এ বিষয়ে শুনানির জন্য আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারি দিন রাখা হয়েছে।
Published : 23 Jan 2025, 01:35 PM
দেশের রাষ্ট্রীয় পদমর্যাদার ক্রমে ‘যথাযথ মর্যাদায়’ অন্তর্ভুক্তি চেয়ে রিভিউ আবেদন করেছেন ডেপুটি ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলরা।
রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের পদমর্যাদাক্রম (ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স) নিয়ে আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের রিভিউ আবেদন শুনানিতে অন্তর্ভুক্ত হয়ে তারা এ আবেদন করেন।
বৃহস্পতিবার জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগে এ বিষয়ে একটি রিভিউ আবেদন করেন তারা।
আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারি এ বিষয়ে শুনানির জন্য দিন রাখা হয়েছে।
বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের রিভিউ আবেদনের পক্ষে আছেন ব্যারিস্টার নিহাদ কবির। এই রিভিউ আবেদনে পক্ষভুক্ত হওয়া ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলদের পক্ষে রয়েছেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম। সঙ্গে আছেন ব্যারিস্টার এম আবদুল কাইয়ূম।
রুলস অব বিজনেস অনুযায়ী ১৯৮৬ সালে ‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স’ তৈরি করে তা প্রজ্ঞাপন আকারে প্রকাশ করা হয়। পরবর্তীতে ২০০০ সালে এটি সংশোধন করা হয়।
সংশোধিত এ ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্সের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০০৬ সালে হাই কোর্টে রিট মামলা করেন বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক মহাসচিব আতাউর রহমান।
এ পরিপ্রেক্ষিতে ওই সময় জেলা জজদের পদমর্যাদা সচিবদের নিচে দেখানো কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল দেয় হাই কোর্ট।
রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১০ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি দেওয়া রায়ে আটটি নির্দেশনা দেয় হাই কোর্ট। সে অনুসারে নতুন তালিকা তৈরি করতে সরকারকে ৬০ দিন সময় বেঁধে দেওয়া হয়।
হাই কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। সে আপিল নিষ্পত্তি করে সাবেক প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বে পাঁচ বিচারকের আপিল বিভাগ ২০১৫ সালে রায় দেয়।
আপিল বিভাগের রায়ে রয়েছে-
১. সংবিধান যেহেতু রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন, সেহেতু রাষ্ট্রীয় পদমর্যাদাক্রমের শুরুতেই সাংবিধানিক পদাধিকারীদের গুরুত্ব অনুসারে রাখতে হবে।
২. জেলা জজ ও সমমর্যাদার বিচার বিভাগীয় সদস্যরা রাষ্ট্রীয় পদমর্যাদাক্রমের ২৪ থেকে ১৬ নম্বরে সরকারের সচিবদের সমমর্যাদায় উন্নীত হবেন।
জুডিসিয়াল সার্ভিসের সর্বোচ্চ পদ জেলা জজ। অন্য প্রশাসনের সর্বোচ্চ স্তরে সচিবরা রয়েছেন।
৩. অতিরিক্ত জেলা জজ ও সমমর্যাদার বিচার বিভাগীয় সদস্যদের অবস্থান হবে জেলা জজদের ঠিক পরেই, রাষ্ট্রীয় পদমর্যাদাক্রমের ১৭ নম্বরে।
রায়ে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রীয় পদমর্যাদাক্রম কেবল রাষ্ট্রীয় আচার-অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যাবে। নীতি নির্ধারণী ক্ষেত্র বা অন্য কোনো কার্যক্রমে যেন এর ব্যবহার হয় না।
ওই সময় রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ হওয়ার পর তৎকালীন অতিরিক্ত আ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা বলেছিলেন, “হাই কোর্টের রায়টি মোডিফাই করে আপিল বিভাগের রায় দেওয়া হয়েছে।”
তিনি বলেছিলেন, পূর্ণাঙ্গ রায়ে রাষ্ট্রীয় পদমর্যাদাক্রমে নতুন কয়েকটি বিষয় সংযোজন করা হয়েছে। একুশে ও স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত, বীর উত্তম খেতাবপ্রাপ্তদের ‘যথাযথ সম্মান’ দিতে বলা হয়েছে।
“আরেকটা বিষয় বলা হয়েছে। যারা সাংবিধানিক পদাধিকারী, তাদেরকে যেন অগ্রাধিকার দেওয়া হয় অন্যান্য পদের উপরে।”
এর আগে গত ৯ জানুয়ারি দেশের রাষ্ট্রীয় পদমর্যাদার ক্রম ঠিক করতে আপিল বিভাগে দ্রুত রিভিউ শুনানির আবেদন করে বিচারকদের সংগঠন জুডিসিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন।