পল্টনে মামলা হয়েছে, শাহবাগ ও রমনাতেও মামলার প্রস্তুতি চলছে। এ পর্যন্ত মোট ২৬০ জন আনসার সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
Published : 26 Aug 2024, 03:22 PM
জাতীয়করণের দাবিতে আনসার সদস্যদের সচিবালয় ঘেরাও এবং ছাত্রদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় রাজধানীর পল্টন থানায় মামলা হয়েছে। মামলার প্রক্রিয়ায় চলছে শাহবাগ ও রমনা থানাতেও।
গত রোববার সচিবালয়ের সামনে আনসারদের সাথে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। বিভিন্ন দাবিতে আনসার সদস্যরা সচিবালয়ের গেটে অবস্থান নেওয়া এবং স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সাথে সাক্ষাতের পরেও আন্দোলন অব্যাহত রাখায় সন্ধ্যার পরে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
পল্টন থানার ওসি মোল্লা মো. খালিদ হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তার থানায় পুলিশ বাদী হয় ১১৪ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেছে। সেখানে অজ্ঞতনামা আরো তিন থেকে চার হাজার আনসার সদস্যদকে আসামি করা হয়েছে।
সরকারি কাজে বাধা, দাঙ্গা- হাঙ্গামা অগ্নিসংযোগের অভিযোগ আনা হয়েছে এ মামলায়। ইতোমধ্যে ৯৫ জনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে বলে জানান ওসি।
অন্যদিকে একই অভিযোগে শাহবাগ এবং রমনা থানায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের অতিরিক্ত কমিশনার ওবায়দুর রহমান।
তিনি বলেন “আন্দোলনে অংশ নেওয়া আনসার সদস্যদের বিরুদ্ধে এই দুই থানায় শিগগিরই মামলা রেকর্ড হবে। গতকালের ঘটনায় এ পর্যন্ত মোট ৩৭১ জন আনসার সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে শাহবাগে ১৯১ জন, রমনায় ৮৫ জন, পল্টনে ৯৫ জন।”
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকারের কাছ থেকে দাবি আদায়ে পেশাজীবীদের বিভিন্ন পক্ষের আন্দোলনের মধ্যে গত বুধবার চাকরি জাতীয়করণ করার দাবি নিয়ে মাঠে নামে আনসার সদস্যরা।
এই দাবিতে রোববার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনের সড়কে অবস্থান নিয়ে সমাবেশ শুরু করেন আনসার সদস্যরা। পরে তারা সচিবালয় ঘেরাও করেন।
এই পরিস্থিতিতে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন সচিবালয়ের কর্মীরা। আনসারের প্রতিনিধিরা দুই দফা সচিবালয়ের ভেতরে গিয়ে সরকারের উপদেষ্টাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। দাবি পূরণের আশ্বাস পেলেও তারা তাৎক্ষণিকভাবে প্রজ্ঞাপন জারির দাবি তুলে অবস্থান ধরে রাখেন।
রাত ৯ টার দিকে সচিবালয়ের ভিতরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহর অবরুদ্ধ হওয়ার খবরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি থেকে মিছিল নিয়ে এসে একদল শিক্ষার্থী সচিবালয়ের সামনে গিয়ে আনসারদের ধাওয়া করেন। সেখানে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যায়।
পরে শিক্ষার্থী ও পুলিশ মিলে আনসারদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় ওই এলাকা থেকে। রাতে ঘটনাস্থলে যায় সেনাবাহিনী। পরে দিনভর সচিবালয়ে অবরুদ্ধ থাকা ব্যক্তিরা বেরিয়ে আসেন।
সংঘর্ষে ৬০ জনের বেশি শিক্ষার্থী আহত হওয়ার তথ্য তুলে ধরে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হামলাকারী আনসারদের গ্রেপ্তারের দাবি জানায় বৈষম্যিবরোধী ছাত্র আন্দোলন।
আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল সোমবার আহত শিক্ষার্থীদের দেখতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, “আপনারা তাদের (আনসারদের) যুদ্ধাংদেহী মনোভাব দেখেছেন। তাদের দাবি ছিল এক্ষুণি রাত ১০টার সময় প্রজ্ঞাপন করে তাদের জাতীয়করণ করতে হবে।
“তারা (আনসার) এমন একটা অসম্ভব দাবি তুলেছিল, অবাস্তব এবং অসম্ভব দাবি করেছিল গণ্ডগোল করার জন্য, সারা সচিবালয় ঘেরাও করে রেখেছিল। হয়ত আরও অনেকে যোগ দিত। ভয়াবহ পরিস্থিতি হতে পারত।”