ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের সময়ে এ বিসিএসে চূড়ান্ত নিয়োগের জন্য ২ হাজার ১৬৩ জন প্রার্থীর নাম সুপারিশ করা হয়েছিল।
Published : 30 Dec 2024, 09:41 PM
এক বছর আগে থেকে নিয়োগের অপেক্ষায় থাকা ৪৩তম বিসিএসের নিয়োগের আগের প্রজ্ঞাপন বাতিল করা হয়েছে; নতুন তালিকায় ১ হাজার ৮৯৬ জন নিয়োগ পাচ্ছেন। এতে এবার বিভিন্ন ক্যাডারের ১৬৮ জন প্রার্থী বাদ পড়েছেন।
সোমবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় নতুন প্রজ্ঞাপন জারি করে নিয়োগ পাওয়া প্রার্থীদের ১৫ জানুয়ারি ক্যাডার নিয়ন্ত্রণকারী মন্ত্রণালয় বা বিভাগে চাকরিতে যোগ দিতে বলেছে।
এজন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ১৫ অক্টোবরের প্রজ্ঞাপন বাতিল করা হয়। আগের প্রজ্ঞাপনে ২ হাজার ৬৪ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল; যেখান থেকে এবার নতুন প্রজ্ঞাপনে বাদ পড়লেন ১৬৮ জন।
এর আগে এই বিসিএস থেকে চূড়ান্ত সুপারিশ পাওয়া ২ হাজার ১৬৩ জনের মধ্যে থেকে অন্তর্বর্তী সরকার বিভিন্ন ক্যাডারে ৯৯ জনকে বাদ দিয়ে ১৫ অক্টোবর প্রজ্ঞাপন করে নিয়োগ দিয়েছিল। সবশেষ প্রজ্ঞাপনের পর সব মিলিয়ে ৪৩তম বিসিএস থেকে বাদ পড়লেন মোট ২৬৭ জন। পরীক্ষার সব প্রক্রিয়া শেষে ২০২৩ সালের ২৬ ডিসেম্বর পিএসসি চূড়ান্ত নিয়োগের সুপারিশ করেছিল।
সোমবারের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন-পিএসসির সুপারিশ পাওয়া ১ হাজার ৮৯৬ জন প্রার্থীকে সিভিল সার্ভিসের বিভিন্ন ক্যাডারের প্রবেশ পদে নিয়োগ দেওয়া হল।
নতুন প্রজ্ঞাপনে সই রয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নব-নিয়োগ শাখার সিনিয়র সহকারী সচিব মো. উজ্জল হোসেনের। বাদ পড়াদের বিষয়ে জানতে চাইলে
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “এ বিষয়ে আমার ঊর্ধ্বতনরা বলতে পারবেন।”
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে এ বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছিল ২০২০ সালের ৩০ নভেম্বরে, যাতে অংশ নিতে বিসিএসের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আবেদন ৪ লাখ ৩৫ হাজার ১৯০ জনের জমা পড়েছিল।
কোভিড মহামারীর মধ্যে ২০২১ সালের ২৯ অক্টোবর প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় মোট ৩ লাখ ২১ হাজার ৬৫০ জন প্রার্থী অংশ নেন।
পরে ২০২৩ সালের ২৬ ডিসেম্বর এই বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করে ক্যাডার ও নন-ক্যাডার মিলে ২ হাজার ৮০৫ জনকে নিয়োগের সুপারিশ করে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। তাদের মধ্যে ক্যাডার পদে নিয়োগের জন্য অপেক্ষমান ছিলেন ২ হাজার ১৬৩ জন।
প্রজ্ঞাপনে নিয়োগের যত শর্ত
>> লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে অথবা সরকার কর্তৃক নির্ধারিত প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ নিতে হবে।
>> বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ শেষে তাকে চাকরি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে সরকার যেরূপ স্থির করবে সেরূপ পেশাগত ও বিশেষ ধরনের প্রশিক্ষণ নিতে হবে।
>> দুই বছর শিক্ষানবিস হিসেবে কাজ করতে হবে। প্রয়োজনে সরকার এ শিক্ষানবিসকাল অনূর্ধ্ব দুই বছর বাড়াতে পারবে। শিক্ষানবিসকালে যদি তিনি চাকরিতে বহাল থাকার অনুপযোগী বলে বিবেচিত হন, তবে কোনো কারণ দর্শানো ছাড়াই এবং সরকারি কর্মকমিশনের পরামর্শ ব্যতিরেকে তাকে চাকরি থেকে অপসারণ করা যাবে।
>> প্রশিক্ষণ সাফল্যের সঙ্গে শেষ হলে বিভাগীয় পরীক্ষায় উত্তীর্ণ এবং শিক্ষানবিসকাল সন্তোষজনকভাবে অতিক্রান্ত হলে তাকে চাকরিতে স্থায়ী করা হবে।
>> প্রশিক্ষণ শুরু হওয়ার আগে তাকে একজন জামানতদারসহ ৩০০ টাকা মূল্যের নন-জুডিসিয়াল স্ট্যাম্পে এ মর্মে একটি বন্ড সম্পাদন করতে হবে যে, যদি তিনি শিক্ষানবিসকালে অথবা শিক্ষানবিসকাল উত্তীর্ণ হওয়ার তিন বছরের মধ্যে চাকরিতে ইস্তফা দেন, তবে প্রশিক্ষণকালে তাকে প্রদত্ত বেতন-ভাতা, প্রশিক্ষণ উপলক্ষে উত্তোলিত অগ্রিম, ভ্রমণভাতা, অন্যান্য ভাতাদি ও তার প্রশিক্ষণের জন্য ব্যয় হওয়া সমুদয় অর্থ ফেরত দিতে তিনি বাধ্য থাকবেন। কর্মস্থল থেকে অব্যাহতি প্রদানকারী কর্তৃপক্ষের কাছে একটি অঙ্গীকারনামা দাখিল করে তাকে প্রশিক্ষণে যেতে হবে।
>> ইস্তফা সরকার গ্রহণ করার আগে যদি তিনি তার কর্তব্য ও কাজে অনুপস্থিত থাকেন, তবে তার কাছে সরকারের প্রাপ্য সমুদয় অর্থ আদায় করা হবে এবং সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
>> তিনি যদি বিদেশি নাগরিককে বিয়ে করে থাকেন বা বিয়ে করার জন্য অঙ্গিকারাবদ্ধ হয়ে থাকেন তবে এ নিয়োগপত্র বাতিল বলে গণ্য হবে।
৪৩তম বিসিএস: অবশেষে ২ হাজার ৬৪ জনের নিয়োগ
৪৩তম বিসিএস: যোগদানের তারিখ পিছিয়ে ১ জানুয়ারি
৪৩তম বিসিএস: ক্যাডার ও নন–ক্যাডারে ২৮০৫ জনকে নিয়োগের সুপারিশ
৪৩তম বিসিএস: অপেক্ষা ফুরাবে স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও গোয়েন্দা প্রতিবেদনের পর
৪৩তম বিসিএস: ক্যাডার ও নন–ক্যাডারে ২৮০৫ জনকে নিয়োগের সুপারিশ