“আমরা নাম নিয়ে চিন্তিত না; নাম আমাদের কাছে বিষয় না,” দখলদার কে- সেই প্রসঙ্গে বলেন তিনি।
Published : 12 Oct 2022, 09:49 PM
সব দখলদারকেই খালের জায়গা ছেড়ে দিতে হবে বলে হুঁশিয়ার করেছেন দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস।
বুধবার রাজধানীর কালুনগর স্লুইস গেইট সংলগ্ন এলাকায় আদি বুড়িগঙ্গা চ্যানেলের সীমানা নির্ধারণ কার্যক্রমের উদ্বোধন শেষে এ হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
দখলদার কে- সেই চিন্তা করার প্রয়োজন নেই মন্তব্য করে মেয়র বলেন, “আমরা নাম নিয়ে চিন্তিত না। নাম আমাদের কাছে বিষয় না।
“আপনারা লক্ষ্য করেছেন, এখানে ১০তলা ভবন হয়ে গেছে। আজ থেকে ভাঙার কাজ শুরু হবে। আগামী বুধবার আবার পরিদর্শনে আসব। আমরা আশা করি, (অবৈধ ভবনের) যে অংশটা খালের মধ্যে বা নদীর মধ্যে পড়েছে সে অংশটা থাকবে না।”
কেউ অবৈধ দখল না ছাড়লে তা ভেঙে দেওয়া হবে জানিয়ে তিনি বলেন, “সবাইকে ছেড়ে দিতে হবে। এতদিন যে দখল করে খেয়েছে সেটা এখন থেকে ছেড়ে দিতে হবে। আর যদি না ছাড়ে তাহলে আমরা এটা ভেঙে দেব।”
গত মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় দক্ষিণ সিটির চারটি খালের সংস্কার করে জলাবদ্ধতা দূর করার পাশাপাশি সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য প্রায় ৮৯৯ কোটি টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদন দেয় সরকার।
এর আওতায় কালুনগরসহ জিরানী, মাণ্ডা ও শ্যামপুর খাল রয়েছে। এ প্রকল্পের অংশ হিসেবে কালুনগরে আদি বুড়িগঙ্গা চ্যানেলের সীমানা নির্ধারণ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন তাপস।
সংশ্লিষ্ট সব সংস্থাকে সঙ্গে নিয়ে সীমানা নির্ধারণ পরিচালিত হচ্ছে জানিয়ে তাপস বলেন, “আদি বুড়িগঙ্গা পুনরুদ্ধারে আমরা বিশাল কর্মযজ্ঞ শুরু করেছি। আমরা এরই মাঝে খনন কাজ আরম্ভ করেছি।
“আজকে থেকে আমরা পূর্ণাঙ্গভাবে আমাদের জেলা প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ড, বিআইডব্লিউটিএ, আমাদের সম্পত্তি বিভাগ ও অন্যান্য সংস্থাসহ সকলেই যৌথভাবে আমরা পরিমাপ করছি। সীমানা চিহ্নিত করেছি। আজকে থেকেই আমরা সেই সীমানা চিহ্নিতকরণ এবং স্থায়ীভাবে সীমানা পিলার লাগিয়ে দেব।
“আমরা আশাবাদী, এই কার্যক্রম ইনশাআল্লাহ অচিরেই দৃশ্যমান হবে এবং আদি বুড়িগঙ্গা তার সেই পূর্বের অবস্থানে ফিরে আসতে পারবে।"
আদি বুড়িগঙ্গার স্থায়ী পুনরুদ্ধারের দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে শেখ তাপস বলেন, "আদি বুড়িগঙ্গার সিএস এবং অন্যান্য নকশা অনুযায়ী নদীর অববাহিকা বা নদীর সীমানা যেখানে বেশি আছে আমরা সেটাকে ধরছি। সেটাকেই ধরে আমরা সকল অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ করব।
“সেখানে নদীর অববাহিকা ও নদীর গতিপথ সৃষ্টি করে আমরা তার পাশ দিয়ে নান্দনিক পরিবেশ সৃষ্টি করব। যাতে করে মানুষজন হেঁটে, সাইকেল চালিয়ে চলাফেরা করতে পারে। আমরা গণপরিসর প্রতিষ্ঠা করব যাতে করে মানুষজন নদীকে উপভোগ করতে পারে এবং ঢাকার পূর্বের সেই প্রতিচ্ছবি ফিরে আসে।"
‘নিয়ন্ত্রণে ডেঙ্গু’
এসময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়েও কথা বলেন মেয়র তাপস।
তিনি বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রভাবের কারণে আজ আশ্বিন মাসের ২৭ তারিখ হওয়া সত্ত্বেও এখনও বৃষ্টি হচ্ছে। এখনও আমরা বৃষ্টির মধ্যে দাঁড়িয়ে আছি।
“যার কারণে আমরা লক্ষ্য করছি যে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব এখনও রয়েছে। কিন্তু গত ১০ অক্টোবরের হিসাব অনুযায়ী (সারাদেশে মোট) ৬৪২ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে। তার মধ্যে মাত্র ৪০ জন হল ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের। সুতরাং আমাদের সার্বক্ষণিক যে কার্যক্রম চলছে, তাতে আমরা ডেঙ্গুকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হয়েছি।”
অনেক প্রতিকূলতা রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “ডেঙ্গু পূর্ণরূপে নিয়ন্ত্রণ না হওয়া পর্যন্ত, প্রাদুর্ভাব নেমে না আসা পর্যন্ত আমরা আমাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাব।"
এর আগে দক্ষিণের মেয়র ডগাইর এলাকার ৬৬ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্বর্তীকালীন বর্জ্য স্থানান্তর কেন্দ্রের (এসটিএস) উদ্বোধন করেন।
এসময় ঢাকা ৫ আসনের সংসদ সদস্য কাজী মনিরুল ইসলাম মনু, সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদ আহাম্মদ, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমডোর সিতওয়াত নাঈম, সচিব আকরামুজ্জামান, প্রধান প্রকৌশলী সালেহ আহম্মেদ, প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা রাসেল সাবরিন, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা আরিফুল হক, ঢাকার জেলা প্রশাসক মো. শহিদুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।