধারায় বলা আছে, নির্ধারিত শব্দমাত্রার অতিরিক্ত উচ্চমাত্রার শব্দ বা হর্ন বাজালে তিনি সর্বোচ্চ তিন মাসের কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। এতে চালকের এক পয়েন্ট কাটা হবে।

এই আইন বাস্তবায়ন করছে পুলিশ। কিন্তু হর্নের বিষয়ে ব্যবস্থা বিরল।

ঢাকা মহানগর পুলিশের গুলশান অঞ্চলের উপকমিশনার (ট্রাফিক) আবদুল মোমেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এটা ঠিক যে সড়কে আইন লঙ্ঘনের যে কোনো বিষয় দেখার দায়িত্ব আমাদের। কিন্তু অন্যান্য বিষয় যেভাবে গুরুত্ব পায়, সেখানে হর্নের বিষয়টা পায় না। আপনি সঠিক বলেছেন, যে শব্দ দূষণের ক্ষেত্রে নজর কম।”

কিন্তু সেটা কেন?- এই প্রশ্নে তিনি বলেন, “দেখুন, অন্যান্য বিষয় চোখে দেখা যায়। আমরা বুঝতে পারছি যে গাড়িটি হয়ত উচ্চ শব্দে হর্ন বাজাচ্ছে। কিন্ত কত ডেসিবলে সাউন্ড করল, সেটা তো অনুমানের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া যায় না।

“আবার হাইওয়েতে হয়ত সম্ভব। কিন্তু শহরে এক গাড়ির চাপ, রুটিন কাজ করাই কঠিন হয়ে পড়ে। সেখানে এই কাজগুলো জরুরি হলেও করা হয় না।”

তাহলে সমাধান কী?- এ প্রশ্নে তিনি বলেন, “আসলে কোনো একটি সংস্থার একা কাজ না করে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। গাড়ি ও হর্ন উৎপাদন ও আমদানি পর্যায়েও নজর দিতে হবে।

“আপনি চাইলে আমাকে (পুলিশ) দোষারোপ করতে পারেন, যেহেতু মাঠ পর্যায়ে দায়িত্বটা আমার। কিন্তু বিআরটিএ, পরিবেশ অধিদপ্তরসহ অন্যান্য সংস্থাকেও একসঙ্গে কাজ করতে হবে।

“সেই সঙ্গে গাড়ির চালক, বিশেষ করে মালিকদেরও সচেতন হতে হবে। দেখবেন মোড়ে বা যানজটে দাঁড়িয়ে সারাক্ষণ হর্ন বাজাচ্ছে। এর মানে কিন্তু নাই। যারা গাড়ির মালিক, তারা যদি চালককে বলেন, ‘হর্ন বাজাবে না’, তাহলে দেখবেন বাজাবে না।”