ঢাকার ৬ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মাসুদ পারভেজ এ রায় দেন।
Published : 30 Jan 2025, 08:54 PM
অর্থ পাচারের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের করা আরেকটি মামলায় গেন্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত নেতা এনামুল হক এনু ও তার ভাই রুপন ভূঁইয়াকে সাত বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
বৃহস্পতিবার ঢাকার ৬ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মাসুদ পারভেজ এ রায় দেন।
রায়ে দুজনকে ৩৪ লাখ ২৬ হাজার ৬০০ টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে তিন মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া এ ঘটনায় উদ্ধারকৃত ১৭ লাখ ১৬ হাজার ৩০০ টাকা রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করার আদেশ দিয়েছে আদালত।
এই আদালতের বেঞ্চ সহকারী জাহিদুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সূত্রাপুর থানার এ মামলায় দশজনের বিচার শুরু হয়েছিল, কিন্তু পাভেল রহমান নামের এক আসামি মারা গেছেন। বাকীদের সাজা ও জরিমানার রায় হয়েছে।
ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের মধ্যে বাসায় সিন্দুকভর্তি কোটি কোটি টাকা পাওয়ার ঘটনায় এ নিয়ে তৃতীয় মামলায় সাজার রায় এল আলোচিত দুই ভাই এনু ও রুপনের বিরুদ্ধে।
এ মামলার বাকী সাত আসামি এনু-রুপনের ভাই শহিদুল হক ভূঁইয়া, রশিদুল হক ভূঁইয়া ও মিরাজুল হক ভূঁইয়া শিপলু এবং তাদের সহযোগী তুহিন মুন্সি, নবীর হোসেন সিকদার, সাইফুল ইসলাম ও জয় গোপাল সরকারকে চার বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে তাদের ১৭ লাখ ১৬ হাজার ৩০০ টাকা জরিমানা অনাদায়ে তিন মাস কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
ঢাকার ক্রীড়াক্লাব গুলোতে ক্যাসিনো বন্ধে অভিযানের মধ্যে ২০১৯ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর গেণ্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের তৎকালীন নেতা এনু ও রুপন ভাই, তাদের এক কর্মচারী এবং তাদের এক বন্ধুর বাসায় অভিযান চালায় র্যাব।
সেই অভিযানে সিন্দুক ভর্তি কয়েক কোটি টাকা, আট কেজি সোনা এবং ছয়টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়, যেগুলো জুয়ার টাকায় গড়া সম্পদ বলে ওই সময় র্যাব জানিয়েছিল।
এর মধ্যে এনুর কর্মচারী আবুল কালাম আজাদের বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয় দুই কোটি টাকা। ওই ঘটনায় ওয়ারী থানায় র্যাবের করা মামলায় ২০২২ সালের ২৫ এপ্রিল এনু-রুপনসহ ১১ জনকে সাত বছর করে কারাদণ্ড দেয় আদালত।
অভিযানের মধ্যে এনু ও রুপনের নাগাল পাওয়া না গেলেও ২০২০ সালের ১৩ জানুয়ারি কেরানীগঞ্জ থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
ওই বছর ৩১ অগাস্ট বংশাল থানায় মানি লন্ডানিং প্রতিরোধ আইনে আরেকটি মামলা করেন সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম স্কোয়াডের পরিদর্শক মো. মেহেদী মাকসুদ, যার রায় দেওয়া হয় ২০২৩ সালের ২৮ নভেম্বর।
সে বছর ২৬ সেপ্টেম্বর র্যাব-৩ এর পুলিশ পরিদর্শক মো. আবুল বাশার সূত্রাপুর থানায় মানি লন্ডারিং (অর্থ পাচার) আইনে রুপনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। একই সঙ্গে স্বর্ণালংকার উদ্ধারের ঘটনায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে আরেকটি মামলা করেন।
অর্থ পাচারের মামলাটি তদন্ত করেন সিআইডির ইকোনমিক ক্রাইম স্কোয়াড অর্গানাইজড ইউনিটের পুলিশ পরিদর্শক মেহেদী মাকসুদ। অভিযোগপত্রে এনু-রুপনসহ ১০ জনকে আসামি করা হয়।
আসামিদের মধ্যে সাইফুল ইসলাম, তুহিন মুন্সী ও নবীর হোসেন শিকদার ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।
বিচার চলাকালে তদন্ত কর্মকর্তাসহ ১১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়।
ঢাকা ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের শেয়ারহোল্ডার গেন্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি এনু ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রুপনকে গ্রেপ্তারের পর দল থেকে তাদের বহিষ্কার করা হয়।