জানুয়ারি প্রথম দিনই ১ লাখ ৮৯ হাজার শিক্ষক-কর্মচারী ইএফটিতে বেতন-ভাতার ‘বার্তা’ পাবেন।
Published : 30 Dec 2024, 08:12 PM
জানুয়ারি মাস থেকে বেসরকারি স্কুল ও কলেজের ২ লাখ ৮৯ হাজার শিক্ষক-কর্মচারীর বেতন-ভাতার সরকারি অংশ বা এমপিও ইলেক্ট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার সিস্টেমে (ইএফটি) ছাড় করবে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর।
আগামী ১ জানুয়ারি এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা ইএফটিতে ছাড় করা শুরু হবে। সেদিন ১ লাখ ৮৯ হাজার শিক্ষক-কর্মচারী ইএফটিতে বেতন-ভাতা পাওয়ার ‘বার্তা’ পাবেন।
সেদিনই অথবা পরদিন শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতার টাকা তাদের অ্যাকাউন্টে জমা হবে। আর জানুয়ারির প্রথমাংশে আরও ১ লাখ শিক্ষক ইএফটিতে ডিসেম্বর মাসের বেতন-ভাতা পাবেন বলে জানিয়েছে অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
শিক্ষকদের দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে বেসরকারি স্কুল-কলেজের ৩ লাখ ৮০ হাজার শিক্ষক-কর্মচারীর এমপিও আগামী জানুয়ারি মাস থেকে ইএফটি প্রক্রিয়ায় পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এজন্য শিক্ষক-কর্মচারীদের তথ্য সংগ্রহ ও যাচাই-বাছাই করা হয়েছে।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মাধ্যমিক উইংয়ের পরিচালক অধ্যাপক ড. খান মইনুদ্দিন আল মাহমুদ সোহেল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “জানুয়ারি মাস থেকেই বেসরকারি স্কুল-কলেজের এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন ইএফটিতে ছাড় করা হবে। আগামী ১ জানুয়ারি এ কার্যক্রমের উদ্বোধন ঘোষণা করা হবে।”
সোমবার রাতে শিক্ষকদের তথ্য যাচাই কমিটির প্রধান এবং অধিদপ্তরের অর্থ ও ক্রয় উইংয়ের পরিচালক অধ্যাপক মো. মোজাক্কার হোসেন চৌধুরী বলেন, “আমরা ১ লাখ ৮৯ হাজার এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীর তথ্য এনআইডি সার্ভার থেকে যাচাই করে নিশ্চিত হয়েছি। আগামী ১ জানুয়ারি থেকে তাদের ডিসেম্বর বেতন-ভাতা ইএফটিতে ছাড় করা হবে।
“এ শিক্ষক-কর্মচারীরা ১ জানুয়ারি ইএফটির মেসেজ পেয়ে যাবেন। আর ২ জানুয়ারি তাদের অ্যাকাউন্টে বেতন-ভাতার টাকা ঢুকবে। আমরা চেষ্টা করছি যেন এদিনই তাদের অ্যাকাউন্টে বেতন-ভাতার টাকা ছাড় করা যায়।”
তিনি আরও বলেন, “আরও ১ লাখ শিক্ষক-কর্মচারীর তথ্য এনআইডির সার্ভার থেকে যাচাই হয়ে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহেই আমাদের হাতে এসে পৌঁছাবে। আমরা তাদের বেতন-ভাতাও জানুয়ারি মাস থেকে ছাড় করব। জানুয়ারি প্রথম সপ্তাহেই তাদের ডিসেম্বর মাসের বেতন-ভাতা ইএফটির মাধ্যমে ছাড় হয়ে যাবে।
“বেসরকারি স্কুল-কলেজের ৩ লাখ ৮০ হাজার শিক্ষক-কর্মচারীর মধ্যে ২ লাখ ৮৯ হাজার শিক্ষক-কর্মচারীর তথ্য আমরা যাচাই করছি। আর ২৭ হাজার শিক্ষক-কর্মচারীর তথ্য আমরা পাইনি। তাদের মধ্যে ডাবল-এমপিও, মৃত্যুবরণ বা চাকরি ছেড়ে দেওয়ারা থাকতে পারেন। আর অন্যান্য শিক্ষক-কর্মচারীর তথ্য পেলেও তাতে ত্রুটি আছে, যেগুলো সংশোধনের প্রক্রিয়া চলছে।”
সরকারি কর্মচারীরা ইএফটিতে বেতন-ভাতা পান। অন্যদিকে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা সরকারি কোষাগার থেকে ছাড় হলেও তা রাষ্ট্রায়ত্ত আটটি ব্যাংকের মাধ্যমে অনেকটা ‘অ্যানালগ’ পদ্ধতিতে ছাড় হয়।
ব্যাংকগুলো মাধ্যমে বেতন-ভাতা ছাড়ের জন্য কয়েক পর্যায়ে অনুমোদনসহ সংশ্লিষ্ট কাজে অনেক ক্ষেত্রেই এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বেতন-ভাতা পেতে দেরি হয়। অনেক সময় পরের মাসের ১০ তারিখের পরও আগের মাসের বেতন-ভাতা জোটে।
বিগত সময়ে ঈদের পরে ঈদ উৎসব ভাতা পাওয়ার মত ‘বিব্রতকর’ পরিস্থিতিতেও পড়তে হয়েছে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের। ফলে তারাও সরকারি কর্মীদের মত মাসের শুরুতে ইএফটির মাধ্যমে বেতন-ভাতা পাওয়ার দাবি জানিয়ে আসছিলেন।
এ পরিপ্রেক্ষিতে গত ৫ অক্টোবর বিশ্ব শিক্ষক দিবসে ইএফটিতে বেসরকারি শিক্ষকদের এমপিওর বেতন-ভাতা দেওয়ার ঘোষণা দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। প্রাথমিকভাবে বেসরকারি এমপিওভুক্ত স্কুল-কলেজের ২০৯ জন শিক্ষক-কর্মচারীর অক্টোবর মাসের এমপিও ইএফটিতে ছাড় হয়।
এদিকে মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষকদের এমপিও ইএফটিতে বেতন-ভাতা দেওয়ার প্রক্রিয়াও শুরু করেছে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর ও কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর।
আরও পড়ুন :
ইএফটিতে শিক্ষকদের বেতন: বাড়ল তথ্য অন্তর্ভুক্তির সময়
জানুয়ারি থেকে স্কুল-কলেজের সব শিক্ষকের এমপিও ইএফটিতে