বছর দেড়েক আগে সিজারের সময় ওই দুই মৃত্যু ঘটে।
Published : 13 Mar 2025, 03:04 PM
নোয়াখালীর একটি হাসপাতালে ‘অবহেলায়’ মা ও নবজাতকের মৃত্যুতে ৫০ কোটি টাকা কেন ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়েছে হাই কোর্ট।
এ সংক্রান্ত একটি রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বৃহস্পতিবার বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি মুবিনা আসাফের বেঞ্চ রুল জারি করে।
রিটকারীর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী সোলায়মান তুষার; সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী বায়েজিদ হোসাইন ও নাঈম সরদার।
রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ শফিকুর রহমান, মাহফুজ বিন ইউসুফ, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল একরামুল কবির ও মো. ঈসা।
সোলায়মান তুষার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা ৫০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়েছি। শুনানি নিয়ে এ বিষয়ে রুল জারি করেছে। চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।”
গত ৫ ফেব্রুয়ারি নোয়াখালীর সেনবাগ প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক এম এ আউয়ালের পক্ষে রিট আবেদনটি করেন ব্যারিস্টার সোলায়মান তুষার।
মামলায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিলের রেজিস্ট্রার, বাংলাদেশ নার্সিং মিডওয়াইফারি কাউন্সিলের রেজিস্ট্রার, নোয়াখালী জেলা সিভিল সার্জন, নোয়াখালীর সাউথবাংলা হাসপাতাল, হাসপাতালের পরিচালক মহিউদ্দিন, নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জুনিয়র কনসালটেন্ট (অ্যানেস্থেসিয়া) আক্তার হোসেন অভি, তার স্ত্রী ও নোয়াখালী মেডিকেল অ্যাসিসট্যান্ট ট্রেনিং স্কুলের (ম্যাটস) জুনিয়র লেকচারার ফৌজিয়া ফরিদ, সাউথ বাংলা হাসপাতালের মেডিকেল সহকারী জাহিদ হোসেন ও সাউথ বাংলা হাসপাতালের ওটি ইনচার্জ সজিব উদ্দিন হৃদয়কে বিবাদী করা হয়েছে।
২০২৪ সালের ২৯ ডিসেম্বর সোলায়মান তুষার সংশ্লিষ্টদের আইনি নোটিস পাঠান।
নোটিসে বলা হয়, সাংবাদিক এম এ আউয়াল তার অন্তঃসত্ত্বা মেয়ে উম্মে সালমা নিশির চিকিৎসার জন্য ২০২৩ সালের ১৬ অক্টোবর রাতে সাউথ বাংলা হাসপাতালে যান। ওই সময় মেডিকেল সহকারী জাহিদ হোসেনের সহায়তায় ডা. অভি ও ডা. ফৌজিয়া রোগীর সিজার করেন। এ সময় ঘটনাস্থলেই মা ও সন্তানের মৃত্যু হয়।
নোটিসে বলা হয়, ওই রোগীর ভর্তির আনুষ্ঠানিকতা না সেরে কোনো রকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা না ছাড়াই এবং অভিভাবকের সম্মতি না নিয়েই তাড়াহুড়া করে ওই সিজার করা হয়।
নোটিসে আরও বলা হয়, ঘটনা ধামাচাপা দিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও চিকিৎসক ডা. অভি ও তার স্ত্রী ফৌজিয়া ফরিদ প্রসূতির অবস্থা সংকটাপন্ন জানিয়ে আইসিইউ সাপোর্টের কথা বলে কুমিল্লায় রেফার করেন। অভিভাবকরা তাকে কুমিল্লার টাওয়ার হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, অনেক আগেই রোগীর মৃত্যু হয়েছে।
নোটিসে এও বলা হয়, “হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও ডাক্তারদের ভুল ও অপচিকিৎসার কারণেই ভিকটিম ও নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে, যা সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১৮ ও ৩২ এর লঙ্ঘন। তারা এর দায় কোনোমতেই এড়াতে পারেন না।”
আইনি নোটিসে প্রসূতি উম্মে সালমা নিশি ও তার নবজাতক মৃত্যুর ঘটনায় ৫ দিনের মধ্যে ভুক্তভোগীর পরিবারকে ৫০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছিল।