খালি পায়ে, বুক চাপড়ে ‘হায় হোসেন, হায় হোসেন’ মাতম তুলে হল তাজিয়া মিছিল।
Published : 29 Jul 2023, 04:37 PM
আশুরার দিনে কারবালার স্মরণে ঢাকার বিভিন্ন স্থানে তাজিয়া মিছিল করেছে শিয়া মুসলমানরা; ঢাকার পুলিশ প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী, এবারও এই শোকের মিছিলে ছুরি, বল্লম,তলোয়ারের মত ধারালো অস্ত্র বহন নিষিদ্ধ ছিল।
শনিবার ভোর থেকেই পুরান ঢাকার হোসাইনী দালান জড়ো হয় হাজারো মানুষ।
সকাল ১০টায় হোসাইনী দালানের ইমামবাড়া থেকে যখন প্রধান তাজিয়া মিছিলটি শুরু হয়; সেই মিছিলে বিভিন্ন বয়সের নারী পুরুষ সবাই অংশ নিলেও আধিক্য ছিল তরুণদের।
শোকের মিছিলে আংশগ্রহণকারীদের পরনে কালো পোশাক, মাথায় কালো ফেট্টি, কারও হাতে আবার ঝালর দেওয়া লাল, কালো, সোনালি রংঙের ঝাণ্ডা দেখা গেছে।
তাজিয়া মিছিলে কারবালার স্মরণে কালো মখমলের চাঁদোয়ার নিচে কয়েকজন বহন করেন ইমাম হোসেনের (রা.) প্রতীকী কফিন। মিছিলের সামনে ছিল ইমাম হাসান ও ইমাম হোসেনের দুটি প্রতীকী ঘোড়াও।
খালি পায়ে, বুক চাপড়ে ‘হায় হোসেন, হায় হোসেন’ মাতম তুলে, লালবাগ, আজিমপুর, নিউ মার্কেট,নীলক্ষেত ঘুরে, সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড় হয়ে ধানমণ্ডির দিকে এগিয়ে যায়। পরে ধানমণ্ডি লেকের পাড়ে প্রতীকী ‘কারবালা’ প্রান্তে গিয়ে শেষ হয় শোকের মিছিল।
এছাড়া চকবাজার ছোট কাটরা এবং মোহাম্মদপুরের শিয়া মসজিদ থেকেও আলাদাভাবে তাজিয়া মিছিল নিয়ে বিভিন্ন সড়ক ঘুরে শিয়া সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা মিছিল করেছে।।
ইমামবাড়া থেকে সকালে যখন মিছিল শুরু হয়, রাস্তার দুপাশে ছিল উৎসুক মানুষের ভিড়।তাজিয়া মিছিলের সামনে-পেছনে ছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সতর্ক উপস্থিতি।
ধানমণ্ডি থানার ওসি পারভেজ ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “অত্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে ইমামবাড়ার তাজিয়া মিছিল লেকের পাড়ে এসে শেষ হয়েছে। মিছিলে অংশগ্রহণতারীরা এখানে জোহরের নামাজ আর দোয়া-দরুদ পড়ে আনুষ্ঠানিকতা শেষ করেন।“
পুলিশের রমনা বিভাগের ধানমন্ডি জোনের সহকারি কমিশনার আবু তালেব বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "কোথাও কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।"
১০ মহররম মুসলিম বিশ্বে ত্যাগ ও শোকের প্রতীক। হিজরি ৬১তম বর্ষের (৬৮০ খ্রিস্টাব্দ) এই দিনে হজরত মুহাম্মদের (স.) দৌহিত্র হজরত ইমাম হোসেন (রা.) ফোরাত নদীর তীরে কারবালা প্রান্তরে শহীদ হন। মুসলমানরা, বিশেষ করে শিয়া মুসলমানরা ধর্মীয় অনুশাসনের মধ্য দিয়ে দিনটি পালন করেন।
কোভিড মহামারীর কারণে বাংলাদেশে দুই বছর বন্ধ থাকার পর গত বছর থেকে তাজিয়া মিছিল করার অনুমতি পায় শিয়া সম্প্রদায়।
২০১৫ সালে তাজিয়া মিছিলের প্রস্তুতির মধ্যে ইমামবাড়ায় জঙ্গি হামলার ঘটনার পর থেকে আশুরায় নিরাপত্তার কড়াকড়ি বাড়ানো হয়।