অরিত্রীর আত্মহত্যা: রায় পেছাল তৃতীয় দফা

রায় প্রস্তুত না হওয়ায় বিচারক আগামী ৯ এপ্রিল নতুন দিন ঠিক করেছেন।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 March 2024, 07:59 AM
Updated : 3 March 2024, 07:59 AM

রাজধানীর বেইলি রোডের ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী অরিত্রী অধিকারীকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার মামলায় প্রতিষ্ঠানটির দুই শিক্ষকের রায় তৃতীয় দফা পিছিয়েছে।

ঢাকার দ্বাদশ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আব্দুল্লাহ আল মামুনের আদালতে রোববার এ মামলার রায় হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু রায় প্রস্তুত না হওয়ায় বিচারক আগামী ৯ এপ্রিল নতুন দিন ঠিক করে দিয়েছেন।

বাদী ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে গত ২৭ নভেম্বর এ মামলা রায়ের পর্যায়ে আসে।

প্রথমে রায়ের জন্য ২১ জানুয়ারি তারিখ দিয়েছিল আদালত। ওইদিন রায় প্রস্তুত না হওয়ায় তা পিছিয়ে ৮ ফেব্রুয়ারি ঠিক করা হয়। কিন্তু ওই দিনও একই কারণে তা পিছিয়ে ৩ মার্চ ঠিক করা হয়। এদিনও রায় হল না।  

মামলার দুই আসামি ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের তখনকার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌস এবং শাখা প্রধান জিনাত আক্তার জামিনে রয়েছেন। এদিন তারা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

দোষী সাব্যস্ত হলে দণ্ডবিধির ৩০৬ ধারার এ মামলার তাদের সর্বোচ্চ দশ বছর কারাদণ্ড, সঙ্গে অর্থদণ্ড হতে পারে।

কী ঘটেছিল

২০১৮ সালে ৩ ডিসেম্বর শান্তিনগরের বাসায় গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী অরিত্রী (১৫)। তার আগের দিন পরীক্ষায় নকল করার অভিযোগে তাকে পরীক্ষা হল থেকে বের করে দিয়েছিল স্কুল কর্তৃপক্ষ।

স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, অরিত্রী পরীক্ষায় মোবাইল ফোনে নকল নিয়ে টেবিলে রেখে লিখছিল। অন্যদিকে স্বজনদের দাবি, নকল করেনি অরিত্রী। 

এরপর অরিত্রীর বাবা-মাকে ডেকে নেওয়া হয় স্কুলে। তখন অরিত্রীর সামনে তার বাবা-মাকে অপমান করা হয়েছিল বলে অভিযোগ ওঠে। ওই দিনই আত্মহত্যা করেন অরিত্রী।

অরিত্রীর আত্মহত্যার পর তার সহপাঠীরা বিক্ষোভে নামে।

৪ ডিসেম্বর তার বাবা দিলীপ অধিকারী আত্মহননে প্ররোচনার অভিযোগ এনে মামলা করেন। ওই মামলায় অরিত্রীর শিক্ষকদের পুলিশ গ্রেপ্তারও করলেও পরে তারা জামিন পান।

মামলার এজাহারে অরিত্রীর বাবা লেখেন, স্কুল কর্তৃপক্ষ মেয়ের সামনে তাদের অপমান করে। ওই অপমান এবং পরীক্ষা দিতে না পারার মানসিক আঘাত সইতে না পেরে অরিত্রী আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়।

তদন্ত শেষে ২০১৯ সালের ২৮ মার্চ নাজনীন ও জিনাতকে আসামি করে মামলার অভিযোগপত্র জমা দেন তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক কামরুল হাসান তালুকদার।

সেখানে বলা হয়, আসামিদের ‘নির্দয় ব্যবহার ও অশিক্ষকসুলভ আচরণ’ অরিত্রী অধিকারীকে আত্মহত্যায় প্ররোচিত করে।

মামলার এজাহারে অরিত্রীর শ্রেণি শিক্ষক হাসনা হেনাও আসামি ছিলেন। তবে অভিযোগপত্রে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

এরপর ২০১৯ সালের ১০ জুলাই অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে নাজনীন ফেরদৌস ও জিনাত আক্তারের বিচার শুরু করে আদালত।

মামলার ১৮ সাক্ষীর মধ্যে ১৫ জনের সাক্ষ্য নেন ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ রবিউল আলম।

অরিত্রীর বাবা, মামলার বাদী দিলীপ অধিকারী, মা বিউটি অধিকারী, অরিত্রীদের বাড়ির নৈশ প্রহরী শুকদেব, অরিত্রীর বাবার সহকর্মী সনজয় অধিকারী, প্রতিবেশী মেরিনা মণ্ডল সাক্ষ্য দিয়েছেন এ মামলায়।

পুরনো খবর:

Also Read: অরিত্রীর আত্মহত্যা: পেছাল দুই শিক্ষকের রায়

Also Read: অরিত্রীর আত্মহত্যা: ২ শিক্ষকের বিচারের রায় ফের পেছাল

অরিত্রীর আত্মহত্যা: ২ শিক্ষকের বিচারের রায় ২১ জানুয়ারি

অরিত্রীর আত্মহত্যা: ভিকারুননিসার ২ শিক্ষকের বিচার শুরু

অরিত্রীর আত্মহত্যা: পিছিয়ে গেল অভিযোগ গঠনের শুনানি

শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যা প্রতিরোধে নীতিমালা করতে কমিটি

অরিত্রীর আত্মহত্যা: আত্মসমর্পণ করে জামিন পেলেন দুই শিক্ষক

অরিত্রীর শিক্ষক হাসনা হেনার জামিন

ভিকারুননিসার ‘থলের বিড়াল’

ভিকারুননিসায় নতুন অধ্যক্ষ, প্রভাতী শাখায় নতুন প্রধান

ভিকারুননিসার অধ্যক্ষসহ ৩ শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা

অরিত্রীর আত্মহত্যার আগে ‘অপমানের’ মুহূর্তগুলো