ছুটির দিন হওয়ায় এদিন আশপাশের সড়কে তেমন প্রভাব পড়েনি।
Published : 31 Jan 2025, 04:12 PM
স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাসহ সাত দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো সড়ক অবরোধ করেছেন ঢাকার সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা।
শুক্রবার দুপুর আড়াইটার দিকে কলেজের প্রধান ফটকের সামনে তারা এই কর্মসূচি শুরু করেন।
আন্দোলনকারীদের নেতা নায়েক নূর মোহাম্মদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আজকে আমরা তিতুমীরের গেটে থাকব। রাস্তা কিছুক্ষণের মধ্যে খুলে দেওয়া হবে।”
এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে ভোর পর্যন্ত তারা সড়ক অবরোধ করেন। তাতে আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় দিনভর ব্যাপক যানজট তৈরি হয়, চরম ভোগান্তিতে পড়েন হাজারো মানুষ।
সেদিন রাত পৌনে ৯টার দিকে কলেজের প্রধান ফটকের সামনে আন্দোলনরতদের সঙ্গে কথা বলেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব মো. নুরুজ্জামান।
দাবি-দাওয়া সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে তুলে ধরবেন, তার এমন আশ্বাসেও পথ ছাড়েননি শিক্ষার্থীরা। শুক্রবার ভোরে শিক্ষার্থীরা সড়ক ছেড়ে দিলেও তাদের কয়েকজন আমরণ অনশন কর্মসূচি চালিয়ে যান।
জুমার নামাজের পর তাদের সতীর্থরা একটি মিছিল নিয়ে মহাখালীর আমতলী ঘুরে এসে সড়ক অবরোধ করেন। তবে ছুটির দিন হওয়ায় এদিন আশপাশের সড়কে তেমন প্রভাব পড়েনি।
এ বিষয়ে গুলশান ট্রাফিক বিভাগ বিকাল সাড়ে ৩টায় ফেইসবুক পোস্টে বলেছে, “গতকালের ন্যায় আজকে কিছুক্ষণপূর্ব থেকে ছাত্র-ছাত্রীরা তিতুমীর কলেজের সামনের সড়ক বন্ধ করে দিয়ে আন্দোলন করছেন। ফলে মহাখালী-আমতলী হয়ে গুলশান-১ এর দিকে এবং গুলশান-১ থেকে আমতলীমুখী যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।”
এ পরিস্থিতিতে বিকল্প পথে চলাচলের অনুরোধ জানিয়ে ট্রাফিক পুলিশ বলছে, “বনানী-কাকলী থেকে জাহাঙ্গীর গেইটগামী চালক ও যাত্রীদের ফ্লাইওভার ব্যবহার করার জন্য অনুরোধ জানানো যাচ্ছে। এছাড়া মহাখালী থেকে আমতলী রাইট টার্ন করে যারা গুলশান-১ এর দিকে যাবেন তাদেরকে আমতলী হয়ে কাকলী-বনানীর দিকে সোজা গিয়ে কাকলী ক্রসিং অথবা আরও সামনে গিয়ে ইউটার্ন নিয়ে বনানী-গুলশান ২ এর সড়ক ব্যবহার করার জন্য অনুরোধ জানানো যাচ্ছে।
“আর বনানী-কাকলী থেকে আমতলীর দিকে যারা যাবেন, তারা সোজা মহাখালী টার্মিনাল এর দিক দিয়ে যেতে পারবেন।”
আন্দোলনকারীদের প্ল্যাটফর্ম ‘তিতুমীর ঐক্য’র সাত দফা দাবির মধ্যে রয়েছে, রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রকাশ, ‘বিশ্ববিদ্যালয়’ প্রশাসন গঠন করে ২৪-২৫ সেশনের ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা, শতভাগ শিক্ষার্থীর আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত না হলে অনতিবিলম্বে শতভাগ শিক্ষার্থীর আবাসিক খরচ বহন করা।
এছাড়া ২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ন্যূনতম আইন এবং সাংবাদিকতা বিষয় সংযোজন, অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য যোগ্যতাসম্পন্ন পিএইচডিধারী শিক্ষক নিয়োগ, শিক্ষার গুণগতমান শতভাগ বাড়াতে আসন সংখ্যা সীমিত এবং আন্তর্জাতিক মানের গবেষণাগার বিনির্মাণে জমি ও আর্থিক বরাদ্দ নিশ্চিত করার দাবিও রয়েছে অনশনে থাকা শিক্ষার্থীদের।
এর আগে গত সোমবার রাতে ‘তিতুমীর ঐক্য’র তরফে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কাঠামো গঠনে ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দেওয়া হয়। দাবি মানা না হলে বৃহস্পতিবার থেকে মহাখালীতে সড়ক ও রেলপথ অবরোধের ঘোষণাও দেওয়া হয় তখনই।
আন্দোলনকারীরা এর আগে ৭ জানুয়ারি শিক্ষালয়টির প্রধান ফটকে 'তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয়' লেখা ব্যানার টানিয়ে দেন।
একই দাবিতে গত ১৮ নভেম্বর মহাখালীর আমতলী, কাঁচাবাজার ও রেলক্রসিংয়ে শত শত শিক্ষার্থী জড়ো হয়ে অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন। পরদিন ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে 'ক্লোজডাউন তিতুমীর' কর্মসূচি দেন তারা।
এরপর ৩ ডিসেম্বর তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে ওই কমিটি 'যথাযথভাবে' কাজ করছে না বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।