“আগামী দিনগুলোতে সম্পর্ককে কীভাবে এগিয়ে নেওয়া যায়, সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বেশি।”
Published : 20 Oct 2024, 08:01 PM
পররাষ্ট্র সচিব জসীম উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠকে ভারতে অবস্থানরত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিষয়ে ‘সুনির্দিষ্ট’ কোনো আলোচনা না হওয়ারে কথা বলেছেন প্রতিবেশী দেশটির হাই কমিশনার প্রণয় ভার্মা।
রোববার ওই বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “না, কোনো সুনির্দিষ্ট বিষয় নয়। আগামী দিনগুলোতে সম্পর্ককে কীভাবে এগিয়ে নেওয়া যায়, সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বেশি।”
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে শেখ হাসিনা ভারতে অবস্থান করছেন।
আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের শাসন অবসানের পর সরকার গঠন করেছে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
এর মধ্যে ‘গণহত্যার’ অভিযোগে বিচারের অংশ হিসাবে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ১৭ অক্টোবর গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেছেন, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা মেনে সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে এক মাসের মধ্যে ফেরানোর বিষয়ে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ সরকার নেবে।
তিনি বলে আসছেন, শেখ হাসিনা কোন ‘স্ট্যাটাসে’ ভারতে অবস্থান করছেন, সেটা ‘আনুষ্ঠানিকভাবে’ জানেন না।
এর মধ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির দিন এক ব্রিফিংয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল বলেন, “বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে এসেছেন নিরাপত্তার জন্য। তিনি এখানেই আছেন।”
তবে ‘গণহত্যার’ বিচারের জন্য শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির বিষয়ে কোনো ‘মন্তব্য’ করেননি মুখপাত্র।
এ নিয়ে আলোচনার মধ্যেই রোববার পররাষ্ট্র সচিব জসীম উদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ভারতের হাই কমিশনার প্রণয় ভার্মা।
পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “এটা নিয়মিত বৈঠকের অংশ। দুই দেশের নিরাপত্তা ও উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা করেছি। আমাদের ইতিবাচক সম্পর্ক রয়েছে।
“আমরা বিশ্বাস করি, আমাদের সম্পর্ক দুই দেশের মানুষের কল্যাণে ভূমিকা রাখবে। ভারত বাংলাদেশের ওপর নির্ভরশীল, বাংলাদেশও ভারতের ওপর নির্ভরশীল, পারস্পরিক নির্ভরশীলতার সম্পর্ক আরও এগিয়ে নেওয়া দরকার।”
ক্ষমতার পালাবদলের পর থেকে বাংলাদেশে ভিসা কার্যক্রম একপ্রকার বন্ধ করে রেখেছে ভারত। এ বিষয়ে এক প্রশ্নে তিনি বলেন, “লোকবল (হাই কমিশনের) এখনো কম, ফলে বাংলাদেশিদের জন্য এখনই স্বাভাবিক হচ্ছে না ভারতের ভ্রমণ ভিসা। তবে চিকিৎসা ও শিক্ষাকাজে জরুরি ভিসা সীমিতভাবে চালু আছে।”
এদিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে ভারতীয় হাই কমিশনারের আলোচনার বিষয়বস্তু তুলে ধরেছে।
সেখানে বলা হয়, ঋণচুক্তির আওতায় থাকা প্রকল্পে জড়িত ভারতীয় কর্মীদের ফেরা, ভারতীয় ভিসা কার্যক্রম, সংশোধিত ট্রাভেল ব্যবস্থাপনার (আরটিএ) নবায়ন, গত সপ্তাহে বাংলাদেশ আটক ভারতীয় জেলেদের দ্রুত সময়ে কনস্যুলার সেবার ব্যবস্থা করা, মধ্য সেপ্টেম্বরে ভারতে আটক বাংলাদেশিদের প্রত্যাবর্তন এবং ফরেন অফিস কনসালটেশনসহ দুদেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় প্রক্রিয়াগুলোর বৈঠক আয়োজনের বিষয় আলোচনায় স্থান পেয়েছে।