ধর্ষণের অভিযোগে এক কিশোরী গোলাম কিবরিয়া ওরফে বড় মনির বিরুদ্ধে মামলা করেন; তার স্ত্রীকেও সেখানে আসামি করা হয়।
Published : 21 Aug 2023, 01:33 PM
এক কিশোরীকে ধর্ষণের মামলায় টাঙ্গাইল শহর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি গোলাম কিবরিয়া ওরফে বড় মনিকে হাই কোর্টের দেওয়া জামিন ৯ অক্টোবর পর্যন্ত স্থগিত রেখেছে আপিল বিভাগ।
সেই সঙ্গে এই সময়ের মধ্যে মামলার বাদী ওই কিশোরীর নবজাতকের ডিএনএ পরীক্ষার প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ সোমবার এ আদেশ দেয়।
রাষ্ট্রপক্ষে এদিন আদালতে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পী। বড় মনির পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট সাঈদ আহমেদ রাজা।
রাষ্ট্রপক্ষ আদালতকে জানায়, বড় মনি ‘প্রভাবশালী’ হওয়ায় কিশোরীর নবজাতকের ডিএনএ পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহে বিঘ্ন ঘটছে। এ সময় আদালত আসামিপক্ষের আইনজীবীদের ডিএনএ পরীক্ষায় সহযোগিতা করতে বলে।
ধর্ষণের অভিযোগে ৫ এপ্রিল রাতে এক কিশোরী আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম কিবরিয়া ওরফে বড় মনির বিরুদ্ধে মামলা করেন। এ মামলায় বড় মনিরের স্ত্রী নিগার আফতাবকেও (৩৫) আসামি করা হয়।
গোলাম কিবরিয়া বড় মনি (৪৮) টাঙ্গাইল জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির মহাসচিব ও শহর আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি। তিনি টাঙ্গাইল-২ আসনের সংসদ সদস্য তানভীর হাসান ছোট মনিরের বড় ভাই।
টাঙ্গাইলে আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা কিশোরীর
ধর্ষণ মামলায় টাঙ্গাইলের আওয়ামী লীগ নেতা বড় মনি কারাগারে
মামলার নথি থেকে জানা যায়, সম্পত্তি নিয়ে ভাইয়ের সঙ্গে বিরোধ হলে ওই কিশোরী বিষয়টি বড় মনিকে জানান। কিবরিয়া সমস্যা সমাধান করে দেওয়ার আশ্বাস দেন। এ বিষয়ে কথা বলার জন্য গত ১৭ ডিসেম্বর শহরের আদালত পাড়ায় একটি ১০ তলা ভবনের চতুর্থ তলার ফ্ল্যাটে কিশোরীকে যেতে বলেন।
কিশোরীর অভিযোগ, সেখানে যাওয়ার পর তার মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে একটি কক্ষে আটকে রেখে ‘ধর্ষণ’ করেন বড় মনি। ঘটনা প্রকাশ করলে ‘মেরে ফেলার হুমকি’ দেন।
প্রথমবার ‘ধর্ষণের সময় তোলা ছবি দেখিয়ে’ বড় মনি পরে আরও কয়েকবার ‘ধর্ষণ করেন’ বলে মামলায় অভিযোগ করেছেন কিশোরী।
মামলায় তিনি বলেছেন, ধর্ষণের ফলে তিনি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। এ কথা গোলাম কিবরিয়া ওরফে বড় মনিকে জানালে তাকে গর্ভের সন্তান নষ্ট করার জন্য চাপ ও হুমকি দিতে থাকেন ওই আওয়ামী লীগ নেতা।
তাতে রাজি না হওয়ায় গত ২৯ মার্চ রাত ৮টার দিকে বড় মনি ওই কিশোরীকে ‘তুলে নিয়ে যান’ এবং একটি কক্ষে তালাবন্ধ করে রেখে আবারও ‘ধর্ষণ’ করেন। তার স্ত্রী নিগার আফতাবও সেখানে ওই কিশোরীকে ‘মারপিট’ করেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে মামলায়।
পরে মেয়েটির একটি সন্তান হয়। এ মামলায় গত ১৫ মে টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম মো. মাহমুদুল মহসীনের আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন বড় মনি। বিচারক তা নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এরপর বড় মনি হাই কোর্ট থেকে জামিন পেলেও রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে চেম্বার আদালত জামিন স্থগিত করে। সেই সঙ্গে ওই নারীর গর্ভে জন্ম নেওয়া নবজাতকের ডিএনএ পরীক্ষার আদেশ দেয় চেম্বার আদালত। ২১ অগাস্ট ডিএনএ পরীক্ষার প্রতিবেদন আপিল বিভাগে দাখিল করতে বলা হয় সে সময়।