”এরপর থেকে টঙ্গী মাঠে সাদপন্থিদের আর ইজতেমা করার অধিকার নেই,” সংবাদ সম্মেলনে দাবি জুবায়েরপন্থিদের।
Published : 09 Feb 2025, 08:14 PM
টঙ্গীর তুরাগ তীরে বিশ্ব ইজতেমা মাঠ দখলকে কেন্দ্র করে গত ডিসেম্বরে হামলায় হতাহতের ঘটনার পেছনে বিদেশি ষড়যন্ত্র থাকা দাবি করেছে তাবলীগের জুবায়েরপন্থি হিসেরব পরিচিত ওলামা-মাশায়েখ বাংলাদেশ।
রোববার রাজধানীতে জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে সংগঠনের নেতা মাওলানা শাহরিয়ার মাহমুদ বলেন, “দেশের শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষার্থে আমরা মনে করি এদেশের শান্তি শৃঙ্খলা বিনষ্ট করার জন্য এই স্বাধীন দেশটাকে অস্থির করার জন্য বিদেশি ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে তারা এগুলো করে যাচ্ছে।“
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মুফতি আমানুল হক বলেন, “সাদ অনুসারীগণ বারবার সন্ত্রাসী হামলা, সাদ সাহেব কর্তৃক নবীগণের সমালোচনা, কোরআন-হাদিসের অপব্যাখ্যা, নিজেকে আমির ঘোষণা, তাবলীগ নীতিমালাগুলোকে ধ্বংস করার কারণে ৯০ শতাংশ মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এই দেশে যেখানে অন্ধ সাদ অনুসারীদের নিষিদ্ধ করার আন্দোলন চলছে, সেখানে দেশে শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষার্থে কাকরাইল মসজিদে ও টঙ্গী এজতেমায় সাংঘর্ষিক অবস্থা ঠেকাতে সাদপন্থিদের অনুমতি না দিয়ে অন্য কোনো জায়গায় তাদের কার্যক্রম চালানোর সুযোগ দেওয়াকে বৈষম্যমূলক পদক্ষেপ বলে বর্ণনা করা হাস্যকর।”
তিনি গত ডিসেম্বরে টঙ্গীতে ইজতেমা মাঠে সংঘর্ষের ঘটনাকে একতরফাভাবে ‘সন্ত্রাসী’ সাদপন্থিদের হামলা হিসেবে অভিযোগ করে বলেন, এরপর থেকে টঙ্গী মাঠে সাদপন্থিদের আর ইজতেমা করার অধিকার নেই।
আমানুল হক বলেন, এবছর সময় স্বল্পতার কারণে এবং বিদেশি মেহমানদের সন্মানে শুধু এবছর ইজতেমা করার জন্য তাদের সরকার অনুমতি দেয়।
সরকারের এ বিষয়ক আদেশের ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, এবছরের ১৪ থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারি ইজতেমা করার পর আর সাদপন্থিরা টঙ্গি মাঠে ইজতেমা করতে পারবে না বলে শর্ত দেওয়া হয়েছে।
“কিন্তু সাদপন্থি ওয়াসিফুল ইসলামের ’বিতর্কিত’ ছেলে ওসামা ইসলাম সরকারি পরিপত্রের মূল গুরুত্বপূর্ণ অংশকে বাদ দিয়ে স্বীয় স্বার্থে, তার ফেইসবুকে প্রচার শুরু করে দিয়েছে, যা সরকারি সিদ্ধান্তকে অবজ্ঞা করার শামিল।“
ওসামা ইসলাম শর্তের অংশটুকু বাদ দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার চালাচ্ছে দাবি করে আমানুল বলেন, “আগামী তিন দিনের মধ্যে ভুল স্বীকার করে তা প্রত্যাহারের জন্য আলটিমেটাম দিচ্ছি। এছাড়া ডিসেম্বর মাসের সরকারি প্রজ্ঞাপনে ভুলক্রমে যে সহবস্থান শব্দটি ব্যবহার করে সব জেলায় ফেৎনা-ফ্যাসাদের ক্ষেত্র সৃষ্টি হয়েছে তা সংশোধন করে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের কাছে বিশেষ অনুরোধ জানাচ্ছি।”
ওয়াসিফুলসহ সাদ অনুসারীদের ‘সত্যের দিকে এবং ইসলামের শান্তির পথে ফিরে’ আসার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এখন অনেকেই ভুল বুঝে ফিরে আসছেন।
“নিজের ঈমান বাঁচান। তবলীগের মেহনতটিকে বাঁচান। দেশকে বাঁচান, দেশের জনগণকে শান্তিতে থাকতে দিন।”
তা না হলে ভবিষ্যতে আরও কঠিন পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য সাদপন্থিরা দায়ী থাকবেন বলে হুশিয়ারি দেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে দাবি করা হয়, সাদপন্থিদের টঙ্গীর পবিত্র ময়দানে ইজতেমার নামে ভন্ডামি করার সুযোগ দেওয়া যাবে না।
একই সঙ্গে টঙ্গীর হত্যাকাণ্ডে জড়িত আসামিদের আগাম জামিন দেওয়ায় নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে তাদের জামিন বাতিল এবং হত্যায় জড়িত পলাতকদের গ্রেপ্তারের দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে মাওলানা ফজলুল করিম কাশেমী বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।