তাজিয়া মিছিলের সামনে-পেছনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সতর্ক উপস্থিতি দেখা গেছে।
Published : 17 Jul 2024, 01:05 PM
আশুরার দিনে কারবালার স্মরণে ঢাকার বিভিন্ন স্থানে তাজিয়া মিছিল করছে শিয়া মুসলমানরা।
ঢাকার পুলিশ প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী এবারও এই শোকের মিছিলে লাঠি, বর্শা, ছুরি, বল্লম, তলোয়ারের মত ধারালো অস্ত্র বহন নিষিদ্ধ ছিল।
মিছিলে অংশ নিতে বুধবার ভোর থেকে পুরান ঢাকার হোসাইনী দালান জড়ো হয় হাজারো মানুষ।
সকাল ১০টায় হোসাইনী দালানের ইমামবাড়া থেকে যখন প্রধান তাজিয়া মিছিলটি শুরু হয়; সেই মিছিলে বিভিন্ন বয়সের নারী পুরুষ সবাই অংশ নিলেও আধিক্য ছিল তরুণদের।
মিছিলটি সামনে এগুলো ঢাকার বিভিন্ন জায়গা থেকে আলাদা আলাদা মিছিল প্রধান মিছিলটির সাথে যুক্ত হয়। এ সময় রাস্তার দুপাশে উৎসুক মানুষের ভিড় দেখা গেছে।
তাজিয়া মিছিলের সামনে-পেছনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সতর্ক উপস্থিতি দেখা গেছে।
চকবাজার থানার ওসি কাজী শাহীদুজ্জামান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “তাজিয়া মিছিলকে কেন্দ্র করে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা যেন না ঘটে সেজন্য পুলিশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। ইমামবাড়াতে আমাদের পুলিশের পক্ষ থেকে অস্থায়ী কন্ট্রোলরুম বসানো হয়েছে, সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে। সবকিছু সুশৃঙ্খলভাবে শুরু হয়েছে।”
শোকের মিছিলে আংশগ্রহণকারীদের পরনে কালো পোশাক, মাথায় কালো ফেট্টি, কারও হাতে আবার ঝালর দেওয়া লাল, কালো, সোনালি রঙের ঝাণ্ডা দেখা গেছে।
তাজিয়া মিছিলে কারবালার স্মরণে কালো মখমলের চাঁদোয়ার নিচে কয়েকজন বহন করেন ইমাম হোসেনের প্রতীকী কফিন। মিছিলের সামনে ছিল ইমাম হাসান ও ইমাম হোসেনের দুটি প্রতীকী ঘোড়াও।
খালি পায়ে, বুক চাপড়ে ‘হায় হোসেন, হায় হোসেন’ মাতম তুলে, লালবাগ, আজিমপুর, নিউ মার্কেট,নীলক্ষেত ঘুরে, সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড় হয়ে মিছিলপি ধানমণ্ডির দিকে এগিয়ে যায়। পরে ধানমণ্ডি লেকের পাড়ে প্রতীকী ‘কারবালা’ প্রান্তে গিয়ে শোকের মিছিল শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
এসময় মিছিল থেকে শিয়া সম্প্রদায়ের আব্দুল আলীম নামের যুবক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কারবালায় মর্মান্তিক ইতিহাস আমরা সবার মধ্যে ছড়িয়ে দিতে চাই। আমরা মুসলিম বিশ্বকে জানিয়ে দিতে চাই ওইদিন কি ঘটেছিল।”
মীর মোহাম্মদ আদিল হোসেন নামের আরেকজন বলেন, “কারবালায় সেই মর্মান্তিক ঘটনায় আমরা ভক্তরা শোকের মাতম তুলি। আমরা আমাদের ঈমানী দায়িত্ব পালন করছি।”
১০ মহররম মুসলিম বিশ্বে ত্যাগ ও শোকের প্রতীক। হিজরি ৬১তম বর্ষের (৬৮০ খ্রিস্টাব্দ) এই দিনে মহানবী হজরত মুহাম্মদের (স.) দৌহিত্র হজরত ইমাম হোসেন (রা.) ফোরাত নদীর তীরে কারবালা প্রান্তরে শহীদ হন। মুসলমানরা, বিশেষ করে শিয়া মুসলমানরা ধর্মীয় অনুশাসনের মধ্য দিয়ে দিনটি পালন করেন।
২০১৫ সালে তাজিয়া মিছিলের প্রস্তুতির মধ্যে ইমামবাড়ায় জঙ্গি হামলার ঘটনার পর থেকে আশুরায় নিরাপত্তার কড়াকড়ি বাড়ানো হয়।
কোভিড মহামারীর কারণে বাংলাদেশে দুই বছর বন্ধ থাকার পর ২০২১ সাল থেকে তাজিয়া মিছিল করার অনুমতি পায় শিয়া সম্প্রদায়।