এক কোটি ১৪ লাখ ৭৫ হাজার ৬৬৮ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে এই শাস্তি।
Published : 07 Apr 2025, 02:48 PM
ঋণ জালিয়াতির মাধ্যমে সোনালী ব্যাংকের টাকা আত্মসাতের দায়ে ব্যাংকটির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
ঢাকার ষষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. জাকারিয়া হোসেন সোমবার এ রায় দেন।
দণ্ডিতরা হলেন- সোনালী ব্যাংকের সাবেক এমডি হুমায়ুন কবির, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) মাইনুল হক, জিএম ননী গোপাল নাথ ও মীর মহিদুর রহমান, এজিএম সাইফুল হাসান ও কামরুল হোসেন খান, ডিজিএম সফিজ উদ্দিন আহমেদ, খান জাহান আলী সোয়েটার্স লিমিটেডের চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম, ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল জলিল শেখ, পরিচালক রফিকুল ইসলাম এবং মীর মোহাম্মদ শওকত আলী।
দণ্ডিতদের মধ্যে প্রথম ৭ জনকে (সোনালী ব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তা) বিশ্বাস ভঙ্গ করে অবৈধভাবে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, ১০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অর্থদণ্ড না দিলে তাদের আরও ৬ মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।
শেষের চারজনকে বিশ্বাস ভঙ্গ করে অবৈধভাবে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের পাশাপাশি এক কোটি ১৪ লাখ ৭৫ হাজার ৬৬৮ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ওই অর্থ রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত হবে।
এছাড়া প্রতারণার দায়ে তাদের সাত বছর করে সশ্রম কারাদণ্ডের পাশাপাশি এক লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। সেই টাকা না দিলে তাদের আরও ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।
দুই ধারার সাজা একটির পর একটি চলবে। সেক্ষেত্রে তাদের ১০ বছরের কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে বলে আইনজীবীরা জানিয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী ফকির মো. জাহিদুর ইসলাম বলেন, রায়ের সময় চার আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। রায় শেষে সাজা পরোয়ানা দিয়ে তাদেরর আবার কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
মামলার সাত আসামি পলাতক রয়েছেন। আদালত তাদের বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানাসহ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে।
মামলার বিবরণে জানা যায়, খান জাহান আলী সোয়েটার্স লিমিটেডের তাজুল ইসলাম, আব্দুল জলিল শেখ, রফিকুল ইসলাম এবং মীর মোহাম্মদ শওকত আলীকে সোনালী ব্যাংকের হোটেল শেরাটন শাখা থেকে প্রি শিপমেন্ট ক্রেডিট বাবদ ১০টি এলসির বিপরীতে ১৪ টি পিসির মাধ্যমে এক কোটি ৩৮ লাখ ৮৯ হাজার ৮৩ টাকা ঋণ দেওয়া হয়। এর মধ্যে ২৪ লাখ ১৩ হাজার ৪১৫ টাকা সমন্বয় করা হলেও অবশিষ্ট এক কোটি ১৪ লাখ ৭৫ হাজার ৬৬৮ টাকা সমন্বয় করা হয়নি। খান জাহান আলী সোয়েটার্স লিমিটেডের কর্মকর্তারা ব্যাংক কর্মকর্তাদের ‘অবৈধ সহযোগিতায়’ ওই টাকা ‘আত্মসাৎ’ করেন।
এ ঘটনায় দুদকের তৎকালীন উপপরিচালক এস এম এম আখতার হামিদ ভূঞা ২০১৩ সালের ১ জানুয়ারি রমনা মডেল থানায় মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করে ২০১৪ সালের ২২ মে আদালতে অভিযোগপত্র দেন তদন্ত কর্মকর্তা কমিশনের তৎকালীন সহকারী পরিচালক মো. নাজমুচ্ছায়াদাত।
২০১৫ সালের ১৫ নভেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেয় আদালত। মামলার বিচার চলাকালে ৬১ জন সাক্ষীর মধ্যে ৪১ জনের সাক্ষ্য শুনে মামলার রায় দিলেন বিচারক।
ঋণ জালিয়াতিতে জড়িত থাকার অভিযোগে এরআগেও সোনালী ব্যাংকের বেশ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে কয়েকটি মামলায় সাজা দেওয়া হয়েছে। তবে দণ্ডিতদের অধিকাংশই পলাতক রয়েছেন।