উপদেষ্টা বলেন, অন্তত ২০ শতাংশ অর্থায়ন ইউএনএফসিসিসির (গ্রিন ক্লাইমেট ফান্ড, অ্যাডাপটেশন ফান্ড) মতো প্রতিষ্ঠিত তহবিলের মাধ্যমে হওয়া উচিত।
Published : 20 Nov 2024, 09:31 PM
নিউ কালেক্টিভ কোয়ান্টিফায়েড গোলের (এনসিকিউজি) আওতায় পর্যাপ্ত ও মানসম্পন্ন জলবায়ু অর্থায়নের ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
তিনি অভিযোজন, প্রশমন এবং ক্ষয় ও ক্ষতিপূরণের জন্য ১ দশমিক ৩ ট্রিলিয়ন ডলারের প্রতিশ্রুতির প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে অভিযোজন ও ক্ষয়-ক্ষতিপূরণের জন্য অনুদানভিত্তিক অর্থায়ন এবং প্রশমনের জন্য স্বল্প সুদে ঋণের প্রস্তাব দিয়েছেন।
বুধবার আজারবাইজানের বাকুতে কপ২৯-এ বাংলাদেশের সংবাদ সম্মেলনে এ প্রস্তাব তুলে ধরেন বলে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, “এনসিকিউজির আওতায় সরকারি অর্থায়নই প্রধান উৎস হওয়া উচিত, বেসরকারি খাত সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে। অন্তত ২০ শতাংশ অর্থায়ন ইউএনএফসিসিসির (গ্রিন ক্লাইমেট ফান্ড, অ্যাডাপটেশন ফান্ড) মতো প্রতিষ্ঠিত তহবিলের মাধ্যমে হওয়া উচিত।”
জলবায়ু অর্থায়নের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে স্ট্যান্ডিং কমিটি অন ফাইন্যান্সের মাধ্যমে এর সংজ্ঞা নির্ধারণের প্রয়োজনীয়তার কথাও তিনি উল্লেখ করেন।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান ২০২৩ সালের অ্যাডাপটেশন ফান্ড গ্যাপ রিপোর্টের তথ্য তুলে ধরে বলেন, “বাংলাদেশে প্রতিবছর ৮ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার অভিযোজন প্রয়োজন, যেখানে দেশীয় উৎস থেকে মাত্র ৩ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ হচ্ছে। ফলে ৫ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলারের বিশাল ঘাটতি রয়েছে, যা বহিঃশ্রোতের অনুদানভিত্তিক অর্থায়নের মাধ্যমে পূরণ করতে হবে।
“ক্ষয়-ক্ষতিপূরণ তহবিল এবং এনসিকিউজির অগ্রগতিতে ধীরগতি এবং প্রধান দূষণকারী দেশগুলোর উদ্যোগের অভাবে জলবায়ু অর্থায়ন কার্যক্রম পিছিয়ে রয়েছে। বর্তমান পরিকল্পনাগুলো বৈশ্বিক উষ্ণতা ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমাবদ্ধ রাখতে যথেষ্ট নয়। এই দশকই আমাদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে।”
ওয়ারশ আন্তর্জাতিক প্রক্রিয়ার পর্যালোচনার স্থবিরতা এবং প্রশমন কর্মসূচির অগ্রগতি না হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান উন্নত দেশগুলোকে ‘তাদের প্রতিশ্রুতি’ পূরণে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
গ্লোবাল স্টকটেকের (জিএসটি) ফলাফলের ভিত্তিতে নবায়নযোগ্য জ্বালানি সক্ষমতা তিনগুণ এবং জ্বালানি দক্ষতা দ্বিগুণ করার মাধ্যমে ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই জ্বালানির দিকে অগ্রসর হওয়ার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে তিনি বলেন, “বাংলাদেশ উচ্চাভিলাষী লক্ষ্য অর্জন করতে প্রস্তুত, যদি প্রয়োজনীয় অর্থ ও প্রযুক্তিগত সহায়তা পাওয়া যায়।”
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব ফারজানা মমতাজ, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. আবদুল হামিদ, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এম রিয়াজ হামিদুল্লাহ এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব এ কে এম সোহেল।