২০১৭ সালের ২৪ ডিসেম্বর রাষ্ট্রপক্ষ এই রিভিউ আবেদন দায়ের করে।
Published : 16 Aug 2024, 12:34 AM
বিচারপতিদের অপসারণে সংসদকে ক্ষমতা দেওয়া সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ করে আপিল বিভাগের দেওয়া রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) শুনানি হবে সুপ্রিম কোর্টের অবকাশকালীন ছুটির পর।
ষোড়শ সংশোধনীকে চ্যালেঞ্জ করা রিটকারীর পক্ষে শুনানির আবেদনের পর বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদসহ আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।
পুনর্বিবেচনার আবেদনকারী রাষ্ট্রের পক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। রিট আবেদনকারীর পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।
পরে আইনজীবী মনজিল মোরসেদ সাংবাদিকদের বলেন, “ষোড়শ সংশোধনী মামলায় আমাদের পক্ষে রায় হয়েছিল। অর্থাৎ সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল বহাল রেখেছিল। এটার বিরুদ্ধে সরকার রিভিউ দয়ের করেছিল, শুনানিতে আসছিল, দীর্ঘদিন শুনানি হয় নাই। এখন নতুন প্রেক্ষাপটে যেহেতু মাননীয় প্রধান বিচারপতি নবনিযুক্ত হয়েছেন, অন্যান্য বিচারকরা নিযুক্ত হয়েছেন, সেজন্য আমি মেনশন করেছিলাম; সেটা লিস্টের টপে আছে।
“অ্যাটর্নি জেনারেল বললেন যে ওনাদের একটা ইন্সট্রাকশন দরকার আছে, কারণ উনিও তো নতুন। এ জন্য কোর্ট বললেন যে শুনব, তবে ওয়ান উইক আফটার ভ্যাকেশন।”
আগামী ৮ সেপ্টেম্বর থেকে ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টের অবকাশকালীন ছুটি থাকবে।
১৯৭২ সালে প্রণীত মূল সংবিধানে উচ্চ আদালতের বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা জাতীয় সংসদের কাছে ছিল। ১৯৭৫ সালের ২৪ জানুয়ারি সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে এ ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির হাতে অর্পণ করা হয়। পরে জিয়াউর রহমানের শাসনামলে সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতা দেওয়া হয় সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিলের কাছে।
২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর ষোড়শ সংশোধনীতে সেটা বাতিল করে বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়া হয় সংসদকে। বিলটি পাসের পর একই বছরের ২২ সেপ্টেম্বর তা গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়।
সংবিধানের এ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ওই বছরের ৫ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের ৯ জন আইনজীবী হাই কোর্টে রিট আবেদন করেন। এ রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে একই বছরের ৯ নভেম্বর এ সংশোধনী কেন অবৈধ, বাতিল ও সংবিধান পরিপন্থি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করে হাই কোর্ট।
শুনানি শেষে ২০১৬ সালের ৫ মে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করে রায় দেন বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী, বিচারপতি কাজী রেজাউল হক ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের হাই কোর্টের বিশেষ বেঞ্চ।
ওই রায়ের মাধ্যমে জিয়াউর রহমানের সামরিক শাসনামলে প্রতিষ্ঠিত সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল ফিরিয়ে আনে সুপ্রিম কোর্ট। সেই সঙ্গে বিচারকদের জন্য একটি আচরণবিধিও ঠিক করে দেওয়া হয়।
রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি পাওয়ার পর ২০১৭ সালের ৪ জানুয়ারি এ বিষয়ে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ।
ওই আপিলের শুনানি শেষে ২০১৭ সালের ৩ জুলাই হাই কোর্টের রায় বহাল রেখে সর্বসম্মতিক্রমে চূড়ান্ত রায়টি দেন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ।
একই বছরের ১ অগাস্ট ৭৯৯ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায়টি প্রকাশিত হয়। ২০১৭ সালের ২৪ ডিসেম্বর আপিল বিভাগে রাষ্ট্রপক্ষ ৯০৮ পৃষ্ঠার রিভিউ আবেদন করে।
সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর রিভিউ শুনানি ১১ জুলাই
ষোড়শ সংশোধনী: রিভিউ শুনানি ১৮ জানুয়ারি
ষোড়শ সংশোধনী বাতিল: রিভিউ শুনানি ১৬ নভেম্বর
ষোড়শ সংশোধনীর রিভিউ শুনানি শিগগিরই: আইনমন্ত্রী
ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়ে ফিরল সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল
ষোড়শ সংশোধনী: রিভিউ করতে রায়ের অনুলিপি নিল রাষ্ট্রপক্ষ
ষোড়শ সংশোধনী: রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন সরকারের
ষোড়শ সংশোধনী: রিভিউ শুনানি নিয়ে আনিসুল, মাহবুবের দুই কথা
মহামারী কাটলেই ষোড়শ সংশোধনীর রিভিউ শুনানি: আইনমন্ত্রী
ষোড়শ সংশোধনী: রায় নিয়ে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার সিদ্ধান্ত সংসদের