সন্দ্বীপের লোকজন ‘সিএস ও আরএস জরিপের’ ভিত্তিতে আর হাতিয়ার লোকজন ‘দিয়ারা জরিপের’ ভিত্তিতে ভাসানচরকে নিজেদের সীমানার মধ্যে দাবি করছেন।
Published : 10 Apr 2025, 10:19 PM
বঙ্গোপসাগরে জেগে ওঠা ভাসানচর দ্বীপ চট্টগ্রাম না নোয়াখালীর অধীনে যাবে, সে বিষয়ে উভয়পক্ষের যুক্তি ও দাবিদাওয়া শুনেছে এ সংক্রান্ত বিরোধ নিষ্পত্তিতে গঠিত কমিটি।
দ্বিতীয়বারের মত বৃহস্পতিবার উভয়পক্ষের সঙ্গে বসে তাদের কথা শুনে কমিটির প্রধান চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মো. নুরুল্লাহ নুরী বলেন, আগামী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যেই বিরোধের ফয়সালা হতে পারে।
চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত এ সভায় চট্টগ্রামের সন্দ্বীপের পক্ষে কথা বলেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সালেহ নোমান। আর নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার পক্ষে এনসিপি নেতা আবদুল হান্নান মাসউদসহ অন্যরা যুক্তি তুলে ধরেন।
এ নিয়ে আর কোনো সভা হবে না জানিয়ে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে নুরুল্লাহ নুরী বলেন, তারা বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য দুটি সভা করেছেন। দুই উপজেলার প্রতিনিধি তাদের বক্তব্য তুলে ধরেছেন। সেই বক্তব্যের ওপর ভিত্তি করে দুই জেলার ডিসির কাছ থেকে প্রতিবেদন চাওয়া হয়েছে।
“সন্দ্বীপের পক্ষের লোকজন সিএস ও আরএস জরিপের ভিত্তিতে ভাসানচর সন্দ্বীপের জলসীমার মধ্যে পড়েছে বলে দাবি করেন। অপরদিকে হাতিয়া উপজেলার প্রতিনিধিরা দিয়ারা জরিপের তথ্য দিয়ে তাদের অর্ন্তভুক্ত বলে দাবি করেন।”
তিনি বলেন, “আর কোনো সভা হবে না। জেলা প্রশাসকদ্বয়ের পাঠানো প্রতিবেদন ও অন্যান্য জরিপের তথ্য পর্যালোচনা করে আগামী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে আমাদের প্রতিবেদন দাখিল করব। এ প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ভাসানচর কাদের হবে, সে সিদ্ধান্ত হতে পারে।”
২০১৬-১৭ সালের দিয়ারা জরিপ অনুসারে চট্টগ্রামের সন্দ্বীপের অদূরে বঙ্গোপসাগরে জেগে ওঠা চর ‘ভাসানচরকে’ নোয়াখালী জেলার ভাসানচরের অধিভুক্ত করা হয়। ওই চরে এখন মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের রাখা হয়েছে।
জেগে ওঠা ওই চরকে সন্দ্বীপের বলে দাবি করেন সেখানকার লোকজন। তারা আরএস ও সিএস জরিপের ভিত্তিতে ভাসানচরের বেশিরভাগ অংশ অতীতে দ্বীপটির ভেঙ্গে যাওয়া অংশ বলে দাবি করেন। এ নিয়ে উচ্চ আদালতে একটি রিট আবেদনও করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর দুই পক্ষের বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারকে দায়িত্ব দেয়।
এরপর চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মো. নুরুল্লাহ নুরীকে প্রধান করে ১৯ সদস্যের একটি কমিটি করা হয়।
আন্তঃজেলা সীমানা বিরোধ নিষ্পত্তির এই কমিটিতে নোয়াখালী ও চট্টগ্রাম জেলার সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্তাব্যক্তি ছাড়াও উভয় উপজেলার তিনজন করে প্রতিনিধি রাখা হয়।