আলোচিত এ মামলার ৩৩ আসামির মধ্যে আটজন পলাতক।
Published : 17 Aug 2023, 04:37 PM
মতিঝিলের আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপু ও কলেজ ছাত্রী সামিয়া আফনান প্রীতি হত্যা মামলায় পলাতক আট আসামিকে আদালতে হাজির হওয়ার জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের আদেশ দিয়েছে আদালত।
ঢাকার মহানগর হাকিম রাজেশ চৌধুরী বৃহস্পতিবার এই আদেশ দিয়ে আগামী ৮ অক্টোবর মামলার পরবর্তী তারিখ রেখেছেন।
আদালতের শাহজাহানপুর থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা উপপরিদর্শক শাহ আলম বলেন, আসামিদের গ্রেপ্তার সংক্রান্ত তামিল প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য ছিল বৃহস্পতিবার। সেই প্রতিবেদন দাখিল করে তাদের গ্রেপ্তার করতে না পারার কথা জানানো হলে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেন বিচারক।
পলাতক আটজন হলেন- ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত সাংগঠনিক সম্পাদক আশরাফ তালুকদার,সন্ত্রাসী জিসান আহম্মেদ মন্টু, ফ্রিডম মানিক ওরফে জাফর, রিফাত হোসেন, সোহেল রানা, ওয়ার্ড যুবলীগের সাবেক নেতা আমিনুল, সামসুল হায়দার উচ্ছল ও ১১ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সভাপতি কামরুজ্জামান বাবুল।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক ইয়াসিন শিকদার চলতি বছর ৫ জুন আলোচিত এ মামলার অভিযোগপত্র দেন। স্থানীয় আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতাসহ ৩৩ জনকে সেখানে আসামি করা হয়।
২০ জুন আদালত ওই অভিযোগপত্র গ্রহণ করে পলাতক নয়জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। তাদের মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মারুফ আহমেদ মনসুর বুধবার আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইল বিচারক তা নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এ মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত বাকি আসামিরা হলেন- সুমন সিকদার মুসা, শুটার মাসুম মোহাম্মদ আকাশ, শামীম হোসাইন, তৌফিক হাসান ওরফে বিডি বাবু, ১০ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি মারুফ রেজা সাগর, ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক আরিফুর রহমান ওরফে ‘ঘাতক’ সোহেল, মতিঝিল থানা জাতীয় পার্টির নেতা জুবের আলম খান রবিন, হাফিজুল ইসলাম হাফিজ, হাবীবুল্লাহ বাহার কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক সোহেল শাহরিয়ার, মাহবুবুর রহমান টিটু, নাসির উদ্দিন মানিক, মশিউর রহমান ইকরাম, ইয়াসির আরাফাত সৈকত, আবুল হোসেন মোহাম্মদ আরফান উল্লাহ ইমাম খান, সেকান্দার শিকদার আকাশ, মতিঝিল থানা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক খাইরুল ইসলাম মাতবর, আবু সালেহ শিকদার, কিলার নাসির, ওমর ফারুক, মোহাম্মদ মারুফ খান, ইশতিয়াক আহম্মেদ জিতু, ইমরান হোসেন জিতু, রাকিবুর রহমান রাকিব, মোরশেদুল আলম পলাশ। এদের মধ্যে মুসা, শুটার আকাশ ও নাসির উদ্দিন মানিক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
জাহিদুল ইসলাম টিপু (৫৪) ছিলেন ঢাকার মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য ছিলেন তিনি।
মতিঝিল এজিবি কলোনির গ্র্যান্ড সুলতান রেস্তোরাঁর মালিক টিপু ঠিকাদারির কাজও করতেন। দুই মেয়ে, এক ছেলের জনক টিপু থাকতেন শাহজাহানপুরে।
২০২২ সালের ২৪ মার্চ রাতে খিলগাঁও রেলগেইটের কাছে আক্রান্ত হয় টিপুর গাড়ি। মোটর সাইকেলে আসা এক ব্যক্তি যানজটে আটকে পড়া টিপুর গাড়ির কাছে এসে তাকে গুলি করে।
সে সময় গাড়ির পাশে রিকশার আরোহী কলেজছাত্রী প্রীতিও গুলিবিদ্ধ হন। হাসপাতালে নিলে দুজনকেই মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।
চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডের পর ওইদিন রাতেই টিপুর স্ত্রী স্থানীয় নারী ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফারহানা ইসলাম ডলি অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে মামলা করেন।
আরও পড়ুন-
টিপু-প্রীতি হত্যা মামলা: কাউন্সিলর মনসুর কারাগারে
টিপু-প্রীতি হত্যামামলার অভিযোগপত্র আদালতে
টিপু-প্রীতি হত্যামামলা: ৯ জনকে গ্রেপ্তারে পরোয়ানা
টিপু হত্যার অভিযোগপত্রে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ নেতাসহ ৩৩ জন আসামি