“আশা করি সকল মহল ও শিক্ষাবিদদের পরামর্শে শিক্ষাক্রমের ধারাবাহিকতা রক্ষা করে পরবর্তীতে আরও সংস্কার সম্ভব হবে,” বলেন তিনি।
Published : 05 Oct 2024, 08:49 PM
নতুন বছরে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই হাতে তুলে দেওয়ার বাধ্যবাধকতা থাকায় পাঠ্যবই দ্রুত পরিমার্জন করার কথা বলেছেন শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।
এ কারণে ‘কিছু ভুলভ্রান্তিও থেকে যেতে পারে’ বলে মন্তব্য করেন তিনি।
শনিবার বিশ্ব শিক্ষক দিবসে ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে একথা বলেন উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, “ছেলেমেয়েদের হাতে নতুন বই তুলে দেওয়ার বাধ্যবাধকতার কারণে মাত্র দুই-তিন সপ্তাহের মধ্যে পাঠ্যপুস্তকের পরিমার্জন করতে হয়েছে। তাতে হয়ত কিছু ভুলভ্রান্তি থেকে যাবে।
“আশা করি সকল মহলের ও শিক্ষাবিদদের পরামর্শে শিক্ষাক্রমের ধারাবাহিকতা রক্ষা করে পরবর্তীতে আরও সংস্কার সম্ভব হবে।”
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষা ব্যবস্থা আমূল পাল্টে দেওয়া হচ্ছে। মাধ্যমিকে ফিরছে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ। মূল্যায়ন পদ্ধতি অনেকটাই জাতীয় শিক্ষাক্রম-২০১২ এর মত হবে।
গত ১ সেপ্টেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের পরিপত্রে বলা হয়, নানা সমস্যার কারণে জাতীয় শিক্ষাক্রম-২০২২ ‘বাস্তবায়নযোগ্য নয়’।
এই শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের বাধা হিসেবে শিক্ষকদের প্রস্তুতির ঘাটতি, পাঠ্য বিষয়বস্তু ও মূল্যায়ন পদ্ধতি সম্পর্কে অস্পষ্টতা ও নেতিবাচক ধারণা, প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতার অভাবের কথা বলা হয় সেখানে।
সিদ্ধান্ত হয়েছে, পাঠ্যক্রম সংশোধন ও পরিমার্জন করে ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়া হবে এবং আগামী বছর থেকে পাঠ্যবইয়ে পরিবর্তন আসবে।
নতুন বই ছাপানোর দরপত্র উন্মুক্ত হচ্ছে ৭ অক্টোবর
দুই সপ্তাহের মাথায় পাঠ্যপুস্তক সংশোধন কমিটি বাতিল
এর অংশ হিসেবে এনসিটিবির প্রকাশিত বিনামূল্যের প্রণয়ন করা ও ছাপানো সব পাঠ্যপুস্তক সংশোধন ও পরিমার্জন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন ও সমন্বয়ে একটি কমিটি করা হয়েছিল। ১০ সদস্যের ওই কমিটির কয়েকজন সদস্যকে নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা হলে দুই সপ্তাহ পর কমিটি বাতিল করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ।
শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, “সরকারের রাজস্ব আয় আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের নিম্ন পর্যায়ে থাকায় শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক সুরক্ষা খাতে সরকারি ব্যয়ও অনেক কম। তারপরও সরকারি ব্যয়, অপচয়, দুর্নীতি কমানো গেলে এসব খাতের ব্যয় বাড়ানো সম্ভব। সে চেষ্টা এক দিনে হবে না, কিন্তু আমরা শুরু করেছি।”
নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে বিতর্ক কেন?
তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশে শিক্ষকদের বেতন অনেক কম। বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা অনেক দূরে গিয়ে চাকরি করছেন। এসব সমস্যার সমাধান পুরোপুরি নাহলেও আংশিক সমাধানে কাজ করা হবে।”
আগের সরকারের মেয়াদে ব্যাপক নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ তুলে ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, “প্রতিটি পর্যায়ে নিয়োগ বাণিজ্য হয়েছে। অনেক শিক্ষক রয়েছেন যারা বিনা বেতনে শিক্ষকতা করছেন। শিক্ষকরা বঞ্চিত এটা ঠিক, তেমনি অন্যান্য পেশার মত তাদেরও জবাবদিহিতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়।”