তবে পাশের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের চারটি নির্দিষ্ট স্থানে পশু কোরবানি হয়েছে ১২০০টি।
Published : 17 Jun 2024, 08:52 PM
রাজধানীর মিরপুরের প্যারিস রোড মাঠে একই স্থানে কোরবানির পশু জবাইয়ের জন্য চালানো হয় প্রচারণা; ঘোষণা দেওয়া হয় প্রণোদনারও। তবে তাতেও খুব একটা সাড়া মেলেনি। অনেক হাঁকডাকের পর সেখানে কোরবানি হয়েছে ৫০ পশু।
প্রথমবারের মত পশু প্রতি এক হাজার টাকা প্রণোদনা দিয়ে পল্লবী এলাকার এ মাঠে ৫০০ পশু কোরবানির লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছিল ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন। ঈদের কয়েকদিন আগে থেকেই মাঠটিকে সেভাবে সাজানোও হয়েছিল। প্রস্তুতিও ছিল করপোরেশনের কর্মীদের। দিন শেষে সেই লক্ষ্যের পূরণ হয়েছে ১০ ভাগের এক ভাগ।
শুধু প্যারিস রোড মাঠেই নয়, যেখানে সেখানের পরিবর্তে একই স্থানে পশু কোরবানি করতে দুই সিটি করপোরেশনের গত কয়েক বছরের প্রচেষ্টায় এবারও নগরবাসীর আগ্রহ দেখা যায়নি।
তবে মিরপুরের ৭ নম্বর ওয়ার্ড রূপনগর আবাসিকে একই স্থানে আগের চেয়ে বেড়েছে পশু কোরবানির সংখ্যা।
ঢাকা উত্তর সিটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, ৭নং ওয়ার্ডের চারটি নির্দিষ্ট স্থানে ১২০০ পশু কোরবানি দেওয়া হয়েছে।
ঈদের দিন দুপুরে মিরপুর সেকশন-২ এ বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম উদ্বোধন করে মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, “আমরা ৩নং ওয়ার্ডে একটি নির্দিষ্ট স্থানে এবং ৭নং ওয়ার্ডে চারটি নির্দিষ্ট স্থানে কোরবানির উদ্যোগ নিয়েছি। সবাই একসাথে একটি নির্দিষ্ট জায়গায় কোরবানি দিলে পরিচ্ছন্ন কার্যক্রমটা অনেক সহজ হয়।
”৭নং ওয়ার্ডে ১২০০ পশু কোরবানি দেওয়া হয়েছে। একসঙ্গে এতগুলো পশু কোরবানি দেওয়ায় পরিচ্ছন্নতার কাজটা দ্রুত করা সম্ভব হচ্ছে।”
৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. তফাজ্জল হোসেন (টেনু) বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, কয়েক বছর ধরে এ এলাকায় চারটি নির্ধারিত স্থানে পশু কোরবানি দেওয়া হচ্ছে।
তবে তার এলাকায় নির্ধারিত স্থানে যারা কোরবানি দেন তাদের প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ”আমরা এরকম কোনো টাকা দেইনি। মেয়র সাহেব যখন দেবেন, তখন দেব।”
২০১৫ সালে নির্দিষ্ট স্থানে পশু কোরবানির ধারণা নিয়ে কাজ শুরু করে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন। শুরুতে নগরবাসীর খুব একটা সাড়া না পেলেও প্রত্যাশা ছিল বছর গড়ালে বাড়বে আগ্রহ। কিন্তু তা আর হয়নি।
২০২১ সালে নির্ধারিত স্থানে পশু জবাইয়ের ধারণা থেকে সরে আসে দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। এ বছর উত্তর সিটি করপোরেশনও নির্দিষ্ট স্থানে পশু জবাইয়ের উদ্যোগ থেকে বেরিয়ে এসেছে।
তবে এবার সীমিত পরিসরে দুয়েকটি মহল্লায় রাখা হয়েছে এই ব্যবস্থা। সেখানে মহল্লাবাসীর সঙ্গে আগেই যোগাযোগ করে তাদের পশু কোরবানির ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এবার তেমনই উদ্যোগ ছিল মিরপুরের প্যারিস মাঠে পশু কোরবানি করা নিয়ে। এ জন্য এক হাজার টাকা করে প্রণোদনাসহ আরও কিছু সহযোগিতা করার ঘোষণা দিয়ে প্রচারণা চালায় সিটি করপোরেশন।
ঢাকা উত্তর সিটির মিরপুর অঞ্চল ২ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান প্যারিস মাঠ নিয়ে তাদের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়ার কথা জানিয়ে বলেন, প্রায় পাঁচশত লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও ৫০টির মত পশু জবাই হয়েছে।
তিনি বলেন, এ এলাকার বাসিন্দাদের বড় অংশ বিহারী। তারা নিজের বাড়ির সামনে নিজেদের মত করেই পশু কোরবানি দিয়েছে। এছাড়া প্রচারণা কম হওয়ায় অনেকেই সেভাবে জানতে পারেননি। আবার মাঠটি সম্প্রতি বালু দিয়ে ভরাট করায় কিছুটা সমস্যাও ছিল।
আগামীতে এসব সমস্যা কাটিয়ে এখানে পশু কোরবানির আয়োজন পূণর্তা পাবে তার আশা।
আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা জিয়াউর বলেন, প্যারিস মাঠে যারা পশু এনে জবাই করেছেন তাদের প্রণোদনা হিসেবে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে এক হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে।
“তবে জবাই করার পর মাংস নিজ দায়িত্বে কেউ ভ্যানে করে, কেউ রিকশায় করে বাসায় নিয়ে গেছেন। এক্ষেত্রে ডিএনসিসির স্বেচ্ছাসেবীরা সহায়তা করেছেন।”
প্যারিস মাঠে কোরবানির এ আয়োজন নিয়ে এবারই প্রথম ডিএনসিসি পশু কোরবানির জন্য প্রণোদনার ব্যবস্থা করে। এ নিয়ে প্রচারণাও চালায়।
ঈদের দিনের এ আয়োজনের জন্য করপোরশেন মাঠটি বালু দিয়ে পূরণ করে শামিয়ানা টাঙিয়ে দেয়। স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ দেওয়া, পানির গাড়ি প্রস্তুত রাখা, কোরবানির পর দ্রুত বর্জ্য পরিষ্কার করাসহ নানা ব্যবস্থা গ্রহণ করে। এজন্য প্রায় আট লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়।