ঝড় আক্রান্ত এলাকায় রোববার রাতভর বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রেখেছিল দুই বিতরণ কোম্পানি।
Published : 27 May 2024, 09:39 PM
ঘূর্ণিঝড় রেমালে বিতরণ লাইন লণ্ডভণ্ড হওয়ায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে দেশের দুই কোটি ৭০ লাখ গ্রাহক।
এর মধ্যে কেবল পল্লী বিদ্যুতেরই ২ কোটি ৬৬ লাখ ২৬ হাজার ৫৫০ জন গ্রাহক আছেন বলে সোমবার সন্ধ্যায় বিদ্যুৎ বিভাগের বার্তায় জানানো হয়েছে।
মাঠ কর্মকর্তাদের মৌখিক তথ্যের ভিত্তিতে এতে বলা হয়, ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাব পড়েছে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের ৮০টি সমিতিতেই। কোথাও গ্রাহক সংযোগ আংশিক, কোথাওবা সম্পূর্ণ বন্ধ আছে।
সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত পল্লী বিদ্যুতের ২৩৯২টি পোল বা খুঁটি, ১৯৮২টি ট্রান্সফরমার এবং ৬২ হাজার ৪৫৪টি স্প্যান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া ২১ হাজার ৮৪৮টি ইন্সুলেটর ভেঙে গেছে, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৪৬ হাজার ৩১৮টি মিটার।
সব মিলিয়ে ৭৯ কোটি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
এদিকে রেমালের প্রভাবে ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (ওজোপাডিকো) ২০টি পোল নষ্ট হয়েছে, হেলে পড়েছে ১৩৫টি পোল। তার ছিড়েছে ২৪ দশমিক ৩৪ কিলোমিটার; ১৪২ সেট ১১ কেভি পোল ফিটিংসের পাশাপাশি নষ্ট হয়েছে ১২টি ট্রান্সফরমার। এছাড়া ১৩৪টি ১১ কেভি ইন্সুলেটর ভেঙে গেছে।
এই বিতরণ সংস্থার ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ৫ কোটি ৭৬ লাখ ৭৫ হাজার ৫০০ টাকা। বেলা ৫টা পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী কোম্পানিটির বিদ্যুৎবিহীন গ্রাহক সংখ্যা ৪ লাখ ৫৩ হাজার ৮১ জন।
সরবরাহ বন্ধ ছিল রাতে
ঝড় চলাকালে আক্রান্ত এলাকায় রোববার রাতভর বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রেখেছিল বিতরণ কোম্পানি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ও ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি। তবে ঝড়-বৃষ্টির তীব্রতা কমে আসার পর এসব এলাকার কিছু কিছু সংযোগ ফিরিয়ে দেওয়া হছে বলে কর্মকর্তাদের জানাচ্ছেন।
এদিকে ঘূর্ণিঝড়ের শুরুতে সাগরে ভাসমান টার্মিনাল (এফএসআরইউ) এলএনজি সরবরাহ কমিয়ে দেওয়া হলেও সেখানকার পরিস্থিতি ফের স্বাভাবিক হতে চলেছে। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে স্থাপনাগুলোর কোনো ধরনের ক্ষতি সাধিত হয়নি।
গত ২২ মে পূর্বমধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিমমধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়, যা ধীরে ধীরে শক্তি সঞ্চয় করে সুস্পষ্ট লঘুচাপ, নিম্নচাপ, গভীর নিম্নচাপ দশা পেরিয়ে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয় শনিবার সন্ধ্যায়। তখন এর নাম দেওয়া হয় রেমাল। রোববার সকালে ঘূর্ণিঝড়টি পরিণত হয় প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে।
এর প্রভাবে রোববার বিকাল থেকেই উপকূলীয় এলাকায় ব্যাপক বৃষ্টিপাত শুরু হয়। পরদিন সকাল থেকে সারাদেশেই বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বেড়ে দুর্বল হয়ে আসে রেমাল।
ঝড়ের বিপদ কেটে যাওয়ায় পায়রা ও মোংলা সমুদ্র বন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত নামিয়ে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। আর কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরকে ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেত নামিয়ে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে ও সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।