স্বাধীনতা আন্দোলনের অনুপ্রেরণাদায়ী স্লোগানকে বিকৃত করায় কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের নিয়ে ক্ষোভ ঝেরেছেন অনেকেই।
Published : 15 Jul 2024, 02:19 PM
কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত যেসব শিক্ষার্থী ‘আমি রাজাকার’ স্লোগান তুলেছে, তারা এ যুগের ‘সাচ্চা রাজাকার' বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।
রোববার রাতে এক ফেইসবুক পোস্টে তিনি বলেন, “যাদের মুখ থেকে বের হয়, ‘আমি রাজাকার’—তারা প্রমাণ করছে তারা এ-যুগের ‘সাচ্চা’ রাজাকার! এরা আদালত মানে না, সরকারও মানে না।
“সুতরাং, এই রাষ্ট্রদ্রোহীদের পক্ষে এই রাষ্ট্রকে মানা সম্ভব না! সঠিক শ্লোগানই ধরেছে তারা! বের হয়ে আসুক এ যুগের রাজাকারদের আসল চেহারা!”
২০১৮ সালে সরকারি চাকরির প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে কোটা বাতিল করে জারি করা পরিপত্র হাই কোর্ট অবৈধ ঘোষণার প্রতিক্রিয়ায় শিক্ষার্থীরা দুই সপ্তাহ ধরে টানা আন্দোলন চালিয়ে আসছে। এর মধ্যে রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাফ জানিয়ে দেন, সরকারি চাকরিতে কোটার বিষয়টি আদালতেই ফয়সালা করতে হবে।
বক্তব্যের এক পর্যায়ে সরকারপ্রধান বলেন, “কোটা আন্দোলন করার আগে তো তাদের রেজাল্টগুলো দেখা উচিত ছিল যে- কোথায় তারা দাঁড়িয়েছে! দ্বিতীয়টি হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি তাদের এত ক্ষোভ কেন? মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি পুতিরা পাবে না, তাহলে কি রাজাকারের নাতি পুতিরা (চাকরি) পাবে?
“মুক্তিযোদ্ধাদের অপরাধটা কী? নিজের জীবন বাজি রেখে, নিজের পরিবার সংসার সব বাদ দিয়ে যারা মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিল, খেয়ে না খেয়ে, কাদা মাটিতে রোদ বৃষ্টি ঝড় সব উপেক্ষা করে যুদ্ধ করে এই দেশ স্বাধীন করেছে। মুক্তিযোদ্ধারা বিজয় এনে দিয়েছিল বলেই সবাই উচ্চপদে আসীন, আজকে বড় গলায় কথা বলতে পারছে। নইলে পাকিস্তানিদের বুটের লাথি খেয়ে মরতে হত।”
প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যে ‘মর্মাহত’ হয়ে রোববার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষালয়ে আন্দোলনকারীরা বিক্ষোভ দেখান; যেখানে স্লোগান দেওয়া হয়, ‘তুমি কে আমি কে, রাজাকার-রাজাকার’।
স্বাধীনতা আন্দোলনের অনুপ্রেরণাদায়ী স্লোগান ‘তুমি কে আমি কে? বাঙালি বাঙালি’র বিকৃতকারীদের দেশ ছাড়ার আহ্বান জানিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। ফেইসবুকে তিনি লিখেছেন, “একাত্তরের হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার; তোরা যারা রাজাকার, এই মুহূর্তে বাংলা ছাড়।”
ক্ষোভ জানিয়েছেন সমাজকল্যাণমন্ত্রী দীপু মনিও।
আওয়ামী লীগের এ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফেইসবুক পোস্টে বলেছেন, “যারা নিজেদেরকে রাজাকার বলে পরিচয় দেয়, তাদের মুক্তিযুদ্ধের শহীদের রক্তস্নাত লাল সবুজের পতাকা হাতে নিয়ে বা সে পতাকা কপালে বেঁধে নিয়ে মিছিল করবার কোনো অধিকার থাকতে পারে না।”