অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর গত পাঁচ মাসে ৯৮ জনকে বিভিন্ন অভিযোগে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ এসেছে।
Published : 31 Dec 2024, 09:26 PM
গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতার পালাবদলের পর নানা ক্ষেত্রে পরিবর্তনের সূচনা হলেও বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধ হয়নি বলে উঠেছে দেশের দুটি মানবাধিকার সংস্থার প্রতিবেদনে।
আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) বলছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর গত প্রায় পাঁচ মাসেও অন্তত ১২ জন বিভিন্ন সরকারি বাহিনীর হেফাজতে মারা গেছেন ও ‘বিচার বহির্ভূত হত্যার’ শিকার হয়েছেন।
এই পাঁচ মাসে ৯৮ জনকে বিভিন্ন অভিযোগে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ এসেছে মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের (এমএসএফ) প্রতিবেদনে।
প্রতিবছরই বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য ও নিজস্ব অনুসন্ধান থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মানবাধিকার পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন তৈরি করে এ দুটি সংস্থা। এবারের প্রতিবেদনের উল্লেখযোগ্য অংশ জুড়ে ছিল জুলাই-অগাস্টে নিরস্ত্র জনতাকে গুলি করে হতাহত করা, এলাকায় এলাকায় আন্দোলনকারীদের খোঁজে ব্লক রেইড, ইন্টারনেট বন্ধসহ গণঅভ্যুত্থানের দিনগুলোতে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের নানা মানবাধিকার লঙ্ঘনের চিত্র।
সেইসঙ্গে সংখ্যালঘুদের বসতি ও স্থাপনায় হামলা, মাজারে হামলা, সাংবাদিকদের ওপর বিভিন্ন রকম নিপীড়ন ও হয়রানির কথা উঠে এসেছে দুই সংস্থার প্রতিবেদনে।
নিরস্ত্র মানুষের ওপর পুলিশের গুলি, ডিবি অফিসে নিয়ে নির্যাতনের বিষয়গুলো তুলে ধরে আইন ও সালিশ কেন্দ্রের প্রতিবেদনে বলা হয়, সরকারের তথ্য অনুযায়ী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে মোট ৮৫৮ জন নিহত হয়েছে এবং আহত হয়েছে ১১ হাজার ৫৫১ জন।
“আসক কর্তৃক সংগৃহীত তথ্য অনুযায়ী, নিহতদের মধ্যে ১১ জন নারী এবং ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত শিশু কিশোর রয়েছে ১২৯ জন। জুলাই অভ্যুত্থানে, বিশেষত নিজ বাসায় গুলিতে শিশুদের মৃত্যুর ঘটনাগুলো অত্যন্ত মর্মান্তিক। এছাড়াও নিহতদের মধ্যে ছাত্র, শ্রমিক, পেশাজীবী ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী রয়েছেন।
“তথ্য সংগ্রহকালে লক্ষ্য করা যায়, নিহত অনেকের মৃতদেহ অজ্ঞাত পরিচয়ে আঞ্জুমান মফিদুল ইসলাম গ্রহণ করে দাফনের উদ্দেশ্যে। এছাড়া নিহতদের লাশ হাসপাতাল থেকে গ্রহণে পরিবারগুলোর নানারকম ভোগান্তির শিকার হতে হয়।”
গণঅভ্যুত্থানের মুখে ৫ অগাস্ট ক্ষমতা ছেড়ে দেশত্যাগে বাধ্য হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের টানা ১৫ বছরের শাসনের অবসান ঘটে।
বিচার বহির্ভূত হত্যা
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের প্রতিবেদনে বলা হয়, সংখ্যার দিক দিয়ে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড কমে এলেও তা ‘বন্ধ হয়নি’। অভিযোগগুলোর নিরপেক্ষ তদন্ত ও সুষ্ঠু বিচারও ‘নিশ্চিত করা যায়নি’।
তাদের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এ বছর বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে মৃত্যু হয়েছে ২১ জনের। এর মধ্যে ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে অন্তবর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর।
এমএসএফ এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে কথিত বন্দুকযুদ্ধে ২২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে অগাস্টে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর কথিত বন্দুকযুদ্ধে মারা গেছেন ছয়জন।
বিচারালয়ে ‘নজিরবিহীন’ সব ঘটনা
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের প্রতিবেদনে বলা হয়, বর্তমান সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর বিচারকের ওপর ডিম নিক্ষেপ, চায়ের দাওয়াত দিয়ে ১২ বিচারককে ছুটিতে পাঠানোর মতো ‘নজিরবিহীন’ সব ঘটনা ঘটেছে।
“যশোরে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীসহ ১৬৭ জন হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করেন। তাদের সবাইকে কারাগারে পাঠানো হয়। এমনকি যে আইনজীবী তাদের আদালতে হাজির করলেন, রাতের বেলায় ওই আইনজীবীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই ধরনের নজির বাংলাদেশে আগে কখনো ছিল না।”
আসকের প্রতিবেদনে বলা হয়, ঢাকাসহ সারাদেশে আওয়ামী লীগ ও তাদের সমর্থিত রাজনৈতিক জোটের নেতাকর্মীদের গেপ্তার এবং আটকের ঘটনা ঘটছে। আটক ব্যক্তিদের আদালতে নেওয়ার সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে থাকাকালীন সময়েও আদালত চত্বরে কারো কারো ওপর হামলা বা মারধরের মত ঘটনা ঘটেছে।
“এমনকি আটক ব্যক্তির পক্ষের আইনজীবীদের মারধর ও হেনস্থার ঘটনা ঘটেছে। আদালত প্রাঙ্গণে এ ধরনের ঘটনা নজিরবিহীন।”
এ মানবাধিকার সংস্থা বলছে, ‘মিথ্যা ও হয়রানিমূলক’ মামলায় অনেক পেশাজীবী নাগরিককেও আসামি করা হয়েছে, যাদেরকে বাদী কিংবা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের কেউ চেনেন না। মামলার ভয় দেখিয়ে কিংবা মামলা থেকে অব্যহতি পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে অর্থ দাবি করারও অভিযোগ উঠেছে।
‘দায়মুক্তি’
আসক এর প্রতিবেদনে বলা হয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ১৪ অক্টোবর একটি বিবৃতি দেয়, যেখানে বলা হয়– ১৫ জুলাই থেকে ৮ অগাস্ট পর্যন্ত জুলাই-বিদ্রোহের সঙ্গে সম্পর্কিত ঘটনাগুলোয় কোনো মামলা, গ্রেপ্তার বা হয়রানি করা হবে না।
ওই বিবৃতিতে বলা হয়, “ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ৫ অগাস্ট স্বৈরাচারী ও ফ্যাসিবাদী সরকারের পতনের মধ্য দিয়ে বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশ গড়ার নতুন যাত্রা শুরু হয়। ছাত্র ও জনগণ এটিকে সফল করার জন্য আন্দোলনের ভিত্তিতে সক্রিয়ভাবে এর জন্য কাজ করেছে; ১৫ জুলাই থেকে ৮ অগাস্ট পর্যন্ত চলা গণঅভ্যুত্থানের ঘটনায় কোনো মামলা, গ্রেপ্তার বা হয়রানি করা হবে না।”
মানবাধিকার কর্মী ব্যারিস্টার সারা হোসেন বলেন, “সহিংসতার অপরাধে জড়িত কাউকে মুক্তি দিতে ‘দায়মুক্তির আদেশ’ ব্যবহার না করা গুরুত্বপূর্ণ।’’
এ বিষয়ে অবস্থান পরিষ্কার করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
আসক এর প্রতিবেদনে বলা হয়, “সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে হামলা কিংবা রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে প্রতিশোধের কোনোটিই ‘বিক্ষোভের সঙ্গে সম্পর্কিত কাজ’ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে না।”
এ প্রসঙ্গে আন্দোলনকারী পক্ষ বলছে, এ সময়ে ঘটে যাওয়া ধ্বংসাত্মক কাজগুলোর দায় তারা নেবে না। যেমন মেট্রোস্টেশন পোড়ানো, থানায় আগুন দিয়ে পুলিশ মারা ইত্যাদি। বলা হচ্ছে, এসব হলো ‘মব ভায়োলেন্স’, যার জন্য আন্দোলনকারীরা দায়ী নন।
কারাগারে ‘কথিত হৃদরোগ’
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের প্রতিবেদনে বলা হয়, এ বছর দেশের বিভিন্ন কারাগারে অসুস্থতাসহ বিভিন্ন কারণে মারা গেছেন ৬৫ জন। এর মধ্যে কয়েদি ২৩ এবং হাজতি ৪২ জন। ২০২৩ সালে কারা হেফাজতে মারা যান ১০৬ জন।
তবে বগুড়া কারাগারে পরপর চারজন আওয়ামী লীগ নেতার ‘কথিত হৃদরোগে’ মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে তদন্ত হওয়া উচিত বলে মনে করছে এই মানবাধিকার সংস্থা।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ১১ নভেম্বর থেকে ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত ২৯ দিনে বগুড়া কারাগারে বন্দি থাকা চারজন আওয়ামী লীগ নেতা কথিত ‘হৃদরোগে আক্রান্ত' হয়ে মারা গেছেন। এর মধ্যে গত ২৬ নভেম্বর বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং পুলিশ লাইন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ শাহাদত আলম ওরফে ঝুনু (৫৭) কারাবন্দি অবস্থায় মারা যান।
ঠিক একদিন আগে ২৫ নভেম্বর মারা যান শিবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ আবদুল লতিফ (৬৭)। ১১ নভেম্বর কারাবন্দি অবস্থায় মারা যান বগুড়া পৌরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম ওরফে রতন (৫৮)।
৯ ডিসেম্বর গাবতলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও দুর্গাহাটা ইউনিয়নের ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল মতিন ওরফে মিঠু (৬৫) মারা যান।
গণপিটুনি বেড়েছে ‘দ্বিগুণের বেশি’
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৪ সালে গণপিটুনির ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১২৮ জন। ২০২৩ সালে গণপিটুনিতে নিহত হয়েছিলেন ৫১ জন।
“অন্তর্বর্তী সরকারের সময় তথাকথিত ‘মব জাস্টিস' এর নামে মানুষকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনাগুলো ছিল উদ্বেগজনক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে এক তরুণকে পিটিয়ে হত্যার বিষয়টি সমালোচনার ঝড় তোলে। চলমান পরিস্থিতিতে পিটিয়ে হত্যা বা মব জাস্টিজের মত ঘটনার সঙ্গে রাজনৈতিক দলের পদধারী নেতা ও কর্মীরা হত্যাকাণ্ডের শিকার হচ্ছেন।
“৭ সেপ্টেম্বর রাতে পিটিয়ে হত্যা করা হয় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আবদুল্লাহ আল মাসুদকে। তিনি কৃত্রিম পা নিয়ে চলাফেরা করতেন।”
মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে গণপিটুনিতে নিহত হয়েছেন ১৪৬ জন। এর মধ্যে ৯৮ জন নিহত হয়েছেন অগাস্ট পরবর্তী পাঁচ মাসে।
সাংবাদিক নির্যাতন
নতুন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর সংবাদ প্রতিষ্ঠানে হামলা, সাংবাদিকদের অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড বাতিল, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলার বিষয়গুলো উঠে এসেছে আসক এর প্রতিবেদনে।
সেখানে বলা হয়েছে, বছরজুড়ে ৫৩১ জন সাংবাদিক বিভিন্নভাবে নির্যাতন, হয়রানি, হুমকি ও পেশাগত কাজ করতে গিয়ে বাধার সম্মুখীন হয়েছেন। যাদের মধ্যে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে হামলার শিকার হয়েছেন অন্তত ২১৯ জন সংবাদকর্মী।
এরমধ্যে শুধুমাত্র দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় লাঞ্ছিত ও হামলার শিকার হয়েছেন ৩০ জন সাংবাদিক।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে দায়িত্ব পালনকালে গুলিতে নিহত হয়েছেন ৬ জন এবং ১ জন সাংবাদিক দুর্বত্তদের হাতে হত্যার শিকার হয়েছেন।
এছাড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন পরবর্তী সময়ে মামলার শিকার হয়েছেন ১৩০ জন সাংবাদিক। অন্তর্বর্তী সরকার তিন দফায় সাংবাদিকদের স্থায়ী অস্থায়ী অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড বাতিল করেছে।
প্রতিবেদনে আসক বলছে, দেশের কোনো কোনো গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা, হামলা, ঘেরাওয়ের হুমকিসহ নানা আক্রমণের ঘটনা ঘটেছে। কোনো কোনো মহলের স্বার্থের বাইরে গেলেই গণমাধ্যমকে আক্রমণ ও সাংবাদিক হেনস্তা, গণমাধ্যমকে পরিচালনার প্রচেষ্টা চলছে, যা আসলে মুক্ত গণমাধ্যমের সম্ভাবনার জন্য অশনিসংকেত।
সংখ্যালঘু নির্যাতন
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৪ সালে দেশের বিভিন্ন স্থানে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়ি-ঘর, মন্দির ও ব্যবসা- প্রতিষ্ঠান ভাংচুরের ১৪৭টি ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় ৪০৮টি বাড়িঘরে হামলা ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে, অগ্নিসংযোগ হয়েছে ৩৬টিতে, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে ১১৩টিতে, মন্দির ও আহমদিয়া সম্প্রদায়ের মসজিদে হামলার ঘটনা ঘটেছে ৩২টি, হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দিরে ৯২টি প্রতিমা ভাংচুর হয়েছে।
এসব ঘটনায় হিন্দু সম্প্রদায়ের ৩ জন এবং আহমদিয়া সম্প্রদায়ের ১ জন নিহত হন, আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৮২ জন।
ইসকন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাশ গ্রেপ্তারের পর সনাতনীদের হামলায় নিহত হন চট্টগ্রামের আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ। নিহত আলিফের পরিবার আইন ও সালিশ কেন্দ্রকে বলেছে, তারা সাইফুল হত্যার বিচার চান, যারা প্রকৃত অপরাধী তাদের যেন শাস্তি হয়। আমরা কোনো নিরীহ ব্যক্তির হয়রানি হোক, সেটা তারা প্রত্যাশা করেন না।
গত ৩ ডিসেম্বর সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার থানার মংলারগাঁও গ্রামের আকাশ দাস নামে ২০ বছ বয়সী এক তরুণের বিরুদ্ধে ইসলাম নিয়ে ‘অবমাননাকর পোস্ট’ দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। পোস্টটি ডিলিট করা হলেও স্ক্রিনশট নিয়ে এলাকার জনগণের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
দোয়ারাবাজার থানা পুলিশ আকাশ দাসকে ঘটনার দিনই আটক করে। পরে স্থানীয়রা ওই তরুণকে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। নিরাপত্তার স্বার্থে তাকে দোয়ারাবাজার থানায় না নিয়ে সদর থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, ওইদিন জনতা হিন্দু সম্প্রদায়ের বসতবাড়ি, দোকানপাট ও স্থানীয় লোকনাথ মন্দির ভাঙচুর ও ক্ষতিসাধন করে। জেলার এসপি, ডিসি, সেনাবাহিনী এবং পুলিশের উপস্থিতিতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে গ্রেফতারের জন্য পুলিশ তদন্ত করছে।
বিভিন্ন জায়গায়, বিশেষ করে খুলনা এবং ফরিদপুর জেলায় ফেইসবুকে মন্তব্যের জের ধরে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের দুই তরুণকে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ও সেনা সদস্যদের উপস্থিতিতে ‘নির্দয়ভাবে’ পেটানো হয়। ওই ঘটনাও এসেছে আসকের প্রতিবেদনে।