ইউনূস বলেন, “এই অভ্যুত্থান নতুন বাংলাদেশ গঠনের পথ সুগম করেছে।"
Published : 28 Mar 2025, 12:19 PM
শান্তি, সমৃদ্ধি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় চীনকে আরও জোরালো ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
শুক্রবার সকালে বেইজিংয়ের গ্রেট হল অফ দ্য পিপলে চীনা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠকে এই আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।
বাসস লিখেছে, বৈঠকে ইউনূস ও শি নিজ নিজ পক্ষের নেতৃত্ব দিয়েছেন; আলোচনায় এসেছে জুলাই-অগাস্টের গণঅভ্যুত্থানের প্রসঙ্গ।
বৈঠকে উভয় নেতা দ্বিপাক্ষিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন। ইউনূস তার বক্তব্যের শুরুতে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে প্রেসিডেন্ট শিকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
গণঅভ্যুত্থানের কথা তুলে ইউনূস বলেন, “এই অভ্যুত্থান ‘নতুন বাংলাদেশ’ গঠনের পথ সুগম করেছে।"
চীনের সঙ্গে তার দীর্ঘ সম্পর্কের কথা স্মরণ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন তিনি সেখানে গ্রামীণ ব্যাংক ও সামাজিক ব্যবসার প্রচলনের সাথে যুক্ত ছিলেন।
বৈঠকের রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আলোচনা করেছেন ইউনূস। তিনি মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও সম্মানজনক প্রত্যাবর্তনে চীনকে 'শক্তিশালী ভূমিকা' রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।
শির সঙ্গে ইউনূসের মধ্যে একটি অত্যন্ত সফল দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হয়েছে বলে ফেইসবুক পোস্টেও জানিয়েছেন প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
পোস্টে শফিকুল আলম বলেছেন, বৈঠকে বিস্তৃত পরিসরে আলোচনা হয়েছে। ফলপ্রসূ ও গঠনমূলক আলোচনা হয়েছে।
প্রেস সচিব লিখেছেন, শি বলেছেন বাংলাদেশে চীনা বিনিয়োগ উৎসাহিত করবে তার দেশ।
“চীনা উৎপাদন প্রতিষ্ঠানগুলোকে বাংলাদেশে স্থানান্তর করবে। বাংলাদেশের উত্থাপিত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় চীন ইতিবাচকভাবে বিবেচনা করবে। এর মধ্যে রয়েছে চীনা ঋণের সুদের হার হ্রাস ও পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনায় সহযোগিতার বিষয় রয়েছে।”
চার দিনের সফরে বুধবার চীনে পৌঁছান মুহাম্মদ ইউনূস। অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাড়ানোর মাধ্যমে ঢাকা-বেইজিং বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে ইউনূসের এই প্রথম দ্বিপক্ষীয় সফর।
শি-এর সঙ্গে বৈঠকের পর মুহাম্মদ ইউনূস প্রেসিডেন্সিয়াল বেইজিংয়ে চীনা ব্যবসায়ী নেতাদের সাথে একটি ‘ইনভেস্টমেন্ট ডায়ালগে’ অংশ নেন।
চীনা বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে ব্যবসা-বান্ধব পরিবেশ সম্পর্কে অবহিত এবং বাংলাদেশে চীনা বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হচ্ছে।
প্রধান উপদেষ্টা একই স্থানে টেকসই অবকাঠামো ও জ্বালানি বিনিয়োগ, বাংলাদেশ ২.০ উৎপাদন ও বাজার সুযোগ এবং সামাজিক ব্যবসা, যুব উদ্যোক্তা এবং তিন শূন্যের বিশ্ব- এই তিনটি বিষয়ের উপর তিনটি গোলটেবিল আলোচনায়ও যোগ দেবেন।
বৈঠকে তিনি বিভিন্ন কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, সামাজিক ব্যবসা সার্কেলের অভিজ্ঞ ব্যক্তিবর্গ, বিখ্যাত চীনা কোম্পানির উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এবং ব্যবসায়িক প্রতিনিধিদের সাথে মতবিনিময় করবেন।
এদিন চীনের একটি হাইটেক পার্কে যাওয়ার কথা রয়েছে প্রধান উপদেষ্টার। সেখানে ইলেক্ট্রিক ভেহিকল, সোলার প্লান্ট ও চিপস কারখানা পরিদর্শন করবেন।
প্রধান উপদেষ্টা চীনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের সম্মানে আয়োজিত এক নৈশভোজে যোগ দেবেন।
পররাষ্ট্র বিষয়ক মো. তৌহিদ হোসেন; বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ, সড়ক পরিবহন ও সেতু; এবং রেলওয়ে উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, প্রধান উপদেষ্টার হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ খলিলুর রহমান, এসডিজি বিষয়ক প্রধান সমন্বয়কারী এবং সিনিয়র সচিব লামিয়া মোরশেদ এবং প্রেস সচিব শফিকুল আলম এই সফরে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গী হয়েছেন।
আরও পড়ুন
চীনা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক অত্যন্ত সফল: প্রেস সচিব