পিএসসির সুপারিশের তালিকা থেকে নেই ৯৯ জন।
Published : 15 Oct 2024, 09:21 PM
ফল প্রকাশের সাড়ে ১০ মাসের বেশি সময় পর সরকারি ক্যাডার কর্মকর্তা হতে যাচ্ছেন ২ হাজার ৬৪ জন; যারা ৪৩তম বিসিএসে উত্তীর্ণ হয়ে নিয়োগের অপেক্ষায় ছিলেন।
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির প্রায় চার বছর পর বিভিন্ন ক্যাডারে তাদের নিয়োগের সুপারিশ করে মঙ্গলবার ৪৩তম বিসিএসের প্রজ্ঞাপন জারি করেছে অন্তর্বর্তী সরকার।
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে এই বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছিল ২০২০ সালের ৩০ নভেম্বরে, যাতে অংশ নিতে বিসিএসের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আবেদন ৪ লাখ ৩৫ হাজার ১৯০ জনের জমা পড়েছিল।
কোভিড মহামারীর মধ্যে ২০২১ সালের ২৯ অক্টোবর প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় মোট ৩ লাখ ২১ হাজার ৬৫০ জন প্রার্থী অংশ নেন।
পরে ২০২৩ সালের ২৬ ডিসেম্বর এই বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করে ক্যাডার ও নন-ক্যাডার মিলে ২ হাজার ৮০৫ জনকে নিয়োগের সুপারিশ করে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। তাদের মধ্যে ক্যাডার পদে নিয়োগের জন্য অপেক্ষমান ছিলেন ২ হাজার ১৬৩ জন।
মঙ্গলবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ২ হাজার ৬৪ জনকে ক্যাডার কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগের প্রজ্ঞাপন করেছে; এ হিসাবে পিএসসির সুপারিশের তালিকা থেকে নেই ৯৯ জন।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ৪৩তম বিসিএস পরীক্ষা-২০২০ এর মাধ্যমে সুপারিশক্রমে ২ হাজার ৬৪ জন প্রার্থীকে বিভিন্ন ক্যাডারের প্রবেশ পদে জাতীয় বেতন স্কেল-২০১৫ অনুসারে ২২০০০-৫৩০৬০ টাকা বেতনক্রমে নিয়োগ দেয়া হল।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আগের সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার এই বিসিএসের চূড়ান্ত ফল অনুযায়ী নিয়োগের বাকি প্রক্রিয়া শুরু করে।
গত ডিসেম্বরে ফল হলেও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় চূড়ান্ত প্রজ্ঞাপন জারি না করায় বিভিন্ন সময় হতাশা প্রকাশ করেন সুপারিশপ্রাপ্ত প্রার্থীরা। প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করে নিয়োগের দাবি জানিয়ে আসছিলেন তারা।
২০২৩ সালের ২৬ ডিসেম্বর চূড়ান্ত ফলাফলে বিভিন্ন ক্যাডারের ২ হাজার ২১৮টি শূন্য পদের বিপরীতে ২ হাজার ১৬৩ জনকে এবং নন-ক্যাডারের ১ হাজার ৩৪২টি শূন্য পদের বিপরীতে ৬৪২ জনকে নিয়োগের জন্য সুপারিশ কর পিএসসি।
যোগ্য প্রার্থী না পাওয়ায় কারিগরি বা পেশাগত ক্যাডারের ৫৫টি পদে, নন-ক্যাডারের নবম গ্রেডের ৫৭টি পদে এবং দশম গ্রেডের ৫৮৯টি মিলিয়ে মোট ৬৪৫টি পদে কাউকে সুপারিশ করতে পারেনি কমিশন।
প্রজ্ঞাপনে নিয়োগের যত শর্ত
>> লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে অথবা সরকার কর্তৃক নির্ধারিত প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ নিতে হবে।
>> বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ শেষে তাকে চাকরি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে সরকার যেরূপ স্থির করবে সেরূপ পেশাগত ও বিশেষ ধরনের প্রশিক্ষণ নিতে হবে।
>> দুই বছর শিক্ষানবিস হিসেবে কাজ করতে হবে। প্রয়োজনে সরকার এ শিক্ষানবিসকাল অনূর্ধ্ব দুই বছর বাড়াতে পারবে। শিক্ষানবিসকালে যদি তিনি চাকরিতে বহাল থাকার অনুপযোগী বলে বিবেচিত হন, তবে কোনো কারণ দর্শানো ছাড়াই এবং সরকারি কর্মকমিশনের পরামর্শ ব্যতিরেকে তাকে চাকরি থেকে অপসারণ করা যাবে।
>> প্রশিক্ষণ সাফল্যের সঙ্গে শেষ হলে বিভাগীয় পরীক্ষায় উত্তীর্ণ এবং শিক্ষানবিসকাল সন্তোষজনকভাবে অতিক্রান্ত হলে তাকে চাকরিতে স্থায়ী করা হবে।
>> প্রশিক্ষণ শুরু হওয়ার আগে তাকে একজন জামানতদারসহ ৩০০ টাকা মূল্যের নন-জুডিসিয়াল স্ট্যাম্পে এ মর্মে একটি বন্ড সম্পাদন করতে হবে যে, যদি তিনি শিক্ষানবিসকালে অথবা শিক্ষানবিসকাল উত্তীর্ণ হওয়ার তিন বছরের মধ্যে চাকরিতে ইস্তফা দেন, তবে প্রশিক্ষণকালে তাকে প্রদত্ত বেতন-ভাতা, প্রশিক্ষণ উপলক্ষে উত্তোলিত অগ্রিম, ভ্রমণভাতা, অন্যান্য ভাতাদি ও তার প্রশিক্ষণের জন্য ব্যয় হওয়া সমুদয় অর্থ ফেরত দিতে তিনি বাধ্য থাকবেন। কর্মস্থল থেকে অব্যাহতি প্রদানকারী কর্তৃপক্ষের কাছে একটি অঙ্গীকারনামা দাখিল করে তাকে প্রশিক্ষণে যেতে হবে।
>> ইস্তফা সরকার গ্রহণ করার আগে যদি তিনি তার কর্তব্য ও কাজে অনুপস্থিত থাকেন, তবে তার কাছে সরকারের প্রাপ্য সমুদয় অর্থ আদায় করা হবে এবং সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
৪৩তম বিসিএস: অপেক্ষা ফুরাবে স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও গোয়েন্দা প্রতিবেদনের পর
৪৩তম বিসিএস: ক্যাডার ও নন–ক্যাডারে ২৮০৫ জনকে নিয়োগের সুপারিশ