বিকাল ৩টায় গণজমায়েতের মূল আয়োজন শুরু হলেও সকাল থেকেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আসতে শুরু করেন অনেকে।
Published : 12 Apr 2025, 01:22 PM
ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশে ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচি ঘিরে ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ব্যাপক জমায়েতের বিষয়টি মাথায় রেখে তৎপর রয়েছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
শনিবার বিকাল ৩টায় গণজমায়েতের মূল আয়োজন শুরু হলেও সকাল থেকেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আসতে শুরু করেন অনেকে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সেখানে জমায়েতও বড় হচ্ছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) বলছে, যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে তাদের বাড়তি সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন। পুলিশের পাশাপাশি র্যাব, সেনাবাহিনী, বিজিবি সদস্যরা মেতায়েন রয়েছেন। সাদা পোশাকের পুলিশ ও গোয়েন্দা বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন।
এদিন সকাল থেকেই বাংলামোটর, শাহবাগ, টিএসসি, দোয়েল চত্বর ও মৎস্য ভবন এলাকা জুড়ে বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বিভিন্ন প্রবেশপথে বসানো হয়েছে তল্লাশি চৌকি, সন্দেহ হলেই আগতদের তল্লাশি করা হচ্ছে।
ডিএমপি রমনা বিভাগের উপকমিশনার মো. মাসুদ আলম বলেন, “এই কর্মসূচি ঘিরে আমাদের সর্বোচ্চ প্রস্তুতি রয়েছে, পর্যাপ্ত পুলিশ সদস্য মোতায়েনসহ অন্যান্য বাহিনীর সদস্যরা মোতায়েন রয়েছেন। আমরা সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছি।
“আয়োজকদের যে পাঁচটি স্টার্টিং পয়েন্ট রয়েছে সেই পয়েন্টগুলো থেকে শুরু করে একেবারে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান পর্যন্ত আমাদের পর্যাপ্ত সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন।”
ডিএমপি ট্রাফিক রমনা বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার কাজী রোমানা নাসরিন বলেন, “ব্যাপক জমায়েতের বিষয়টি মাথায় রেখে আমাদেরও প্রস্তুতি রয়েছে। যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে মাঠপর্যায়ের সদস্যরা কাজ করছেন।”
তবে ‘প্রয়োজনে’ ডাইভারসন দেওয়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, “এখনও ডাইভারসন লাগছে না, যদি প্রয়োজন হয় কাটাবন, বাংলামোটর, মৎস্যভবন মোড়ে ডাইভারসন দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। প্রয়োজনে আরেকটু পিছিয়ে সায়েন্সল্যাব এবং রাসেল স্কয়ারেও ডাইভারসন দেওয়া হতে পারে।”
ডাইভারসন চলাকালীন বিকল্প পথে যানবাহন ঘুরিয়ে দিয়ে ‘যতটা সম্ভব’ পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করা হবে বলেও জানান তিনি।
রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে সমাবেশে যোগ দিতে আসা মিছিল সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রবেশের জন্য পাঁচটি প্রবেশ পথ নির্ধারণ করা হয়েছে কর্মসূচির আয়োজক ‘প্যালেস্টাইন সলিডারিটি মুভমেন্ট বাংলাদেশ’।
১. বাংলা মোটর থেকে আসা মিছিল উদ্যানে প্রবেশ করবে শাহবাগ হয়ে রমনা গেইট দিয়ে।
২. কাকরাইল মোড় হয়ে আসা মিছিল উদ্যানে প্রবেশ করবে মৎস্য ভবন হয়ে ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউট গেইট দিয়ে।
৩. গুলিস্তান জিরো পয়েন্ট এর দিক থেকে আসা মিছিল দোয়েল চত্বর হয়ে এসে টিএসসি গেইট দিয়ে উদ্যানে প্রবেশ করবে।
৪. বকশীবাজার মোড় দিয়ে আসা মিছিল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার হয়ে টিএসসি গেইট দিয়ে উদ্যানে ঢুকবে।
৫. নীলক্ষেত মোড় দিয়ে আসা মিছিল ভিসি চত্বর হয়ে টিএসসি গেইট দিয়ে সোহরোওয়ার্দীর সমাবেশে যোগ দেবে।
প্যালেস্টাইন সলিডারিটি মুভমেন্টের শুক্রবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, “এই প্রথম দেশের সকল রাজনৈতিক-অরাজনৈতিক সর্বস্তরের মানুষ এক কাতারে এসে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গণজমায়াতে উপস্থিত হয়ে ফিলিস্তিনি জনগণের সাথে সংহতি প্রকাশ করবে।”
ইউরোপ-আমেরিকা সহ বিশ্বজুড়ে শান্তিপ্রিয় মানুষ রাজপথে নেমে এসে গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতার প্রতিবাদ জানাচ্ছে। বাংলাদেশেও বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও ধর্মীয় সংগঠনের উদ্যোগে গাজায় চলমান নিপীড়নের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। এই ধারাবাহিকতায় এই কর্মসূচি হচ্ছে বলে জানিয়েছে প্যালেস্টাইন সলিডারিটি মুভমেন্ট।