ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আসিফ আছেন লুকিয়ে, ধারণা আনিছুরের

“একটা লোক যদি লুকিয়ে থাকে ইচ্ছাকৃতভাবে, তাহলে তো তাকে খুঁজে বের করা কঠিন।”

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 Jan 2023, 11:43 AM
Updated : 31 Jan 2023, 11:43 AM

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে উপ-নির্বাচনের প্রার্থী আবু আসিফ আহমেদকে উদ্ধারের নির্দেশ দিলেও নির্বাচন কমিশনার আনিছুর রহমানের ধারণা, এই ব্যক্তি নিজেই নিজেকে লুকিয়ে রেখেছেন।

ওই আসনে ভোটের আগের দিন মঙ্গলবার ঢাকার আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “একটা লোক যদি লুকিয়ে থাকে ইচ্ছাকৃতভাবে, তাহলে তো তাকে খুঁজে বের করা কঠিন।”

সংসদ থেকে বিএনপির পদত্যাগে শূন্য অন্য পাঁচটির মতো ব্রাহ্মণবাড়িয়ার-২ আসনেও উপ-নির্বাচনে ভোটগ্রহণ হবে।

বিএনপির পদত্যাগী এমপি উকিল আব্দুস সাত্তার দল ছেড়ে এই আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কোনো প্রার্থী না থাকার মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী হন আসিফ। তিনি আশুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি ছিলেন, উপজেলা পরিষদেরও সাবেক চেয়ারম্যান তিনি। ভোটে দাঁড়ানোয় তাকেও দল থেকে বহিষ্কার করে বিএনপি।

উকিল সাত্তারের জন্য প্রকাশ্যে মাঠে নেমেছেন আওয়ামী লীগের সরাইল ও আশুগঞ্জের নেতারা, কেন্দ্রীয় নেতারাও তাদের সমর্থন দিচ্ছেন। সাত্তারের বিপরীতে মোটর গাড়ি প্রতীকের প্রার্থী আসিফকেই শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করা হচ্ছে।

Also Read: ব্রাহ্মণবাড়িয়া উপ-নির্বাচনের প্রার্থী 'নিখোঁজ'

Also Read: সরকার উকিল আব্দুস সাত্তারকে চাপ দিয়ে নির্বাচনে এনেছে: রুমিন ফারহানা

Also Read: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এবার আসিফের স্ত্রীকে নজরবন্দির অভিযোগ

Also Read: ব্রাহ্মণবাড়িয়া উপ-নির্বাচনের ‘নিখোঁজ’ প্রার্থীকে উদ্ধারের নির্দেশ ইসির

এরমধ্যেই গত শুক্রবার থেকে আসিফের খোঁজ মিলছে না। তার স্ত্রী মেহেরুন্নিছার অভিযোগ, আসিফকে ধরে নেওয়া হয়েছে। এতে পুলিশের হাত রয়েছে বলে ইঙ্গিত করছেন তিনি।

এমন অভিযোগ শোনার পর সোমবার ইসি আসিফকে উদ্ধারের জন্য মাঠ প্রশাসনকে নির্দেশনা দেয়। পাশাপাশি ঘটনা তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেওয়া হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে।

তবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পুলিশ বলছে, আসিফ আত্মগোপন করেছেন।

সার্বিক বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে আনিছুর বলেন, “যেহেতু গণমাধ্যমে আসছে, এরপর আমরা মাঠ প্রশাসনে কথা বলেছি। এরপর তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে বলেছি ডিসি, এসপি ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে। কী ঘটেছে সে রিপোর্ট চেয়েছি।

“তারা বলেছে, ওই ব্যক্তি কোথায় আছে সেটা একবার চিহ্নিত করা গিয়েছিল। পরে আর যায়নি ফোনটা বন্ধ ছিল বলে। এরপর সকল এজেন্সি প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। তিনি কোথায় আছেন- আমরা একটা ভিডিও দেখেছি, তাতে মনে হয় যে, এটা তার মানে এরকম একটা পরিকল্পনা আগেই করা ছিল।”

আসিফের অন্তর্ধানের পেছনে সরকারি কোনো বাহিনীর ‘হাত নেই’ দাবি করে তিনি বলেন, “ইসির নির্দেশনা দেওয়া আছে, যে তাকে খুঁজে বের করে গণমাধ্যমের সামনে বক্তব্য রাখতে হবে। কমিশনের কাছে তথ্য আছে, যে সরকারি কোনো বাহিনী এই কাজটি করেনি।

“আমাদের কাছে যে তথ্য উপাত্ত আছে, তাতে ধারণা জাগে…এছাড়া যে রেকর্ড আছে, তাতে তিনি স্ত্রীকে বলছেন যে, কী কী আনতে হবে। সিসি ক্যামেরা বন্ধ করে দিতে হবে এবং ১০ মিনিট পর উনি বের হয়ে চালু করতে, তার মানে কী? মানে হচ্ছে যে তারা একটা পরিকল্পনা করেছে, এটাই আমরা অনুমান করছি। হয়ত তার অন্য কোনো উদ্দেশ্যে থাকতে পারে বা তার নিজের গুরুত্ব বাড়ানোর জন্য।”

প্রার্থী নিখোঁজের বিষয়ে থানায় জিডি বা রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে কোনো অভিযোগ জমা পড়েনি বলে জানান ইসি আনিছুর।

তিনি বলেন, “আমাদের কাছে একটা জিনিস পাঠিয়েছে রিটার্নিং অফিসার। সেখানে স্ত্রীকে (আসিফ) জিজ্ঞাসাবাদে সুস্পষ্ট কিছু আসেনি। এ নিয়ে কেউ যদি মনে করে এটা বিতর্ক, তাহলে কিছু করার নেই।

“আমরা আমাদের চেষ্টা করে যাচ্ছি। আর উদ্ধারে যাদের দায়িত্ব তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তারা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তারা তাকে লোকেট (শনাক্ত) করার মাত্রই মিডিয়ার সামনে নিয়ে আসবে।”