রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর গত ২৯ অক্টোবর আগের কমিশনের সবাই ‘ব্যক্তিগত’ কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেন।
Published : 10 Dec 2024, 05:58 PM
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সদ্য সাবেক সচিব মোহাম্মদ আবদুল মোমেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পেয়েছেন।
মঙ্গলবার মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আব্দুর রশীদ স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, দুদক আইন অনুযায়ী চেয়ারম্যানের বেতন, ভাতা, অন্যান্য সুবিধা ও পদমর্যাদা সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের একজন বিচারকের এবং কমিশনারের বেতন, ভাতা, অন্যান্য সুবিধা ও পদমর্যাদা সুপ্রিম কোর্টের হাই কোর্ট বিভাগের একজন বিচারকের সমরূপ নির্ধারণ করা হলো।
কমিশনের দুই সদস্য হচ্ছেন- অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মিঞা মুহাম্মদ আলি আকবার আজিজী ও অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হাফিজ আহ্সান ফরিদ।
বিসিএস ’৮২ ব্যাচের প্রশাসন ক্যডারের কর্মকর্তা মোমেন ২০০১ সালের বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় কৃষি মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব, বিআরটিএর চেয়ারম্যান ও বিমানের এমডি ছিলেন।
এর আগে নব্বইয়ের দশকে তিনি ছিলেন তখনকার প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার এপিএস। ২০০৯ সালে যুগ্ম সচিব থাকা অবস্থায় তাকে ওএসডি করা হয়। পরে ২০১৩ সালে ৬ জুন তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠিয়েছিল তখনকার আওয়ামী লীগ সরকার।
তাকে চাকরিতে ফিরিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিবের দায়িত্ব দেয় অন্তবর্তী সরকার।
পটপরিবর্তনের পর ১৭ অগাস্ট ‘বঞ্চিত’ কর্মকর্তাদের মধ্যে আব্দুল মোমেনকেও সচিব পদমর্যাদায় ফিরিয়ে আনা হয়।
১৮ অগাস্ট জ্যেষ্ঠ সচিব করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পান তিনি।
আর চুক্তিভিত্তিক এ নিয়োগ ১০ ডিসেম্বর বাতিল করে দুদক চেয়ারম্যান করা হল মোমেনকে। এর আগে সোমবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিবের দায়িত্ব থেকে ইস্তফা দেন তিনি।
ক্ষমতার পালাবদলের মধ্যে গত ২৯ অক্টোবর দুদক চেয়ারম্যান মুহাম্মদ মইনুউদ্দীন আব্দুল্লাহ,কমিশনার আছিয়া খাতুন ও কমিশনার জহুরুল হক ‘ব্যক্তিগত’ কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেন। মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ এক সময় ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব। ২০২১ সালের ৩ মার্চ তিনি দুদক চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পান।
পাঁচ বছর মেয়াদের জন্য তারা দুদকের দায়িত্ব পেলেও পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে দেড় বছর আগেই তাদের বিদায় নিতে হয়।
১০ নভেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান ও কমিশনার নিয়োগে সুপারিশ করতে সার্চ কমিটি গঠন করে সরকার।
এ কমিটির সভাপতি করা হয় সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি মো. রেজাউল হককে।
সদ্য সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন ছাড়া কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- হাই কোর্ট বিভাগের বিচারক বিচারপতি ফারাহ মাহবুব, বাংলাদেশের মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক মো. নূরুল ইসলাম, বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের চেয়ারম্যান মোবাশ্বের মোনেম ও সবশেষ অবসরপ্রাপ্ত মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন।
বাছাই কমিটি, চেয়ারম্যান ও কমিশনার নিয়োগে প্রতিটি শূন্য পদের বিপরীতে ২ জন ব্যক্তির নামের তালিকা প্রণয়ন করে রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানোর বিধান রয়েছে।
নতুন দুদক কমিশন গঠনে বাছাই কমিটি গঠনের এক মাসের মধ্যে নতুন চেয়ারম্যান ও দুই কমিশনার নিয়োগ হল।
আরও পড়ুন
পদত্যাগ করেছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব আবদুল মোমেন
দুদক চেয়ারম্যান-কমিশনার খুঁজতে কমিটি, সদস্য হলেন সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব