নরেন্দ্র মোদীর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে অংশ নিতে নয়াদিল্লি যান শেখ হাসিনা।
Published : 10 Jun 2024, 09:15 PM
ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নরেন্দ্র মোদীর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগদান শেষে দেশে ফিরেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সোমবার সন্ধ্যা সোয়া ৭টায় প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী বাংলাদেশ বিমানের বিশেষ ফ্লাইটটি ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের উপ-প্রেস সচিব মো. নুর এলাহি মিনা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে প্রধানমন্ত্রীর দেশে ফেরার তথ্য দেন।
টানা তৃতীয় মেয়াদে মোদীর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গত শনিবার শেখ হাসিনা নয়াদিল্লি যান।
অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার পাশাপাশি মোদীর সঙ্গে বৈঠকসহ আরও কয়েকটি বৈঠকে অংশ নেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।
বাসস জানায়, প্রধানমন্ত্রীর ফিরতি ফ্লাইটটি এর আগে স্থানীয় সময় বিকাল ৪টা ৪৫ মিনিটে নয়াদিল্লির ভিভিআইপি বিমানবন্দর পালাম এয়ার ফোর্স স্টেশন থেকে রওনা দেয়।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (পূর্ব) জয়দীপ মজুমদার, বাংলাদেশে ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা এবং ভারতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. মুস্তাফিজুর রহমান বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে বিদায় জানান।
রোববার সন্ধ্যায় ভারতের রাষ্ট্রপতি ভবনে প্রধানমন্ত্রী তার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদকে সঙ্গে নিয়ে শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
আট হাজার দেশি-বিদেশি অতিথির মধ্যে শপথ অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া বিদেশি নেতাদের মধ্যে ছিলেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দহল প্রচণ্ড, মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জু, শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে।
ভারতের সদ্য সমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট ২৯৩টি এবং বিরোধী ‘ইন্ডিয়া’ জোট ২৩৪টি আসনে জিতেছে। ২৪০টি আসন নিয়ে একক বৃহত্তম দল হিসেবে সরকারের নেতৃত্ব দিচ্ছে বিজেপি এবং ৯৯টি আসন নিয়ে বিরোধী দলে বসতে চলেছে কংগ্রেস।
এককভাবে জয় না পাওয়ায় কয়েক দিন ধরে আলাপ-আলোচনা করে নতুন সরকারের শপথ গ্রহণের দিন ঠিক করে বিজেপি।
প্রধানমন্ত্রীর সফর নিয়ে সোমবার সকালে নয়াদিল্লিতে সাংবাদিকদের উদ্দেশে ব্রিফ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেন, “শপথ গ্রহণের পর নরেন্দ্র মোদী ও শেখ হাসিনার মধ্যে একান্ত বৈঠক হয়েছে। সেখানে বাংলাদেশ ও ভারতের বিদ্যমান সম্পর্ক আরও দৃঢ় করতে তারা আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
“শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদীর দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। দুই নেতা আশা প্রকাশ করেছেন, বিদ্যমান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আগামী দিনগুলোতে আরও গভীর হবে।
“অত্যন্ত উষ্ণ ও বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশে রাষ্ট্রপতি ভবনে দুই সরকারপ্রধানের বৈঠক হয়েছে। নরেন্দ্র মোদীকে সুবিধাজনক সময়ে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন শেখ হাসিনা।”
এক প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বহুমুখী সম্পর্ক রয়েছে।
তিনি বলেন, “দুই দেশের মধ্যে অনেক বিষয় জড়িত। যেহেতু উভয় সরকার দেশ পরিচালনায় অব্যাহত রয়েছেন, সেহেতু একসঙ্গে কাজ করার কিছু সুবিধা আছে।”
হাছান মাহমুদ বলেন, “দুই দেশের জনগণ বিভিন্ন দিক থেকে উপকৃত হচ্ছে। আমাদের বহুমাত্রিক সম্পর্ক ভবিষ্যতে আরও সম্প্রসারিত এবং আরও গভীর হবে।”
কয়েকটি সৌজন্য সাক্ষাৎ
শেখ হাসিনার সঙ্গে দিল্লিতে সাক্ষাৎ করেছেন ভারতের ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক পরিবারের প্রভাবশালী তিন সদস্য কংগ্রেস নেতা সোনিয়া গান্ধী এবং তার ছেলে রাহুল গান্ধী ও মেয়ে প্রিয়াঙ্কা গান্ধী।
সোনিয়া গান্ধী কংগ্রেসের পার্লামেন্টারি পার্টির সভাপতি, রাহুল দলটির সাবেক সভাপতি ও অন্যতম নীতিনির্ধারক এবং প্রিয়াঙ্কা দলের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
নয়াদিল্লিতে সোমবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে।
বৈঠক শেষে হাছান মাহমুদ ব্রিফিংয়ে বলেন, “পর্যটন খাতে এগিয়ে থাকা শ্রীলঙ্কার বিনিয়োগ বাংলাদেশের পর্যটন খাতে কীভাবে আসতে পারে, তা নিয়ে দুই নেতা আলাপ-আলোচনা করেছেন।
“দুই দেশের নেতা কৃষি এবং সমুদ্রে জাহাজ চলাচল সম্পর্কিত পারস্পরিক সহযোগিতার বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন।”
পরে ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং প্রাক্তন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
এর আগে রোববার সকালে শেখ হাসিনা বিজেপির জ্যেষ্ঠ নেতা এল কে আদভানির সঙ্গে তার নয়াদিল্লির বাসভবনে দেখা করেন এবং কুশল বিনিময় করেন।
ওই দিন বিকালে ভুটানের প্রধানমন্ত্রী দাশো শেরিং তোবগে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।