ভোটকেন্দ্র ভোটার টানতে পারবে কি না, তা বড় প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে।
Published : 21 Jun 2023, 12:54 AM
অধিকাংশ দলের অংশগ্রহণ ছাড়াই হয়েছিল আগের তিনটি সিটি নির্বাচন, তার মধ্যে ইসলামী আন্দোলন এক ধরনের ভোট ভোট ভাব তৈরি করেছিল। সেই দলটিও সরে যাওয়ায় সিলেট ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের নির্বাচন হয়ে পড়েছে নিরুত্তাপ।
এমন অবস্থাতেই বুধবার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত মেয়র, সাধারণ কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর নির্বাচনে ভোট দেবেন এই দুই নগরীর ভোটাররা।
গাজীপুর, খুলনা ও বরিশারের মতো এ দুই সিটি নির্বাচনেও ভোট হবে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন-ইভিএমে। কেন্দ্রে ভোট পরিস্থিতি এবারও ঢাকায় বসে সিসি ক্যামেরায় দেখবে কমিশন।
সংসদ নির্বাচনের কয়েকমাস আগে এই সিটি নির্বাচন নিয়ে ভোটারদের যে আগ্রহ দেখার কথা ছিল, তা মিলছে না এবার। নির্দলীয় সরকারের অধীনে সংসদ নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলনরত বিএনপি ও তাদের মিত্রদের স্থানীয় সরকারের এই নির্বাচন নিয়ে আগ্রহ নেই।
সংসদে প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি ভোটের মাঠে থাকলেও প্রভাব ফেলার মতো কিছু আগের তিন নির্বাচনে তারা দেখাতে পারেনি। দুটি নির্বাচনেই দ্বিতীয় স্থানে থাকা ইসলামী আন্দোলন বরিশালে ভোটের দিন তাদের মেয়র প্রার্থী আক্রান্ত হওয়ার পর সিলেট ও রাজশাহীর ভোট বর্জন করছে।
ফলে এই নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীদের জয় আনুষ্ঠানিকতা মাত্র বলে মনে করা হচ্ছে। রাজশাহীতে নৌকার প্রার্থী হয়েছেন বর্তমান মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন, সিলেটে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী।
ভরা বর্ষায় কেন্দ্রে ভোটার খরার শঙ্কায় কেন্দ্রে ভোটার টানতে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীরা দুই সিটিতে বেশ গুরুত্ব দিচ্ছে। জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা ভোটার টানার চেয়ে পরিবেশের দিকে নজর রাখছে।
মেয়র পদে জয়-পরাজয় নিয়ে অনেক ভোটারের আর তেমন আগ্রহ না থাকলেও কাউন্সিলর পদকে ঘিরে আগ্রহ ভোটারদের কেন্দ্রে নেবে বলে স্থানীয়দের অনেকে মনে করছেন।
আগের তিন সিটি নির্বাচনে গড়ে ৫০ শতাংশও ভোট না পড়লেও ভোটের পরিবেশ নির্বিঘ্ন ও শান্তিপূর্ণ রাখার পাশাপাশি অনিয়ম, গোলযোগ ঠেকাতে বরাবরের মত নির্বাচন কমিশন আশ্বস্ত করছে।
গাজীপুর, খুলনা ও বরিশালের পর শেষ ধাপে বুধবার ভোট হচ্ছে সিলেট ও রাজশাহী সিটিতে।
সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন বা ইভিএমে ভোট হবে; দুই সিটির নতুন জনপ্রতিনিধি বাছাইয়ে ভোট দেবেন প্রায় ৮ লাখ ৩৮ হাজার ভোটার।
দুই সিটিতেই ভোটের পরিস্থিতি নজর রাখতে ভোটকেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা ব্যবহার করা হবে।
সিলেটে মেয়র পদে ৮ জন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৭২ জন ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৮৭ জন লড়ছেন। সেখানে ভোটার ৪ লাখ ৮৭ হাজার ৭৫৩ জন।
রাজশাহীতে মেয়র পদে ৪ জন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১১১ জন ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৪৬জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। সেখানে ভোটার ৩ লাখ ৫১ হাজার ৯৮২ জন।
রাজশাহীতে ভোটার খরার শঙ্কা
ভোটার খরার শঙ্কায় কেন্দ্রে ভোটার টানতেও ব্যস্ত নৌকার প্রার্থী লিটন।
নগরবাসীকে ভোটকেন্দ্রে আসার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “কোনো রকম ভয়-ভীতি ছাড়াই আপনারা ভোট কেন্দ্রে আসুন। উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট প্রদান করবেন।
“আমি মনে করি, কেউ যদি নির্বাচনে অন্য কিছু করার চিন্তা করেন, তাহলে তারা সফল হবে না। নির্বাচনের সুন্দর পরিবেশের ব্যত্যয় ঘটানোর অপচেষ্টা করলে নির্বাচন কমিশন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যবস্থা নেবেন। প্রয়োজনে আমাদের নেতাকর্মীরা জনগণকে নিয়ে তাদের প্রতিহত করবে।”
রাজশাহী সিটি নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী সাইফুল ইসলাম স্বপন বলেছেন, “ইভিএমে ভোট করে কোনো ফল পাওয়া যাবে না। ভোটের রেজাল্ট হয়েই আছে। ২১ জুন ভোটে কী ফলাফল হবে, তা এখন বলে দেওয়া যায়।”
সাইফুল জাতীয় পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান এবং রাজশাহী মহানগরের আহ্বায়ক। এমনিতেই তার প্রচার অন্য প্রার্থীদের চেয়ে কম ছিল। এ ছাড়া দলীয় বিভেদের কারণে সব কর্মীকেও তিনি এই নির্বাচনে পাননি।
লাঙ্গল প্রতীকের এই প্রার্থী সাংবাদিকদের বলেন, “ভোট করে লাভ হবে না। কেন্দ্রের কাছে অনুমতি চেয়েছি। অনুমতি পেলে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াব।”
রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসেন বলেছেন, “রাজশাহীতে ১৫৫টি কেন্দ্রের মধ্যে ১৪৮টিই ঝুঁকিপূর্ণ। সব কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা লাগানোর কাজ চলছে। নাশকতার চেষ্টা করলে কঠোর হাতে দমন করা হবে।“
লিটন রাজশাহী স্যাটেলাইট টাউন হাইস্কুল কেন্দ্রে সকাল সাড়ে ৮টা থেকে ৯টায় মধ্যে ভোট দেবেন। নগরীর আটকোষী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দেবেন সাইফুল ইসলাম স্বপন।
সিলেটে প্রার্থীর আশঙ্কা
ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের বাধা সৃষ্টির জন্য ঢাকা থেকে প্রচুর লোক সিলেটে আনা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জাতীয় পার্টির মেয়র পদপ্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুল।
তিনি বলেন, “তাদের সরকারি ও এমসি কলেজের হোস্টেলে রাখা হয়েছে। সিলেটের মানুষজন ভোটকেন্দ্রে আসতে চাচ্ছেন। তবে তারা চিন্তা করছেন, ভোট লাঙ্গলে দিলে শেষ পর্যন্ত যদি নৌকায় চলে যায়।“
নির্বাচনের দিন সহিংসতার আশঙ্কা করে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দেন লাঙ্গলের এ প্রার্থী।
“আমার আশঙ্কা, নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ বানচাল করার জন্য প্রতিপক্ষ এ ধরনের সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে আসছে। এ অবস্থায় নির্বাচনের স্বাভাবিক ও সুষ্ঠু পরিবেশ রক্ষার স্বার্থে সিলেট এমসি কলেজ ও সরকারি ডিগ্রি কলেজের ছাত্রাবাসে ২০ জুন থেকে ২২ জুন পর্যন্ত বন্ধ রাখা প্রয়োজন।”
আওয়ামী লীগের প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী এর প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, “এটা আমি আগেই বলেছি, মূলত উনার এজেন্ট সংকট রয়েছে। তাই আগেই এসব বলা শুরু করেছেন।”
ভোটকেন্দ্রে বাধা দিতে সিলেটে লোক আনা হচ্ছে, অভিযোগ জাপার
ভোটের মাঠ ছাড়তে চান রাজশাহীর জাপা প্রার্থী
প্রচারের শেষ সময়েও কেন্দ্রে ভোটার টানতে সবার প্রতি আহ্বান জানান নৌকার প্রার্থী।
“প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলেও আধুনিক ও স্মার্ট নগরী গড়ে তোলার স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য সবাই নির্ধারিত সময়ে ভোটকেন্দ্রে যাবেন এবং নৌকায় রায় দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন তৎপরতার প্রতি আপনাদের সমর্থন জানাবেন বলেই আমাদের প্রত্যাশা।”
সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ১৯০টি কেন্দ্রের মধ্যে ১৩২ কেন্দ্রকে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ হিসেবে অভিহিত করেছে পুলিশ।
‘ঝুঁকিপূর্ণ’ কোনো কেন্দ্র নেই বলে উল্লেখ করে সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (গণমাধ্যম) সুদীপ দাস বলেন, “১৩২টি কেন্দ্রকে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ এবং বাকি ৫৮টি কেন্দ্র সাধারণ বলে চিহ্নিত করা হয়েছে।“
প্রাকৃতিক দুর্যোগ, কেন্দ্রে নিরাপত্তা বেষ্টনী না থাকা, কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে সহিংসতার শঙ্কা, যোগাযোগ বিড়ম্বিত কেন্দ্র, কেন্দ্রে গোলযোগের আশঙ্কাসহ নানা দিক বিবেচনা করে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ কেন্দ্র চিহ্নিত করা হয় বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান বুধবার সকাল ৮টায় ৮নং ওয়ার্ডের পাঠানটুলা শাহজালাল জামেয়া ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে ভোট দেবেন। জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুরের সকাল ৯টায় সুবিদবাজারের আনন্দ নিকেতন স্কুলে ভোট দেওয়ার কথা রয়েছে।
রয়েছে বৃষ্টির চোখ রাঙানি
ভোটের দিন সিলেট ও রাজশাহী সিটিতে বৃষ্টির বাগড়া থাকতে পারে।
টানা কয়েকদিন ধরে তাপপ্রবাহের পর রাজশাহীতে সোমবার রাতে হালকা বৃষ্টি হয়েছে। মঙ্গলবারও দিনভর মেঘলা আকাশ, অস্বস্তিকর গরম বিরাজ করছে।
সিলেটে টানা কয়েকদিন ধরে বৃষ্টি চলছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, ভরা বর্ষার এ সময়ে ভোটের দিন দুই সিটিতে এক পশলা বৃষ্টি হতে পারে। তবে বৃষ্টিবিঘ্নিত দিনে ভোটারদের বেশি দুর্ভোগে পড়ার শঙ্কা তেমন নেই।
আবহাওয়াবিদ কামরুল হাসান বলেন, “বুধবার সিলেট সিটি এলাকায় সকাল থেকে বিকালে থেমে থেমে বৃষ্টি থাকতে পারে। গত কয়েকদিন ধরে বেশি বৃষ্টি হয়েছে, বুধবার সে তুলনায় কম বৃষ্টি হতে পারে, একটানা বৃষ্টি থাকবে না। ভোটারদের দুর্ভোগে পড়তে হয় এমন একটানা বৃষ্টি হয়ত থাকবে না।”
তবে রাজশাহী সিটি এলাকায় সকালে ও বিকালে বৃষ্টি না হলেও দুপুরে এক পশলা বৃ্ষ্টির আভাস রয়েছে।
ভোটারদের ভাবনা
ভোটে বিএনপি না থাকায় নির্বাচন সেভাবে জমেনি বলে দুই নগরবাসীরই ভাষ্য। তারপর ইসলামী আন্দোলনের মেয়র পদপ্রার্থী নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণাও প্রভাব ফেলেছে তাতে।
সিলেট নগরীর ধোপাদিঘীরপাড়ের বাসিন্দা হুমায়ুন কবির চৌধুরী বলেন, “এবারের ভোটে মেয়র প্রার্থী নিয়ে কোনো উত্তাপ নেই। তবে ওর্য়াডগুলো একাধিক কাউন্সিলর প্রার্থী থাকায় নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। যেহেতু এবার বড় রাজনৈতিক দল আসেনি; তাই গত নির্বাচনগুলোর মত ভোট পড়ার সম্ভাবনা নেই।”
অটোরিকশার চালক সাজ্জাত মিয়ার ভাষ্য, “নির্বাচন নিয়ে আমাদের কোনো আগ্রহ নেই। মেয়র কে হচ্ছেন তা কনফার্ম, সবাই জানে। …তাই মনে করছি, ভোটকেন্দ্রে যাওয়া না যাওয়া সমান। তবে কাউন্সিলর প্রার্থীদের কারণে যেতে হবে।”
‘ভোটারদের মেয়র নিয়ে আগ্রহ নেই, কথা বলে কাউন্সিলর নিয়ে’
সিটি নির্বাচনে কেন্দ্রে ভোটার নেওয়াই এখন প্রার্থীদের চ্যালেঞ্জ
ভোটারদের কেন্দ্রে আসার আহ্বান লিটনের
রাজশাহীতে জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী স্বপন মনে করেন, বরিশাল ও খুলনার নির্বাচন এবং ইসলামী আন্দোলনের ভোট বর্জনের কারণে ভোটারদের কেন্দ্রে যাওয়ার আগ্রহ কমেছে।
তবে ১৪ দলের অন্যতম শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির রাজশাহী মহানগরের সভাপতি লিয়াকত আলী লিকু বলেন, সাম্প্রতিক সিটি নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করে অবশ্যই ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের উপস্থিতির বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মানুষকে ভোটকেন্দ্রে আনতে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে, সাড়াও মিলছে।
নির্বাচন বিশ্লেষক আব্দুল আলীম বলেন, বড় একটি দল না থাকায় এবং ভালো প্রতিদ্বন্দ্বিতা না হওয়ায় পাশাপাশি অনেকের অনীহা ছিল ভোটে।গাজীপুর, খুলনা, বরিশালেও তুলনামুক কম ভোটার উপস্থিতি ছিল। রাজশাহী ও সিলেট নির্বাচনেও হয়ত একই দৃশ্য থাকবে।
সিলেটে সবশেষ ২০১৮ সালে ভোটের হার ছিল প্রায় ৬৩ শতাংশ । এর আগে ২০০৮ সালে ভোট পড়ে ৭৫ শতাংশ। ২০১৩ সালে এ সিটিতে ভোট পড়ে ৬২ শতাংশ।
রাজশাহী সিটি করপোরেশন ২০১৮ সালে ৭৮.৮৬ শতাংশ ভোট পড়েছিল। এর আগে ২০০৮ সালে ভোটের হার ছিল ৮১.৬১ শতাংশ। ২০১৩ এ সিটিতে ভোট পড়ে ৭৬.০৯ শতাংশ।
ভোট তথ্য: রাজশাহী
মেয়র প্রার্থী
আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী (নৌকা)
জাতীয় পার্টির প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুল (লাঙ্গল)
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মাহমুদুল হাসান (হাতপাখা) [বর্জন করলেও ইভিএম ব্যালটে নাম থাকবে]
জাকের পার্টির মো. জহিরুল আলম (গোলাপ ফুল)
স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ আবদুল হানিফ (কুটু ঘোড়া)
স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. ছালাহ উদ্দিন রিমন (ক্রিকেট ব্যাট)
স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. শাহ জাহান মিয়া (বাস)
স্বতন্ত্র প্রার্থী মোশতাক আহমেদ রউফ মোস্তফা (হরিণ)
৪২টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ২৭২ জন। ১৪টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে নারী কাউন্সিলর পদে ৮৭ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
মোট ভোটকেন্দ্র ১৯০টি এবং ভোটকক্ষ ১ হাজার ৩৬৭টি।
রিটার্নিং অফিসার সিলেট আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ফয়সল কাদের।
ভোট তথ্য: সিলেট
মেয়র প্রার্থী
আওয়ামী লীগের এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন (নৌকা)
জাতীয় পার্টির মো. সাইফুল ইসলাম স্বপন (লাঙ্গল)
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. মুরশিদ আলম (হাতপাখা) [বর্জন করলেও ইভিএম ব্যালটে নাম থাকবে]
জাকের পার্টির মো. লতিফ আনোয়ার (গোলাপ ফুল)
মেয়র পদে চারজন, ১০টি সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ৪৬ জন এবং ৩০টি সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১১১ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
মোট ভোটকেন্দ্র ১৫৫টি এবং ভোটকক্ষ ১ হাজার ১৫৩টি।
রিটার্নিঅফিসার রাজশাহী আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন।
আশ্বস্ত করছে ইসি
নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব খান জানান, ইভিএমে ভোটের সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। নির্বিঘ্নে ভোটাধিকার প্রয়োগের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার ব্যাপারে প্রশাসন, পুলিশ, আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ও ভোট গ্রহণ কর্মকর্তারা শতভাগ নিশ্চয়তাদিয়েছেন।
“আমরা সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরি করেছি এবং নির্বাচন প্রচারণায় অনিয়ম বা বিশৃঙ্খলা করলে কোনো ধরনের ছাড় দিইনি। আমাদের কাছে সব প্রার্থী সমান, সব দলও সমান। ভোটারদের নির্বিঘ্ন পরিবেশ তৈরিতে আমরা বদ্ধপরিকর। সকল অংশীজনের সক্রিয় এবং আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করছি।”
তিনি জানান, পাঁচ সিটির মধ্যে গাজীপুরের পর খুলনা ও বরিশালে ইভিএমে ভোট দিতে তেমন বিড়ম্বনায় পড়তে হয়নি। রাজশাহী এবং সিলেটেও কোনো অসুবিধা হবে না।
তিনি বলেন, “বর্ষা মৌসুমের কথা মাথায় রেখে ব্যাটারি, চার্জার ও আনুষাঙ্গিক যন্ত্রপাতিতেও যেন ত্রুটি না থাকে সে বিষয়ে কারিগরি দল সক্রিয় থাকবে।”
অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয় তুলে ধরে এ নির্বাচন কমিশনার বলেন, “আচরণবিধি প্রতিপালনে স্থানীয়ভাবে বেশ কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে অভিযোগ খতিয়ে দেখে সিলেটে একজন কাউন্সিলর প্রার্থীর প্রার্থিতাও বাতিল করা হয়েছে।
“এছাড়া আমরা সরাসরি সিসি ক্যামেরায় এ নির্বাচন ঢাকা থেকে পর্যবেক্ষণ করবো। নির্বাচন পূর্ব, ভোটের দিন ও নির্বাচনোত্তর অনিয়ম, গোলযোগ ও সহিংসতা যাতে না ঘটে সে বিষয়ে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।”
ভোট পর্যবেক্ষণে নির্বাচন ভবন থেকে সিসি ক্যামেরার পাশাপাশি যুগ্মসচিবের নেতৃত্বে ইসির নিজস্ব পর্যবেক্ষকদের দুটি দল রাজশাহী ও সিলেট সিটি নির্বাচনী এলাকায় থাকছেন। এছাড়া কয়েকশ’ সাংবাদিক ও পর্যবেক্ষক সংস্থার লোকবল থাকছে।
সিলেটে ইসির যুগ্মসচিব (প্রশাসন) মনিরুজ্জামান তালুকদার ও রাজশাহীতে যুগ্মসচিব (আইন) মাহবুবার রহমান সরকার নিজস্ব পযবেক্ষ দলের নেতৃত্ব দেবেন।