গ্রেপ্তারের পর তাকে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে।
Published : 17 Sep 2024, 01:09 AM
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত লেখক ও একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির উপদেষ্টা মণ্ডলীর সভাপতি শাহরিয়ার কবিরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সোমবার রাতে ঢাকার বনানী এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তারের তথ্য দেন তেজগাঁও থানার ওসি মো. মোবারক হোসেন।
তবে কোন মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে প্রাথমিকভাবে তা জানাতে পারেননি এই পুলিশ কর্মকর্তা।
এদিন রাতে সাবেক রেলমন্ত্রী নূরল ইসলাম সুজনকে শ্যামলীর একটি হাসপাতাল থেকে গ্রেপ্তার করার কিছুক্ষণ পর শাহরিয়ার কবিরকে গ্রেপ্তারের খবর দেয় পুলিশ।
তাদের দুইজনকেই গ্রেপ্তারের পর রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে।
এদিন দুই সাংবাদিক মোজাম্মেল হক বাবু ও শ্যামল দত্তকেও ময়মনসিংহের ধোবাউড়া সীমান্ত এলাকা থেকে গ্রেপ্তারের পর ঢাকায় ডিবি কার্যালয়ে রাতে আনা হয়েছে।
প্রবল গণ আন্দোলনের মুখে ৫ অগাস্ট দেশে ছেড়ে ভারতে চলে যান শেখ হাসিনা। তিন দিন পর গঠন করা হয় অন্তর্বর্তী সরকার। এরপর একে একে গ্রেপ্তার হতে থাকেন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীসহ শীর্ষ পর্যায়ের নেতা ও প্রভাবশালী সংসদ সদস্যরা।
পাশাপাশি আওয়ামী লীগের সঙ্গে থাকা ১৪ দলের জোটের নেতাদের মধ্যে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য রাশেদ খান মেনন এবং জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনুকে গ্রেপ্তার করা হয়। আরও গ্রেপ্তার হয়েছেন সাংবাদিক মোজ্জামেল হক বাবু ও শ্যামল দত্ত।
গ্রেপ্তার সাবেক মন্ত্রীদের মধ্যে আছেন ক্ষমতাচ্যুত সরকারের আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সমাজকল্যাণ মন্ত্রী দীপু মনি, জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, সংস্কৃতিমন্ত্রী ও অভিনেতা আসাদুজ্জামান নূর, বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী, আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
আরও গ্রেপ্তার হয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর দুই উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী।
সরকারের পালাবদলে গ্রেপ্তারের অভিযানের মধ্যে এবার সোমবার রাতে আটক করা হয় মুক্তিযুদ্ধ ও মানবাধিকার নিয়ে দীর্ঘদিন থেকে সোচ্চার লেখক, সাংবাদিক ও তথ্যচিত্র নির্মাতা শাহরিয়ার কবিরকে।
বাংলা একাডেমি পুরস্কার পাওয়া এই লেখক একজন শিশুসাহিত্যিক। তিনি দীর্ঘদিন থেকে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির কার্যক্রম নিয়ে সোচ্চার ভূমিকা পালন করছেন।
এ কমিটি গঠনে শাহরিয়ার কবির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। ১৯৯৪ সালে শহীদ জননী জাহানারা ইমামের মৃত্যুর পর তিনি কমিটির সভাপতি হন। ২০২৪ সাল পযন্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। পরে তাকে উপদেষ্টা মণ্ডলীর সভাপতি করা হয়।
ছাত্রজীবন শেষে শাহরিয়ার কবির ১৯৭২ সালে সাপ্তাহিক বিচিত্রায় সাংবাদিক হিসেবে যোগ দেন। পরে তিনি নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৭৬ থেকে ১৯৮০ সাল পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ লেখক শিবিরের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।