শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যাসহ যে কোনো ধরনের ‘ইনজুরি’ প্রতিরোধে জাতীয় নীতিমালার খসড়া তৈরির জন্য একটি কমিটি করেছে সরকার।
Published : 06 Mar 2019, 02:53 PM
ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী অরিত্রী অধিকারীর আত্মহত্যার পর উচ্চ আদালতের নির্দেশনার আলোকে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ মঙ্গলবার সাত সদস্যের এই কমিটি গঠন করে।
কমিটিকে আগামী এক মাসের মধ্যে নীতিমালার খসড়া মতামতসহ মন্ত্রণালয়ে দাখিল করতে বলা হয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সুইসাইড/বুলিংসহ যে কোনো ধরনের ‘ইনজুরি’ প্রতিরোধ এবং শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে এ বিষয়ে কাউন্সেলিং সেবা দেওয়ার বিষয়ে সুপারিশ থাকবে সেখানে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (মাধ্যমিক-২) জাবেদ আহমেদকে আহ্বায়ক করে গঠিত এই কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. আবুল আমিন, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের উপসচিব মাকসুদা হোসেন, আইন ও বিচার বিভাগের জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব মোল্যা সাইফুল আলম।
এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মো. কামাল উদ্দিন, রাজধানীর সরকারি ল্যাবরেটরি স্কুলের প্রধান শিক্ষককে কমিটির সদস্য করা হয়েছে। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালককে (মাধ্যমিক) সদস্য সচিবের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
গতবছর ৩ ডিসেম্বর শান্তিনগরে নিজের বাসায় গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী অরিত্রী। তার আগের দিন পরীক্ষায় নকল করার অভিযোগে তাকে পরীক্ষা হল থেকে বের করে দিয়েছিল স্কুল কর্তৃপক্ষ।
স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, অরিত্রী পরীক্ষায় মোবাইল ফোনে নকল নিয়ে টেবিলে রেখে লিখছিল। অন্যদিকে স্বজনদের দাবি, নকল করেনি অরিত্রী।
এরপর অরিত্রীর বাবা-মাকে ডেকে নেওয়া হয় স্কুলে। তখন অরিত্রীর সামনে তার বাবা-মাকে অপমাণ করা হয়েছিল বলে অভিযোগ ওঠে। অরিত্রীর স্বজনরা বলছেন, বাবা-মার ‘অপমান সইতে না পেরে’ ঘরে ফিরে আত্মহত্যা করে এই কিশোরী।
অরিত্রীর মৃত্যুর ঘটনায় রাজধানীর বেইলি রোডের নামি এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে পরে ওই তিন শিক্ষককে সরিয়ে দেওয়া হয়।
বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত অরিত্রীর আত্মহত্যার খবর নজরে আনা হলে শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যা প্রতিরোধের উপায় নির্ণয়ে একটি জাতীয় নীতিমালা তৈরির নির্দেশ দেয় হাই কোর্ট।
ওই কমিটিকে অরিত্রীর আত্মহত্যার কারণ অনুসন্ধান করেও প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেয় আদালত।