Published : 14 Jun 2023, 01:14 AM
বিএনপিসহ অধিকাংশ দল না থাকায় সিটি করপোরেশনে নির্বাচনী আঁচ সেভাবে নেই, ভোটারদের আগ্রহের ঘাটতি গাজীপুর, খুলনা, বরিশালের নির্বাচনে অনেকটাই স্পষ্ট। প্রার্থীরাও মানছেন, ভোটারদের কেন্দ্রে আনাটাই এখন তাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের পাশাপাশি কেন্দ্রগুলোতে ভোটারদের নিয়ে আসার ক্ষেত্রে একটি ভূমিকা রাখছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থীরা। চরমোনাই পীরের মুরিদ আর ভক্তদের ‘ভোট ব্যাংকে’ ভর করে খুলনা ও বরিশালে তাদের প্রার্থীই ছিল দ্বিতীয় অবস্থানে।
কিন্তু সোমবার বরিশালে ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থীর উপর হামলার পর দলটি ফল প্রত্যাখ্যানের পাশাপাশি সিলেট ও রাজশাহী থেকেও তাদের প্রার্থী প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয়।
ফলে সিলেট ও রাজশাহীর নির্বাচনী হাওয়া থেকে হাতপাখার বাতাস উধাও হয়ে গেলে ভোটের আমেজ আর কতটুকু থাকবে এবং শেষ পর্যন্ত কত সংখ্যক ভোটার কেন্দ্রে যাবেন, তা প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে।
বিষয়টি যে আওয়ামী লীগকে ভাবাচ্ছে, তা স্পষ্ট হয়েছে রাজশাহীতে নৌকার মেয়র প্রার্থী, দুই বারের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনের কথায়।
খুলনা-বরিশালের নির্বাচনের দিন ওয়ার্ড কমিটির নেতাদের সঙ্গে এক আলোচনায় তিনি বলেন, “আমাদের লক্ষ্য ৭০ ভাগ ভোটারকে ভোটকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া। সেটা আমরা করতে পারলে সব ক্ষেত্রে; যেমন- বিএনপিকে মোকাবেলা করা হল, প্রার্থীকেও জয়যুক্ত করা হল। এরপর আমার প্রধানমন্ত্রীকে গিয়ে বলতে পারব, শত ষড়যন্ত্র ছিন্ন করে বিপুল সংখ্যক ভোটার কেন্দ্রে গিয়ে নৌকায় ভোট দিয়ে আমাদের বিজয়ী করেছে। অতএব, বাড়ি বাড়ি গিয়ে বুঝিয়ে ভোটারদের কেন্দ্রে নিয়ে যেতে হবে।”
লিটন এর আগে তিনবার নির্বাচন করে বিএনপির প্রার্থীকে দুইবার হারিয়ে মেয়র হয়েছেন; একবার হেরেছেন।
লিটন ২০১৮ সালে যখন দ্বিতীয়বার মেয়র হন, তখন রাজশাহীতে ভোট পড়েছিল ৭৮ দশমিক ৮৬ শতাংশ। ২০১৩ সালে যখন পরাজিত হন, তখন ভোটের হার ছিল ৭৬ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ। এর আগে ২০০৮ সালে যখন প্রথমবার মেয়র হন, তখন ভোট পড়েছিল ৮১ দশমিক ৬৩ শতাংশ।
ফলে অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য লিটন যে ৭০ শতাংশ ভোটারকে কেন্দ্রমুখী করার কথা বলছেন, তা অসম্ভব কিছু না। কারণ, সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ৮২ শতাংশের বেশি ভোটার কেন্দ্রে উপস্থিত হওয়ার রেকর্ডও আছে। ২০০৮ সালে খুলনায় ভোটের হার ছিল ৮২ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ। কিন্তু এবারকার পরিস্থিতি ভিন্ন।
একজন ভোটার বলছিলেন, “আগের নির্বাচনগুলোতে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীরা পাস করাকেই চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখতেন। বিএনপি যেহেতু মাঠে নেই, দলে বিদ্রোহী প্রার্থী নেই; ফলে এখন তাদের পাস করার চ্যালেঞ্জ আর নেই। সেই বিপদ তাদের কেটে গেছে। এখন তাদের চ্যালেঞ্জ হচ্ছে, বেশি বেশি ভোটারদের কেন্দ্রে হাজির করা।”
সিলেট সিটি করপোরেশনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীও অবশ্য দাবি করছেন, তিনি প্রচারে গিয়ে ভোটারদের ব্যাপক সাড়া পাচ্ছেন।
মঙ্গলবার রাতে তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সিলেটে একটি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন হবে; এতে ভোটারদের শতভাগ উপস্থিতি থাকবে।”
তবে সিলেটে জাতীয় পার্টি মেয়র পদপ্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুলের প্রধান সমন্বয়ক আব্দুল্লাহ সিদ্দিকী বলেন, “রবিশাল সিটি নির্বাচনে নির্বাচন নিয়ে যে ঘটনা ঘটেছে, এতে সিলেটের নির্বাচনে ভোটারদের উপস্থিতিতে বিরূপ প্রভাব পড়বে।”
আগের তিনটি সিটি করপোরেশন নির্বাচনের মধ্যে গাজীপুরের ভোট নিয়ে মানুষের আগ্রহ ছিল তুলনামূলক বেশি। কারণ, সেখানে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে সাবেক মেয়র মো. জাহাঙ্গীর আলম তার মা জায়েদা খাতুনকে নিয়ে ভোটের মাঠে ছিলেন। বিএনপি পরিবারের এক সদস্যও প্রার্থী হয়েছিলেন। একটা উত্তেজনার মধ্যে নৌকাকে ডুবিয়ে জায়েদা খাতুন মেয়রও হয়েছেন। তবে সেই নির্বাচনেও ভোট পড়ে ৪৮ শতাংশের কিছু বেশি।
বরিশালে ইসলামী আন্দোলনের অবস্থান ভালো, তার পাশাপাশি বিএনপি-মনা প্রার্থীও ছিলেন সেখানে। তারপরও সেখানে ভোট পড়েছে ৫১ দশমিক ৪৬ শতাংশ। আর প্রায় নিরুত্তাপ খুলনায় ভোট পড়েছে সবচেয়ে কম ৪৮ শতাংশ।
অর্থাৎ তিন সিটিতে গড়ে ৫০ শতাংশও ভোট পড়েনি। এই অবস্থায় বাকি থাকা দুটি সিটিতে ভোটের হার নিয়ে আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের শঙ্কা অস্বাভাবিক নয়; যদিও কাউন্সিলর প্রার্থীরা নিজেদের স্বার্থে ভোটারদের কেন্দ্রে নিয়ে আসবেন বলে মনে করছেন কেউ কেউ।
রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আহসানুল হক পিন্টু বলেন, “ভোটারদের কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার জন্য যা যা করার, আমরা করব। আমাদের টার্গেট ৬০ থেকে ৭০ ভাগ ভোটারকে কেন্দ্রে উপস্থিত করা।
“ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থীরা ভোটারদের কেন্দ্রে নিয়ে যান। এবার তাদের সঙ্গে প্রতি ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরাও ভোটারদের কেন্দ্রে নিয়ে যেতে কাজ করবেন।”
তবে রাজশাহীতে জাতীয় পার্টির মেয়র পদপ্রার্থী সাইফুল ইসলাম স্বপন বলেন, “গাজীপুরের নির্বাচনের পর আমরা ধরে নিয়েছিলাম রাজশাহীতে ভোটার উপস্থিতি ৫০ শতাংশের বেশি হবে। কিন্তু বরিশাল ও খুলনার নির্বাচন এবং ইসলামী আন্দোলনের ভোট বর্জনের কারণে ভোটারদের কেন্দ্রে যাওয়ার আগ্রহ কমেছে। আমি আজ (মঙ্গলবার) অনেক ভোটারের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের মনোভাব তেমনটাই পেলাম।”
১৪ দলের অন্যতম শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির রাজশাহী মহানগরের সভাপতি লিয়াকত আলী লিকু বলেন, “সাম্প্রতিক সিটি নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করে অবশ্যই ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের উপস্থিতির বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে এটিকে শুধু ‘শঙ্কা’ হিসেবে নিলেও বাস্তবে এমনটাই হবে, এভাবে আমরা ভাবছি না। কারণ, এর বিরুদ্ধে আমরা সক্রিয়ভাবে মাঠে আছি।
“মানুষকে ভোটকেন্দ্রে আনতে বিভিন্ন উদ্যোগ নিচ্ছি, সাড়াও পাচ্ছি। সুতরাং, ভোটাররা যেন ভোট কেন্দ্রে আসে এবং কারও দ্বারা বিভ্রান্ত না হয়, সেটিকে অবশ্যই গুরুত্ব সহকারে বিবেচনায় নিচ্ছি।”
‘খুলনা-বরিশালের ডুপ্লিকেশন হবে সিলেট-রাজশাহী’
তুলনামূলকভাবে ভোটার উপস্থিতি কম হওয়ার পেছনে বিএনপির প্রার্থী না থাকা বা মেয়র পদে ভোটারদের অনাগ্রহই শুধু কাজ করেনি; ইভিএমের ধীর গতি, বৈরী আবহাওয়া এবং ক্ষমতাসীন দলের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বও কাজ করেছে বলে মনে করেন নির্বাচন বিশ্লেষক আব্দুল আলীম।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “তুলনামূলকভাবে গত তিন নির্বাচনের চেয়ে এবার বরিশাল-খুলনায় ভোটার উপস্থিতি কম হয়েছে, এটাই অনুমেয় ছিল। বড় একটি দল না থাকায় এবং ভালো প্রতিদ্বন্দ্বিতা না হওয়ায় পাশাপাশি অনেকের অনীহা ছিল ভোটে। বরিশালে প্রার্থীর ওপর হামলা ঘটনাও দুঃখজনক। সেখানকার অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব, বৃষ্টি ও ইভিএমে ধীর গতির বিষয়ও চোখে পড়েছে।
“খুলনায় তো অনেকটা প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীনভাবে ভোট হওয়ায় সেখানেও ভোটার কম ছিল। মানুষ বুঝে গিয়েছিল কে জিতবে।”
রাজশাহী-সিলেটের ভোট নিয়ে তিনি বলেন, “তবে সব মিলিয়ে ভালো নির্বাচন হয়েছে। কিন্তু প্রার্থীর উপর হামলার বিষয়টি খতিয়ে দেখে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। এ দুটো নির্বাচনেরই ডুপ্লিকেশন হবে সিলেট ও রাজশাহীতে। সেখানেও ভোটার উপস্থিতি কম হতে পারে। এখন দেখা যাক।”
তবে জাতীয় নির্বাচনের বিষয়টি ভিন্ন উল্লেখ করে নির্বাচন বিশ্লেষক আব্দুল আলীম আরও বলেন, “আমরা এখনও আশাবাদী, সংসদ নির্বাচনটি অংশগ্রহণমূলক হবে।”
ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম বলছেন, ভোট ‘সুন্দর’ হলেও ভোটার উপস্থিতি আরও ভালো হওয়ার প্রত্যাশায় ছিল ইসি।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “অফ সিজন ভোটার, শহরের বাইরের বাসিন্দা যারা সেখানকার ভোটার, তাদের একটা ঢাকা বা অন্য এলাকা থেকে যেতে পারেননি; দুপুর ২টার পর থেকে বরিশালে বৃষ্টিও হয়েছে। তাতে ভোটার উপস্থিতি কম হয়েছে। বৃষ্টি না থাকলে বরিশালে ভোটার উপস্থিতি আরও বাড়ত।”
বেশি প্রার্থী মানেই কি কেন্দ্রে বেশি ভোটার?
পাঁচটি সিটি করপোরেশনের মধ্যে সবচেয়ে বড় গাজীপুর আর সবচেয়ে বেশি প্রার্থী সিলেট সিটি করপোরেশনে। অনেকে মনে করছেন, এই প্রার্থীদের বেশিরভাগই কাউন্সিলর পদে লড়ছেন। তারা যদি ভোটারদের কেন্দ্রে নিয়ে আসতে পারেন, তাহলে হয়ত গাজীপুর, খুলনা বা বরিশালের চেয়ে বেশি ভোটগ্রহণ সিলেটে হতে পারে।
তথ্য বলছে, ২০০২ সালে সিলেট সিটি করপোরেশন প্রতিষ্ঠার পর এখন পর্যন্ত চারবার নির্বাচন হয়েছে। ২০০৮ সালের নির্বাচনে এখানে ভোট পড়েছিল ৭৫ শতাংশ। এরপর ২০১৩ সালে প্রায় ৬২ শতাংশ এবং সবশেষ ২০১৮ সালে পড়েছিল ৬৩ শতাংশের উপর।
গাজীপুরে মেয়র, সাধারণ কাউন্সিলর এবং সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে মোট প্রার্থী ছিল ৩৩২ জন, খুলনায় ১৮০ জন এবং বরিশালে ১৬৪ জন। রাজশাহীতে লড়ছেন ১৬২ জন। সেখানে সিলেটে প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন ৩৬৭ জন।
বেশি প্রার্থী বেশি ভোটার নিয়ে আসতে পারবে বলে মনে করেন সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন), সিলেট চ্যাপ্টারের সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সিলেটে মেয়র ও কাউন্সিলর পদে ৩৬৮ জনের মতো প্রার্থী রয়েছেন। একাধিক কাউন্সিলর প্রার্থী থাকার কারণে নির্বাচনের দিন ভোটারা কেন্দ্রে যাবেন ভোট দিতে। তাই বলা যেতে পারে, অন্য তিন সিটির চেয়ে সিলেটে ভোট বেশি পড়বে।”
সেই সঙ্গে তিনি বলেন, “তবে এবার সিটি নির্বাচনে বিএনপি না থানায় ভোট উৎসব দেখা যাচ্ছে না। মানুষজন ভোট নিয়ে এত আলোচনায় করছেন না।”
বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) সিলেট বিভাগীয় সমন্বয়ক শাহ শাহেদা আক্তার মনে করেন, বরিশাল সিটি নির্বাচনের পরিস্থিতি, সিইসির যে বক্তব্য এবং সিলেটে হাতপাখার প্রার্থীর নির্বাচন বয়কট ভোটার উপস্থিতির ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব রাখবে।
একই মত নাগরিক মৈত্রী সিলেটের সভাপতি অ্যাডভোটেক সমর বিজয় সী শেখরেরও। তিনি বলেন, “এবার বড় রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করেনি; তাই নগরে নির্বাচনী আমেজও তেমন একটা নেই। ফলে ভোট কাস্টটিং কম হওয়াটাই স্বাভাবিক।”
ভোঠের মাঠে থাকা নগরীর ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদপ্রার্থী আব্দুল করিম কিম বলেন, “আমি নির্বাচনী প্রচারে নামার পর থেকে ভোটারদের ভালো সাড়া পেয়েছি। আমার মনে হচ্ছে, অতীতের মতো এবারও নগরবাসী ভোট কেন্দ্রে যাবেন; ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।”
একই মত প্রকাশ করে সিলেটের অতিরিক্ত আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা তারেক আহমেদ বলেন, “আমার মনে হয় ভোটের কাস্টটিংটা ভালো হবে। সিলেটের নির্বাচনী পরিবেশ ভালো রয়েছে।”
তবে এই প্রার্থীর মতো মনে করেন না নগরীর ধোপাদিঘীরপাড়ের বাসিন্দা হুমায়ুন কবির চৌধুরী। তিনি বলেন, “এবারের ভোটে মেয়র প্রার্থী নিয়ে কেনো উত্তাপ নেই। তবে ওর্য়াডগুলো একাধিক কাউন্সিলর প্রার্থী থাকায় নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। যেহেতু এবার বড় রাজনৈতিক দল আসেনি; তাই গত নির্বাচনগুলোর মত ভোট পড়ার সম্ভবনা নেই।”
একই মত প্রকাশ করেন নগরীর দাড়িয়াপাড়ার বাসিন্দা সঞ্জয় বণিক।
সিলেট নগরীতে মোট ভোটার ৪ লাখ ৮৬ হাজার ৬০৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৫৩ হাজার ৭৬৩ জন এবং নারী ২ লাখ ৩২ হাজার ৮৪২ জন। মোট ভোটকেন্দ্র ১৯০টি এবং ভোটকক্ষ ১ হাজার ৩৬৪টি।
সিটিতে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আটজন। নগরীর ৪২টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ২৭৩ জন। ১৪টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে নারী কাউন্সিলর পদে ৮৭ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
‘হাতপাখার কেউ আর কেন্দ্রে যাবে না’
নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেওয়ার পর মঙ্গলবার রাজশাহী ও সিলেট মহানগরীতে হাতপাখার প্রার্থীদের কোনো প্রচার দেখা যায়নি। তাদের নির্বাচনী কার্যালয়ও প্রায় ফাঁকা দেখা গেছে। নেতাকর্মীদের আনাগোনাও কম। অথচ রাজশাহীতে জাতীয় পার্টির প্রার্থীর চেয়ে ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থীর তৎপরতা এতদিন ছিল বেশি।
গোটা নগরীই হাতপাখার পোস্টারে ছেয়ে আছে। কিন্তু আগের মতো দলের কর্মীদের প্রচার নেই। তারা ভোট থেকে সরে দাঁড়ালেও নিয়ম অনুযায়ী এখন আর প্রার্থিতা প্রত্যাহারের কোনো সুযোগ নেই। ফলে ভোটের দিন ইভিএমে হাতপাখা প্রতীক ও প্রার্থীর নাম থেকে যাচ্ছে।
রাজশাহীতে ইসলামী আন্দোলনের মেয়র প্রার্থী মুরশিদ আলম বলেন, “ইভিএমে আমাদের প্রতীক থাকলেও হাতপাখার কোনো কর্মী-সমর্থক ভোটকেন্দ্রে যাবে না। আমরা কর্মীদের মানা করে দিয়েছি। আমাদের এই ভোট নিয়ে আরও কোনো আগ্রহ নেই।”
সিলেটের প্রার্থী হাফিজ মাওলানা মাহমুদুল হাসানও বলেন, “আমরা দলের নির্দেশে ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে। আমাদের কোনো প্রচারও নেই। আমাদের কেউ ভোটকেন্দ্রে যাবেও না।”